|
|
|
|
|
|
|
উন্নয়ন আসলে কোথাও পৌঁছয় না |
শূন্য অঙ্ক |
দেশপ্রেম শব্দটা আজকাল পুরনো বাতিল শব্দ হিসেবেই ব্যবহার হয়, কত মানুষ প্রাণ দিয়েছেন দেশের জন্যে... এই স্মৃতির বাইরে আজ আর যেন কোনও ব্যবহার নেই শব্দটার! ‘আমি কিন্তু দেশপ্রেমের ছবিই করেছি। দেশকে জানা বোঝা পাল্টানোর আর এক নাম দেশপ্রেম। দীর্ঘদিন ধরে ছবি করতে গিয়ে দেখেছি একটা ভারতবর্ষের তলায় আর একটা ভারতবর্ষ চাপা পড়ে আছে। নগর ভারতবর্ষ, যাকে এখন কর্পোরেট ভারতবর্ষ বলাই যায়, সে আছে তার উন্নয়ন-উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে। অন্য দিকে জনজাতি অধ্যুষিত ভারতবর্ষ, উত্তর বা উত্তর-পূর্বে এক কোণে পড়ে থাকা বিচ্ছিন্ন প্রান্তিক ভারতবর্ষ, যেখানে উন্নয়নের দামামা বাজানো হয়, কিন্তু আদতে কিছু হয় না।’ নিজের নতুন ছবি ‘শূন্য অঙ্ক’ নিয়ে বলছিলেন গৌতম ঘোষ। তাঁর মতে, উন্নয়ন করতে হলে সে উন্নয়ন স্থায়ী করতে হবে, যাদের জন্যে উন্নয়ন তাদের সঙ্গে মিশে জেনে নিতে হবে তারা নিজেদের উন্নয়ন বলতে কী বোঝে। |
|
‘এ জন্যে হয়ে উঠতে হবে পরিব্রাজক। বহুজনহিতায় মনীষীরা যেমন করতেন, ঘুরে ঘুরে গোটা ভারতবর্ষকে চিনতে হবে, এত বৈচিত্র্য এ দেশে। আর এ দায় তুলে নিতে হবে নতুন প্রজন্মকেই। আমার ছবিতে তাই সমাজবিজ্ঞান পড়া কমবয়সি একটি মেয়ে সাংবাদিক হিসেবে সে দায় তুলে নেয় নিজের কাঁধে। ঘুরতে ঘুরতে পৌঁছে যায় ভারতবর্ষের প্রত্যন্ত প্রদেশে।’ কঙ্কণা সেনশর্মা অভিনীত চরিত্রটি (সঙ্গের ছবি) নিয়ে বলছিলেন গৌতম, “ও চরিত্রটা করতে-করতে এত উত্তেজিত যে বলল আমার মেয়েকেও কলেজে পাঠানোর আগে গোটা দেশটা ঘুরিয়ে দেখাব। আসলে উন্নয়নের প্রেক্ষিতে আমরা যেন কোথাও আটকে গিয়েছি। সেটা হল শূন্য ভয়েড। ছবির শেষে সেই শূন্যটাতে পৌঁছই বলেই ছবির নাম ‘শূন্য অঙ্ক’। ওপেন এন্ডেড, এখান থেকে আবার শুরুও করা যেতে পারে।” গৌতমের মূল ভাবনা, চিত্রনাট্য, সিনেমাটোগ্রাফি, আবহসঙ্গীত। অনুপম রায়ের দু’টি বাদে গান গেয়েছেন অজয় চক্রবর্তী, রাশিদ খান, কৌশিকী দেশিকান, রূপঙ্কর, পরমাও। অভিনয়ে সৌমিত্র ধৃতিমান প্রিয়াংশু ললিতা প্রিয়াঙ্কা। এ-সপ্তাহেই ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে কলকাতায়।
|
ভারত-দর্শন |
পড়ার ঘরে জানলার খড়খড়ির ফাঁক দিয়ে আসা আলোর জ্যামিতি ক্যামেরায় ধরে প্রথম পুরস্কার পেয়েছিল সেই কিশোর। কিন্তু সেই বদ্ধ ঘরের চিত্রনিরীক্ষায় আটকে থাকেনি সে। জগৎটা ক্যামেরার চোখ দিয়ে দেখাতে তাকে পথে নামিয়েছিলেন পূরণচাঁদ জোশী। ১৯৪৩-এর দুর্ভিক্ষে জোশী এলেন কলকাতায়, ডাক দিলেন তখন তরুণ সুনীল জানাকে। বললেন, ‘কাম ডাউন উইথ মি অ্যান্ড টেক ফোটোগ্রাফস।’ বাংলা-ওড়িশার দুর্ভিক্ষ তো বটেই, ১৯৪৫-এ দক্ষিণ ভারতের দুর্ভিক্ষ, দেশভাগ, দাঙ্গা, ইউএনও-র কমিশনে মায়ানমার, মালয় এবং তাইল্যান্ড, মুম্বইয়ের নৌ-বিদ্রোহ... ক্ষুব্ধ জীবনের ছবি তুলে গিয়েছেন ক্যামেরার ওই পদাতিক। তার পাশাপাশি চলেছিল গাঁধী, নেহরু, সুভাষচন্দ্র-সহ রাজনীতি, সিনেমা ও সাহিত্য জগতের মানুষদের ছবি তোলা। কিন্তু এক ট্রাইবালস অব ইন্ডিয়া-র মতো বই ছাড়া সেই দীর্ঘ চিত্র-ইতিহাস ধরে রাখতে কেউ উদ্যোগী হননি। প্রবাসে প্রয়াত এই বিশিষ্ট আলোকচিত্রীর সারা জীবনের কাজ থেকে প্রায় ৪০০ দুর্লভ ছবি ও তাঁর নিজের অভিজ্ঞতার কথা প্রকাশিত হল এ বার, অক্সফোর্ড থেকে। ফোটোগ্রাফিং ইন্ডিয়া নামের সেই বইটিকে উপলক্ষ করে সুনীল জানাকে নিয়ে একটি আলোচনাসভা হল শনিবার জাতীয় গ্রন্থাগারে। ছিলেন সুপ্রিয়া চৌধুরী ও রুচির জোশী। অনুষ্ঠানটি নিবেদন করেছিল জাতীয় গ্রন্থাগার ও মওলানা আবুল কালাম আজাদ ইনস্টিটিউট অব এশিয়ান স্টাডিজ।
|
পরিবর্তন |
ঠিক এক সপ্তাহ পর দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্টের শপথ নেবেন ওবামা। রেশ টের পেল কলকাতাও। ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ড-এর অধ্যাপক, নির্বাচন-বিশেষজ্ঞ টমাস শ্যেলার গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা দিয়ে গেলেন ২০১২-র নির্বাচন নিয়ে। বললেন, ও দেশে রীতিমতো যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি এখন: সাংস্কৃতিক যুদ্ধ। এই ‘কালচার ওয়ার পলিটিক্স’-এর এক দিকে মার্কিন অ-শ্বেতাঙ্গরা, মহিলারা (বিশেষত কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা), শহুরে বাসিন্দা, সমকামীরা। আর অন্য দিকে শ্বেতাঙ্গ, পুরুষ, গ্রামাঞ্চল-বাসী, এবং সমকামী-বিরোধী নাগরিক সমাজ। এই সাংস্কৃতিক যুদ্ধ ভবিষ্যতে আরও বাড়বে, এত দ্রুত পাল্টাচ্ছে মার্কিন জনসমাজ, বাড়ছে অশ্বেতাঙ্গ জনসংখ্যা, সমকামী গ্রহণযোগ্যতা, তরুণতরুণীর অনুপাত। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে একঝাঁক ছাত্রছাত্রীর সামনে বিশ্লেষণ করছিলেন অধ্যাপক। প্রশ্ন ছুটল: পরিবর্তন যখন এত ব্যাপক, রক্ষণশীল রিপাবলিকানরা কি আদৌ আর নির্বাচনে জিততে পারবে?সহজ প্রশ্ন নয়, মানলেন অধ্যাপক।
|
আড়ালে থাকা |
প্রকাশিত হয় খুব সামান্য বিষয় কিছু ঘাস মাটি... কবিতা লিখছেন শম্ভুনাথ চট্টোপাধ্যায়। আশি পেরিয়েছেন। প্রথাগত শিক্ষা যৎসামান্য, কিন্তু বয়লার-ক্লিনার, ট্রেনের হকার, ফুটপাথের ফেরিওয়ালা, দলিল লেখক, গিটার-শিক্ষক, প্রুফ রিডার জীবিকার প্রয়োজনে জীবন খুলে গিয়েছে পরতে পরতে। নিসর্গ-রহস্যে মগ্ন হয়ে থেকে চিরজীবনের যৎসামান্য প্রেমের কবিতাই লিখে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু, প্রকাশিত হয় খুব সামান্য, অতএব...। তাঁর শ্রেষ্ঠ কবিতা (ভারবি) পাওয়া যায় না, জগদীশ ভট্টাচার্য সম্পাদিত ‘কবি ও কবিতা’ পত্রিকার দুর্লভ পৃষ্ঠায় রয়ে গিয়েছে তাঁর বহু কবিতা। তবু চিরকাল আড়ালে থাকা, বিড়ম্বিতভাগ্য মানুষটির ক্ষোভ নেই কোনও। ‘প্রহর’ পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে বলছেন, ‘নির্জন নিসর্গভূমিতে মুগ্ধ এক বালকের মতো একা ঘুরে বেড়াই। আমার সঞ্চয় রঙিন পাখির পালক, রাঙা কুঁচফল, দু-ছড়া তেঁতুল আর একটি বনপায়রার ডিম সাপেরও হতে পারে পথেই ফেলে দিয়ে যাব আবার। তাতে কী বিচ্ছুরণ হল না হল, ফিরে দেখব নাকি? আপন খেয়ালখুশিতে আমার দিন বড়ো সুন্দর গেল। আর কী চাই?’ সদাহাস্যময় মানুষটি এ বার পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির আলপনা আচার্য স্মারক পুরস্কার পেলেন। স্কুলের পর এই প্রথম।
|
একাই ছ’শো |
একা তাঁর কণ্ঠ। খাতায় বাংলা গানের ছ’শো বছর। বিদ্যাপতি থেকে সলিল চৌধুরী। বাংলা গানের শুরু সেই চর্যাগীতি থেকে। তার পরে জয়দেব-বিদ্যাপতি-চণ্ডীদাস, নিধুবাবু, যাত্রাগান, পাঁচালি, দেশাত্মবোধক, রবীন্দ্রনাথ, দ্বিজেন্দ্রলাল, রজনীকান্ত, অতুলপ্রসাদ, সলিল চৌধুরী, হিমাংশু দত্ত, কমল দাশগুপ্ত... কে নেই? আগামিকাল ছ’টায় সল্টলেকের পূর্বশ্রীতে শোনা যাবে সুস্মিতা গোস্বামীর গান। দীর্ঘকাল গানের চর্চা করছেন, এ বার তিনি একাই একশো নন, একাই ছ’শো। মূলত নজরুলগীতির শিল্পী। তাঁর কণ্ঠেই বাংলা গানের ভুবনের ভার, পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্র ও ‘উতল হাওয়া’র আয়োজনে।
|
মাঘোৎসবের গান |
‘একবার মাঘোৎসবের সকালে ও বিকালে আমি অনেকগুলি গান তৈরী করিয়াছিলাম। তাহার মধ্যে একটি গান ‘নয়ন তোমারে পায়না দেখিতে, রয়েছ নয়নে নয়নে’। জীবনস্মৃতি-তে লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। কিন্তু ব্রহ্মসঙ্গীত মানে তো শুধু রবীন্দ্রনাথের গান নয়। ব্রাহ্মসমাজের সেই মেজাজকে ফিরিয়ে আনতে এ বার এক আসরে ত্রৈলক্যনাথ সান্যাল, রজনীকান্ত সেন, উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, কালীনারায়ণ গুপ্ত প্রমুখের লেখা ব্রহ্মসঙ্গীত। ১৮৩ তম মাঘোৎসব উপলক্ষে হরিনাভি ব্রাহ্ম সমাজের আয়োজনে জি ডি বিড়লা সভাঘরে ১৭ জানুয়ারি সন্ধে সাড়ে ছ’টায় গাইবেন শেখরেশ্বর রায়, অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়, স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। দেবেন্দ্রনাথের ব্রাহ্মধমর্ বইটি থেকে স্তোত্র পাঠ করবেন সুপ্রিয় ঠাকুর।
|
ফিরে দেখা |
