|
|
|
|
দুর্নীতির তদন্ত চেয়ে মামলা |
|
হলদিয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন কোর্ট,
কেন্দ্রের হলফনামা তলব
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
|
হলদিয়া বন্দরকে বাঁচাতে সেখানকার বিভিন্ন দুর্নীতির তদন্ত চেয়ে মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থের মামলা করলেন আইএনটিইউসি-র এক সদস্যা। সেই মামলার সূত্রেই হলদিয়া বন্দরের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে হাইকোর্ট। এই ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার ও বন্দর-কর্তৃপক্ষকে হলফনামা পেশের নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ক্লিয়ারিং এজেন্টদের এই মামলায় যোগ দিতে বলে ডিভিশন বেঞ্চ। ক্লিয়ারিং এজেন্টদের যোগদান এবং কেন্দ্রের হলফনামা পেশের পরে এ ব্যাপারে মতামত জানাবে উচ্চ আদালত।
উজ্জয়িনী সেনগুপ্ত নামে রাজ্য আইএনটিইউসি-র এক পদাধিকারী ওই মামলায় অভিযোগ করেন, ব্যাপক দুর্নীতির ফলে হলদিয়া বন্দর প্রায় মৃত। সেখানে বিনা দরপত্রে কাজ করছেন ক্লিয়ারিং এজেন্টরা। এবিজি সংস্থাকে চলে যেতে বাধ্য করানো হয়েছে। ওই সংস্থা থাকার সময় দৈনিক যে-আয় হত, বন্দর তাতে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছিল। আবাদেনকারীর আর্জি, এই অবস্থায় ওই বন্দরকে বাঁচাতে সবিস্তার তদন্তের নির্দেশ দিক আদালত। সেই সঙ্গে বন্দর-অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের দিয়ে একটি কমিটি গড়ে দেওয়ার জন্যও আবেদন জানানো হয়েছে। ওই কমিটি নিয়ে বন্দরের উন্নয়নের দিশা দেখাবে।
এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ ১৫ দিনের মধ্যে জাহাজ মন্ত্রক ও বন্দর-কর্তৃপক্ষকে হলফনামা দিয়ে তাঁদের বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দিয়েছে। সেই সঙ্গে ওই নির্দেশে জানানো হয়েছে, হলদিয়া বন্দরে এখন যে-সব ক্লিয়ারিং এজেন্ট কাজ করছেন, তাঁদেরও এই মামলায় যোগ দিতে হবে।
আবেদনকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতে বলেন, “কিছু ব্যক্তি ও সংস্থাকে বেআইনি ভাবে, বিনা দরপত্রে হলদিয়া বন্দরে ক্লিয়ারিং এজেন্টের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে। বন্দরের স্বার্থ উপেক্ষা করে এক সাংসদের হস্তক্ষেপে এবং বন্দর-কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে এই সব কাজকর্ম চলছে।” তিনি জানান, এবিজি-র মতো একটি আর্ন্তজাতিক সংস্থা বহু কোটি টাকা বিনিয়োগ করে দৈনিক যে-পরিমাণ মালপত্র ওঠানো বা নামানোর কাজ করছিল, তাতে বন্দর-কর্তৃপক্ষ লাভ করতে শুরু করে। কিন্তু আইন ভেঙে কাজকর্ম শুরু হওয়ার পরে ওই বন্দর সমস্যায় পড়ে যায়। সব শুনে হলদিয়া বন্দরের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে হাইকোর্ট।
আইএনটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য আদালতের বাইরে জানান, এবিজি চলে যাওয়ায় শুধু যে ওই বন্দরেরই ক্ষতি হয়েছে তা নয়। পশ্চিমবঙ্গ সম্পর্কে সারা দেশে ভুল বার্তা গিয়েছে। একটি বণিকসভার আলোচনাচক্রে প্রদীপবাবু বলেন, “হলদিয়া থেকে এবিজি-কে যে-ভাবে চলে যেতে হল, তাতে রাজ্যের শিল্প-পরিবেশ সম্পর্কে খারাপ বার্তা গিয়েছে। বিনিয়োগকারী ছাড়াও শ্রমিকেরা, বিশেষ করে ঠিকা-শ্রমিকেরা এই ঘটনায় শঙ্কিত।”
এবিজি-র ব্যাপারে প্রদীপবাবুর এই বক্তব্য মানতে রাজি নন আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেন। তিনি বলেন, “এবিজি চলে যাওয়ায় কারও কাছেই কোনও রকম খারাপ বার্তা যায়নি। এবিজি তো কোনও শিল্প প্রতিষ্ঠান নয়। তারা বিনিয়োগকারীও নয়। তাই হলদিয়া বন্দর থেকে তাদের চলে যাওয়ায় শ্রমিকদের কাছেও কোনও ভুল বার্তা যাওয়ার প্রশ্ন ওঠে না।” |
|
|
|
|
|