তিনি গাইবেন, শহর শুনবে।
সেই সুরসন্ধ্যাটার অপেক্ষায় এখন দিন গুনছে কলকাতা। হাতে আর ছ’দিন। তার পরেই ২৫ জানুয়ারি 91.9 ফ্রেন্ডস এফএম এবং ‘অ্যামারন’-এর আয়োজনে নেতাজি ইন্ডোরে গাইবেন আশা ভোঁসলে। কিন্তু না, একা আশা নন, সে সন্ধ্যায় সুর, স্বরলিপি আর স্মৃতিতে মঞ্চ জুড়ে থাকবেন পঞ্চম, রাহুল দেব বর্মণ। ভারতীয় সিনেমার শতবর্ষে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে রাহুল-আশা জুটি। ওই অনুষ্ঠানেও রাহুলের গানই গাইবেন তিনি, জানিয়েছেন আশা।
শুধু গান নয়, এ শহরের সঙ্গেও আশাকে জড়িয়ে দিয়েছিলেন রাহুল। অনুষ্ঠানের আগে সাক্ষাৎকারে শহরটাকে নিয়ে নস্ট্যালজিক হয়ে তিনি বললেন, “বাংলা, বিশেষত কলকাতার সঙ্গে বহু দিনের চেনা। আমি কলকাতার বউ। রাহুল আমাকে শহরটা চিনিয়েছে। এখানে গাইতে আসা তাই উৎসবের মতো।” |
এক মঞ্চে রাহুল-আশা। —ফাইল চিত্র |
সেটাই স্বাভাবিক। সেই টানেই বলিউড-কাঁপানো আশা বাংলা গান, গেয়েছেন রবীন্দ্রসঙ্গীতও। তেমনই একটা গানের জন্ম মনে করতে করতে পুরনো দিনে ফিরে গেলেন তিনি, “আমাকে নিয়ে শহরের নানা জায়গায় যেত রাহুল। ওর স্কুল, কলেজ, যেটা ফার্স্ট ইয়ারেই ছেড়ে দিয়েছিল, সব ঘুরেছি। গিয়েছি ওর বন্ধুদের বাড়ি। তখন ঢাকুরিয়া লেকের ধারে খুব সুন্দর বসার জায়গা ছিল। এক সন্ধ্যায় সেখানে দু’জনে বসেছিলাম। ওখানেই ওই গানটা তৈরি করেছিল ও, ওই যে...সন্ধ্যাবেলায় তুমি আমি বসে আছি দুজনে, তুমি বলবে আমি শুনব।”
শুধু তো গানই নয়, আশার কণ্ঠে সে দিন উঠে আসবে গোটা মানুষটাই। কী ভাবে তিনি মজা করে কথা বলতেন, কী ভাবে খেতেন, সে সব তো বটেই, উঠে আসবে তাঁর নিজের রেসিপির প্রিয় রান্নার কথাও, জানালেন আশা। বললেন, “ও আমায় ইলিশ খেতে শিখিয়েছিল। আগে সমুদ্রের মাছই খেতাম, নদীর মাছ যে এত মিষ্টি, জানতাম না। সর্ষের তেল, ধনে-লঙ্কা দিয়ে কী করে মাছটা রাঁধতে হয় শিখেছি ওর কাছে। দক্ষিণ কলকাতার এক মিষ্টির দোকানে ওর সঙ্গে গিয়ে জেনেছি নতুন গুড় কাকে বলে!”
গান আর গানের গল্প, নিজের জীবন আর কলকাতা, অতএব, আশার কণ্ঠে বেজে উঠবে ২৫ তারিখের সন্ধেয়।
অবশ্যই, ‘পঞ্চম’ স্বরে।
|
ফকিরি উৎসবে মজল করিমপুর
নিজস্ব সংবাদদাতা • করিমপুর |
উৎসবে ডেনমার্কের শিল্পীরা।—নিজস্ব চিত্র। |
দিন কয়েকের জন্য যেন রঙিন হয়ে উঠেছে একঘেঁয়ে সাদা-কালো সীমান্ত। সীমান্তঘেঁষা করিমপুর শীতকালীন উৎসবে মেতে উঠেছে সেই ‘যিশুদিবস’ থেকেই। তারপর এক এক করে বাউলমেলা, বইমেলা, বর্ষবরণ, নাট্যোৎসব। এ সবের পর সীমান্তের মানুষ এখন বুঁদ হয়ে রয়েছেন থানারপাড়ার গোরভাঙার ফকিরি উৎসবে। করিমপুর পান্নাদেবী কলেজের মাঠে সদ্য শেষ হয়েছে বাউল ফকির সঙ্ঘের ত্রিশতম বার্ষিক সম্মেলন। রাজ্যের ছ’টি জেলা থেকে ওই সম্মেলনে হাজির হয়েছিলেন বহু সাধক ও গায়ক। এরপরেই শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া ফকিরি উৎসবে স্থানীয় বাউল শিল্পীদের পাশাপাশি সামিল হয়েছেন ডেনমার্ক, সুইডেন ও কানাডার অন্তত দেড়শো লোকশিল্পী। উৎসব চলবে রবিবার পর্যন্ত। অন্য দিকে, ২৬ ডিসেম্বর-১ জানুয়ারি করিমপুর জগন্নাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে চলেছে ত্রয়োদশতম করিমপুর বইমেলা। ‘সবুজের কবিতা’, ‘সায়ানাইড’ ও ‘প্রত্যয়’ এর মতো বেশ কয়েকটি লিটিল ম্যাগাজিনও প্রকাশিত হয়েছে এ বারের মেলায়। ৭ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া শরৎস্মৃতি নাট্য সংস্থার সপ্তদশ নাট্যোৎসব শেষ হয়েছে। ১১ জানুয়ারি করিমপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন সংস্থার মাঠে নিজস্ব প্রযোজনা ‘চাণক্য’, ‘অথ ঘিসু মেধো কথা’ ছাড়াও মঞ্চস্থ হয়েছে ঋত্বিকের ‘শেষরক্ষা’। ছিল হ-য-ব-র-ল এর ‘অনিকেত সন্ধ্যা’ ও কলকাতার থিয়েটার ওয়ার্কশপের ‘মুছে যাওয়া দিনগুলি’। নাট্যোৎসব শেষ হতে না হতেই শুক্রবার থেকে গোরভাঙায় শুরু ফকিরি উৎসব। |