বিপ্লবের আগে থেকেই আইজেনস্টাইন (১৮৯৮-১৯৪৮) বলশেভিকদের সঙ্গে, পরে তাদের প্রলেত-কাল্ট-এর সঙ্গে থেকেছেন বরাবর, অথচ তাঁর ‘বেজিন মেডো’ নিষিদ্ধ হয় স্তালিন জমানায়। ‘ইন রিসেন্ট ইয়ার্স আই হ্যাভ বিকাম সেল্ফ-অ্যাবজর্বড...’, এই মর্মে ক্ষমা চেয়ে তবে ছবি-করায় ফেরা। নিষিদ্ধ না করলেও স্তালিন ফের অপ্রসন্ন হন তাঁর ‘ইভান দ্য টেরিবল’ দেখে। লাতিন আমেরিকার সংস্কৃতি নিয়ে ‘কুয়ে-ভিভা-মেক্সিকো’ (সঙ্গের স্কেচ) তৈরির সময়ও ঝামেলা হয় প্রযোজকের সঙ্গে। স্ট্রাইক, ব্যাটলশিপ পোটেমকিন, অক্টোবর, আলেকজান্ডার নেভস্কি তাঁর এ সব ছবি দেখে উদ্দীপিত হতেন সোভিয়েত রাশিয়ার মানুষজন। তিনিও নেই, সে সোভিয়েতও নেই, কিন্তু সারা দুনিয়া আজও তাঁকে কুর্নিশ করে সিনেমার অন্যতম পুরোধা হিসেবে। তাঁকে নিয়ে বললেনও শমীক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি গোর্কিসদনে, সেখানেই ১৪-২১ জানুয়ারি তাঁর ছবির রেট্রো, বই ফটোগ্রাফ আর ড্রইংয়ের প্রদর্শনী, আইজেনস্টাইন সিনে ক্লাবের উদ্যোগে।
|
বারো ভূতের মেলা |
সদ্য দেশ ভাগ হয়েছে। ঢাকার রহিতপুর গ্রামের কিছু পরিবার চলে আসেন দক্ষিণ কলকাতার বিজয়গড় ও শ্রীকলোনিতে। সঙ্গে আনেন আড়াইশো বছরের পুরনো ‘রহিতপুরের উৎসব’। ফি বছর পৌষ সংক্রান্তিতে উৎসবটি বসত ধলেশ্বরী নদীর তীরে। জয়দেবপুরের কাছারিবাড়িতে পুজো করে উৎসব শুরু হত। সন্ধ্যায় ‘বুড়াবুড়ি’ অর্থাৎ বনদুর্গা আর মধ্যরাতে নদীর চরে বালির বিগ্রহে কিষ্কিন্ধ্যা পুজো হত। সাত দিনের মেলায় জ্যান্ত হাঁস-মুরগি-পায়রা ছাড়ার রেওয়াজ ছিল। দেওয়া হত ডিম। এখানে উৎসবের নাম হল ‘বারো ভূতের মেলা’। বিষ্ণুর দশ অবতার আর বনদুর্গা ও কিষ্কিন্ধ্যা মোট বারো জন দেবদেবীর পুজো। এ বছর তার বয়স ৬২। পুরনো রীতি মেনেই সংক্রান্তির দিন গোটা ফল আর ডিমের ডালা সাজিয়ে এয়োদের দীর্ঘ লাইন পড়ে মন্দির সংলগ্ন রাস্তায়। গঙ্গাসাগর ফেরত সাধুর দল আসেন এখানে। বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা আসেন পসরা নিয়ে। বসে পাঁচশোর বেশি স্টল। যাঁরা শুরু করেছিলেন, তাঁদের কেউই নেই আজ। তবু শীতের সন্ধ্যা ফিরিয়ে আনে ওপার বাংলায় ফেলে আসা দিনগুলি।
|
উদ্বোধনী |
স্বাধীন সিনেমা তৈরি এখনও কত দূর সম্ভব? সিনেমার প্রসারে সরকারের ভূমিকা কতটা, কতটুকুই বা থাকা উচিত? তর্কসম্ভব এই প্রশ্নগুলো তোলার পাশাপাশি বলিউডি ফিল্মের বৈশিষ্ট্য, তার সঙ্গে জাতীয়তাবাদের সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা করলেন শ্যাম বেনেগাল। ‘এপিজে কলকাতা লিটারারি ফেস্টিভ্যাল’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে ‘আ সেঞ্চুরি অব ইন্ডিয়ান সিনেমা’ নামে সেই বক্তৃতা সরস করে তুলল উদ্বোধনী সন্ধ্যাটাকে। সূচনার রীতিটিও ছিল ব্যতিক্রমী। গুরুপদ চিত্রকরের জড়ানো পটের পরতে পরতে খুলে গেল উৎসবের সারসংক্ষেপ। উৎসবের উদ্বোধন করলেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন।
|
বিস্ফোরক |
