|
|
|
|
বিনোদন |
হেতুহীন আনন্দ-সুরেই
গোটা দেশ মাতাচ্ছে হানি বানি
সুজিষ্ণু মাহাতো • কলকাতা |
 |
|
প্রথম দিন দেখা হয়েছিল ২৩ হাজার ৬৪০ বার। এখন ইউটিউবে সংখ্যাটা আট লাখ ছাড়িয়েছে।
‘ইউ আর মাই পাম্পকিন, পাম্পকিন, হ্যালো হানি বানি, টোকো টোকো...’। আপাত ‘অর্থহীন’ এই গান এখন আট থেকে আশি সবার মুখে। একটি মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার বিজ্ঞাপনে ব্যবহৃত এই জিঙ্গল গুনগুন করছেন সবাই, সেট করছেন মোবাইলের রিংটোনে। গানের কথা ছড়িয়ে পড়ছে ফেসবুকে, টুইটারে।
জিঙ্গলটি মুক্তি পায় গত ৩০ নভেম্বর। কী জাদুতে এমন জনপ্রিয়তা? বিজ্ঞাপন বিশেষজ্ঞ ও সঙ্গীত পরিচালকদের মতে, বিমূর্ত কথা ও সহজ ছেলেমানুষি সুরেই মাত করেছে হানি বানি। মুম্বইয়ের একটি বিজ্ঞাপন সংস্থার কর্ণধার রঘু ভট্ট বলছেন, “ননসেন্স মিউজিক বা গিব্বেরিশের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল এর কোনও ভৌগোলিক সীমানা নেই। ননসেন্স মিউজিক উপভোগ করার জন্য কোনও ভাষা জানার দরকার পড়ে না।” সব ধরনের মানুষই সমান ভাবে উপভোগ করেন এই জাতীয় গান।
আরও একটা রহস্য রয়েছে। সেটা হল, প্রত্যেকের অবচেতনে লুকিয়ে থাকা শিশুসুলভ সত্তা, অদ্ভুতুড়ে, ননসেন্স জগৎ। বিজ্ঞাপন বিশেষজ্ঞ রাম রায়ের কথায়, “ননসেন্স সঙ্গীতের মধ্যে দিয়েই প্রাপ্তবয়স্করা শৈশবে ফিরে যেতে চান। সে কারণেই ননসেন্স সাহিত্যের মতোই ননসেন্স সঙ্গীতও এত জনপ্রিয়।” ‘আবোল তাবোল’ থেকে “ওরে আমার বাঁদর-নাচন আদর-গেলা কোঁৎকা রে, অন্ধবনের গন্ধ-গোকুল, ওরে আমার হোঁৎকা রে” মনে করিয়ে দিয়ে সঙ্গীত পরিচালক দেবজ্যোতি মিশ্র বলেন, “সাজানো-গোছানো শব্দগুচ্ছ আনন্দ দেয় না। যা কিছু অহেতুক, এলোমেলো তাতেই আমরা খুশি হই।” তিনি জানান, ভালবাসা প্রকাশ করে আমরা অনেককে এমন সব আদর-নামে ডাকি, যার আক্ষরিক কোনও অর্থ হয় না। তবুও সেই শব্দগুলি আমাদের মনের কাছের। যেমন একটি ক্রিমের বিজ্ঞাপনের জনপ্রিয় ক্যাচলাইন ছিল “গুগলি উগলি উশ’। সেই শব্দগুচ্ছেরও কোনও আক্ষরিক অর্থ না থাকলেও আদরের অনুভূতির এই সর্বজনীনতার জন্যই ভাষার গণ্ডিকে হারিয়ে সেটি জনপ্রিয় হয়েছিল, বললেন রঘু।
‘পাম্পকিন’ আর ‘হানি বানি’ আসলে বিশ্বখ্যাত পরিচালক টারান্টিনোর কাল্ট ছবি ‘পাল্প ফিকশন’এর দু’টি চরিত্রের নাম। বিজ্ঞাপন তৈরির সময় অবশ্য ছবিটির কথা ভাবাই হয়নি বলে জানালেন ‘হানি বানি’ ক্যাম্পেনের ইউনিট ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর সুবোধ মেনন। বললেন, “প্রায় হাজারখানেক শব্দ নিয়ে নেড়ে ঘেঁটে দেখে এই শব্দ দু’টি বাছা হয়। আমরা চেয়েছিলাম এমন একটা খুব সহজ সুর, যা সবাই গুনগুন করতে পারে। গানটা আসলে খুব মিষ্টি, মনে হয় সে জন্যই এতটা জনপ্রিয় হয়েছে।” কলকাতায় নাইটক্লাবে ‘হানি বানি’ বাজছে শুনে জানালেন মুম্বইতেও অবস্থাটা একই।
