নাসার পরে এ বার ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার (ইএসএ) পাঠানো যানের কৌতূহলী নজরেও ধরা পড়ল মঙ্গলের নদীখাত। দীর্ঘ এবং স্পষ্ট। প্রায় ১৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ৭ কিলোমিটার প্রশস্ত সে পথ এঁকেবেঁকে চলে গিয়েছে লালগ্রহের বুক চিরে।
ইএসএ-র পাঠানো ‘মার্স এক্সপ্রেস’-এর ছবি দেখে আপাতত বিস্মিত মহাকাশ বিজ্ঞানী এবং ভূতত্ত্ববিদরা। ২০০৩ সালে যানটি পাঠায় ইএসএ। এর দু’টি অংশ ছিল। একটির নামার কথা ছিল মঙ্গলের মাটিতে। অন্যটি লালগ্রহের চার পাশে পাক খাবে।
|
প্রথম অংশটি নিজের কাজে ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয়টি ঠিকঠাক কাজ করে যাচ্ছে এখনও। তারই উচ্চশক্তিসম্পন্ন ক্যামেরায় ধরা পড়ল ‘রুয়েল ভ্যালিস’ নদীখাতের চিহ্ন। উল্লেখযোগ্য, ছবিগুলো দেখে ভূতত্ত্ববিদরা বলছেন, মঙ্গলের প্রকৃতির ইতিহাসটা আমাদের পৃথিবীর থেকে খুব বেশি আলাদা নয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এক সময় হয়তো মঙ্গলের মাটিতে বিস্তীর্ণ অঞ্চল ধরে বয়ে যেত রুয়েল ভ্যালিস। তারই ছাপ রয়ে গিয়েছে। আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বেশ কিছু শাখানদী চলাচলের চিহ্নও। মূল উপত্যকার উপর দিয়ে তির বেগে বয়ে যাওয়ার জন্য খাতের ধারগুলোয় তীক্ষ্নতা স্পষ্ট। শুধু তাই নয়, নদীখাত বেশ গভীরও। প্রায় ৩০০ মিটার। |
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, হিমবাহ বয়ে যাওয়ার জন্যও নদীখাতের এমন চেহারা হতে পারে। পৃথিবীতে হিমবাহ যাওয়ার সময় মাটিতে যে ধরনের ক্ষয় দেখতে পাওয়া যায়, এখানেও হুবহু একই রকম ক্ষয় দেখা যাচ্ছে। তবে এ সবই হয়েছে সাড়ে তিনশো কোটি থেকে ১৮০ কোটি বছর আগে।
পার্বত্য উপত্যকার ছবিও ধরা পড়েছে মার্স এক্সপ্রেসের ক্যামেরায়। মাটি থেকে প্রায় ২৫০০ ফুট উঁচু। তাকে ঘিরে রয়েছে সমতল অঞ্চল। ছবিতে দেখা গিয়েছে, বেশ কিছু গোলাকার বিশাল গর্ত।
বিজ্ঞানীদের অনুমান, নদী বয়ে যাওয়ার সময় খাতে ওই গর্তগুলো তৈরি হয়েছিল। মাটির বিভিন্ন উপাদান থিতিয়ে পড়ে ওই গর্তগুলোকে ভরাট করে দিয়েছে। তাতেই বিজ্ঞানীদের অনুমান আরও জোরদার হচ্ছে যে, বাষ্পীভূত হওয়ার আগে ওখানেই হয়তো প্রচণ্ড গতিতে জল বয়ে যেত। |