দিল্লির রাজনীতিতে ‘শেঠজি’র অবস্থানটা এখন একটু নড়বড়ে। জরুরি একটা দলীয় মিটিংয়ের দিন সকালে শেঠজি খবর পেলেন তাঁর ছোট ছেলে একটি মেয়েকে ধর্ষণ করেছে। গ্রেফতারি এড়াতে তড়িঘড়ি শেঠজি ছেলেকে বিদেশ পাঠানোর ব্যবস্থা করলেন। সেই ব্যাপারে এবং মিডিয়াকে সামলাতে তাঁকে প্রভূত সাহায্য করলেন তাঁর পুত্রবধূ। ঘটনা ক্রমেই গড়িয়ে চলল। না, সত্যি নয়, গল্প। কিংবা রাজধানীর সাম্প্রতিক কুখ্যাতির পরে, হয়তো গল্প হলেও সত্যি! নিজের সাম্প্রতিক উপন্যাস শেঠজি-র (পেঙ্গুইন ইন্ডিয়া) আনুষ্ঠানিক প্রকাশ উপলক্ষে শহরে এসেছেন শোভা দে, তর্ক-তোলা, সাড়া জাগানো শোভা দে। মুম্বইয়ের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়াশোনা মনস্তত্ত্ব নিয়ে, মডেলিং দিয়ে কেরিয়ার শুরু করে সাংবাদিকতা বিস্ফোরক সেলেব-ম্যাগাজিনের সেলিব্রিটি সম্পাদক। সোশ্যালাইট ইভনিংস, স্টারি নাইটস, স্পাউস কিংবা সুপারস্টার ইন্ডিয়া-র মতো বেস্টসেলারের লেখকের সাম্প্রতিক বইটি প্রকাশ করলেন রাখী সরকার ও রিতা ভিমানি, দ্য পার্ক-এ, ‘এপিজে কলকাতা লিটারারি ফেস্টিভ্যাল’-এ।
|
|
|
|
|
সেই শহরে |
আজ থেকে তেত্রিশ বছর আগে, এই জানুয়ারিতে মাদ্রাজ থেকে করমণ্ডল এক্সপ্রেসে চেপেছিল একুশ বছরের এক যুবক। সে ক্রিকেটার হতে চেয়ে ব্যর্থ, অর্থনীতিতে বি এ আর এম এ, দু’বারই সেকেন্ড ক্লাস। কলকাতায় আসার উদ্দেশ্য, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টে সোশিয়োলজিতে পিএইচ ডি করা। আসলে, জীবনে সফল হওয়ার দ্বিতীয় সুযোগ খোঁজা।’ শনিবার সন্ধ্যায় জাতীয় গ্রন্থাগারের সিঁড়িতে ‘গাঁধী কোন গোত্রের এশীয় ছিলেন’ শীষর্র্ক বক্তৃতা আরম্ভ করার আগে নিজের সম্বন্ধে এই কথাগুলো যিনি বলছিলেন, জীবন তাঁকে সফল হওয়ার দ্বিতীয় সুযোগ নিশ্চিত ভাবেই দিয়েছিল। বস্তুত রামচন্দ্র গুহ ক্রিকেট থেকে পরিবেশ, ভারতীয় গণতন্ত্র থেকে জনজাতীয় নৃতত্ত্ব, সবেতেই সমান স্বচ্ছন্দ। লন্ডন স্কুল অব ইকনমিকস থেকে বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স, দেশ-বিদেশের বহু খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেছেন। তাঁর এই বহুমুখী পাণ্ডিত্য অর্জনের যাত্রায় কলকাতার ভূমিকা অনস্বীকার্য। আইআইএম-এ গবেষণা থেকে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশাল সায়েন্সেস-এ চাকরি এই শহরেই। আনন্দ পাবলিশার্স থেকে সদ্য প্রকাশ পেল তাঁর বিখ্যাত বইয়ের অনুবাদ গাঁধী-উত্তর ভারতবর্ষ। আর জাতীয় গ্রন্থাগার, ‘জোকা থেকে বাস ধরে উডল্যান্ডস-এর সামনে নামতাম। সেখান থেকে হেঁটে গ্রন্থাগার। সোজা সরকারি নথিপত্রের বিভাগে। সেখানে খদ্দরের পাজামা-পাঞ্জাবি পরিহিত এক গ্রন্থাগারিক ছিলেন, সুভাষদা। দিনের পর দিন কেটেছে এখানেই, আঠারো, উনিশ, বিশ শতকের নথি ঘেঁটে।’ যে প্রাচীন সিঁড়িগুলি একদা তাঁকে এক তরুণ গবেষক হিসেবে চিনত, সেখানেই বক্তা হিসেবে ফিরে আসা একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ হওয়া। বক্তারও, এ শহরেরও। |
|
|
|
|
|
|