জিঙ্গলটিতে সুর দিয়েছেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সঙ্গীত পরিচালক অমিত ত্রিবেদী। ‘দেব ডি’, ‘ওয়েক আপ সিড’, ‘আইশা’, ‘ইংলিশ ভিংলিশ’ এর মতো ছবির সঙ্গীত পরিচালক অমিত বললেন, “আমাদের লক্ষ্য ছিল যে কোনও ভাবে হোক সুরটাকে নজরে আনা। হয় কারও খুব পছন্দ হবে, না হলে খুব বিরক্তিকর হবে। যে ভাবেই হোক, লোকজনের নজরে যেন আসে। সেটা এত ভাল ভাবে এসেছে বলে খুবই ভাল লাগছে।” অমিতের কথার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে সুরকার শান্তনু মৈত্রের বক্তব্যও, “যা স্বাভাবিক, তা একঘেয়ে। তাই বিজ্ঞাপনের স্বল্প সময়ে গভীর অর্থবহ কোনও কিছুর তুলনায় আবোল তাবোল গিব্বেরিশ সব সময়ই বেশি জনপ্রিয় হয়।”
বেশ কয়েক বছর আগে জনপ্রিয় হওয়া একটি হেলথ ড্রিঙ্কের বিজ্ঞাপনে সেই ডিঙ্ক খাওয়ার জন্য বিভিন্ন কারণ জানাতেন বিভিন্ন বয়সের মানুষজন। কিন্তু সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়েছিল একটি বাচ্চার আধো আধো স্বরে বলা, ‘আমি তো এমনি এমনি খাই।’ এই ‘এমনি এমনি’ সুলভ অহেতুক আনন্দেই জনপ্রিয় হয়েছে ‘হানি বানি’।
|
 |
অস্কার দৌড়ে দু’নম্বরে ‘পাই’ |
একসঙ্গে ১১টি মনোনয়ন নিয়ে সবাইকে চমকে দিল অ্যাং লি-র ছবি ‘লাইফ অফ পাই’। ভারতীয় কলাকুশলীদের অভিনয়সমৃদ্ধ ছবিটি ইতিমধ্যেই ভারতে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এ বার ‘স্লামডগ মিলিওনেয়ারে’র মতো ‘পাই’-এর সুবাদেও ভারতের সামনে অস্কার জয়ের হাতছানি। কী ভাবে? ১১টি মনোনয়নের মধ্যে পাই-এর একটি মনোনয়ন শ্রেষ্ঠ গান-এর জন্যও। ‘পাই’জ লালেবি’ গানটি গেয়েছেন ভারতের বম্বে জয়শ্রী। গানটি লেখাও তাঁর। স্লামডগ-এ ‘জয় হো’-র গীতিকার হিসেবে অস্কার জিতেছিলেন গুলজার। জয়শ্রীও তা পারেন কি না, সেটা ২৪ ফেব্রুয়ারিই স্পষ্ট হয়ে যাবে। আগে একাধিক বার অস্কারের আসর মাত করেছেন স্টিভেন স্পিলবার্গ। ১২টি মনোনয়ন নিয়ে এ বারও এগিয়ে তাঁর ‘লিঙ্কন’।
|
অমিতাভ অতুলনীয়, আমির |
অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে নিজের তুলনা করেন না। কারণ অমিতাভই তাঁর আদর্শ। তাই বচ্চনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করারও কোনও প্রশ্ন ওঠে না। এক সাক্ষাৎকারে এ কথা স্পষ্ট করে জানালেন আমির খান। বললেন,“তাঁকে উচ্চ স্থানে বসিয়েছি। তাই নিজেকে তাঁর প্রতিযোগী ভাবতে পারি না।”
|

দার্জিলিঙে ‘ইয়ারিয়া’-র শ্যুটিংয়ে পরিচালক
দিব্যা খোসলা কুমার। বৃহস্পতিবার ছবি তুলেছেন রবিন রাই। |
|
|
|
 |
|
|