• ২০০০ সালেও উত্তরবঙ্গের মেচি থেকে সঙ্কোশ নদী পর্যন্ত ঘুরে বেড়ানো ২০০ হাতি। দু’বছর আগে
গণনায় দেখা যায় ৫৩০টি হাতি রয়েছে। বর্তমানে তা ৬০০ ছাড়িয়েছে। বনে খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে
বলে
পরিবেশপ্রেমীদের আশঙ্কা। চালতা, ডুমুর, কাঁঠাল-সহ হাতিদের প্রিয় ফলের গাছগুলি
ধ্বংসের
পথে।
ওই কারণে
রাতে হাতিরা লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে।
জঙ্গল থেকে লোকালয়ের
দিয়ে
পা বাড়াতে
গিয়ে
পার হতে হচ্ছে রেলপথ। সেখানেও দুর্ঘটনা ঘটছে। |
• ২০১০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর বানারহাটের কাছে মরাঘাট লেভেল ক্রসিং-এর পাশে ধান খেতে আসা
৭টি হাতি মালগাড়ির ধাক্কায় মারা যায়। এর পরে করিডর নিয়ে পরিবেশপ্রেমীরা সরব হন। তাঁরা ১৬৪
কিলোমিটার রেলপথে আরও চারটি জায়গায় মোট ৯১ কিলোমিটার হাতি যাতায়াতের পথ চিহ্নিত করেন।
|
একগুচ্ছ প্রস্তাব মঞ্চের
নিজস্ব সংবাদদাতা • আলিপুরদুয়ার |
ট্রেনের ধাক্কায় হাতি-মৃত্যু রুখতে রাতে ট্রেনের গতি ৩০ কিমি প্রতি ঘণ্টায় বেঁধে দেওয়ার পরামর্শ দিল ‘বন ও বন্যপ্রাণী সুরক্ষা মঞ্চ’। দুর্ঘটনায় ঘন ঘন হাতি-মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে বনবস্তির মানুষ সম্প্রতি ‘বন ও বন্যপ্রাণী সুরক্ষা মঞ্চ’ গড়েছেন। সোমবার বিকেলে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের রাজাভাতখাওয়া প্রকৃতিবীক্ষণ কেন্দ্রে রেল ও বন দফতরের সঙ্গে তাঁদের বৈঠক হয়। সেখানেই রেল ও বন দফতরের যৌথ নজরদারি, লাইনের পাশ দিয়ে লোহার বেড়া দেওয়ার মতো কিছু প্রস্তাব দেওয়া হয়। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডিএফডি ভাস্কর জেভি জানান, হাতি মৃত্যু রুখতে রেলদফতর ও বনবস্তিবাসীদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। বনবস্তিবাসীরা বেশ কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছেন। বিষয়গুলি দফতর আলোচনা করে জানাবে বলেছে। রেল ও বনবস্তিবাসীদের নিয়ে মনিটরিং কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় ট্রেনের ধাক্কায় আহত হাতিটিকে চিকিৎসার জন্য রবিবার বিকেলে রেল লাইনের ধার থেকে সরিয়ে ২৩ মাইল টাওয়ারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জখম হাতিটি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। এ পর্যন্ত ট্রেনের ধাক্কায় আহত অন্য হাতিটির খোঁজ মেলেনি।
|
প্রধান করিডর |
• গুলমা-সেবক (১০.৫ কিমি)
• নাগরাকাটায় (৩ কিমি) |
• মাদারিহাট-হাসিমারা (৩ কিমি)
• হাসিমারা-কালচিনি (২ কিমি)
|
|
সুপারিশ করিডরে সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত নজরদারি |
• ওয়াচ টাওয়ার তৈরি • ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ • রেল-বন সমন্বয় বাড়ানো
অভিযোগ কোনও সুপারিশ ঠিক মতো মানা হয়নি।
|
রেল কী বলছে? |
• রেলপথে অত্যাধুনিক ক্যামেরা বসানোর কথা ভাবা হয়েছে।
• হাতি রেললাইনের কাছাকাছি গেলে অ্যালার্ম বাজবে, এমন যন্ত্র লাগানোর চেষ্টা হচ্ছে। • কয়েকটি এলাকায় আন্ডারপাস তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে। |
|
গেজ বদলের পর ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু |
১৬ মার্চ ২০০৪ মহানন্দা অভয়ারণ্যের পাশে মালগাড়ির ধাক্কায় একটি ।
২৫ মে ২০০৬ বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের কাছে মহানন্দা এক্সপ্রেসের ধাক্কায় একটি।
২৯ মে ২০০৬ মাদারিহাটের কাছে প্যাসেঞ্জার ট্রেনের ধাক্কায় একটি।
১৩ নভেম্বর ২০০৬ মাদারিহাটের কাছে মালগাড়ির ধাক্কায় একটি।
১৮ নভেম্বর ২০০৬ মংপঙের কাছে মিলিটারি স্পেশাল ট্রেনের ধাক্কায় একটি।
১১ এপ্রিল ২০০৭ বক্সাবক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে মাল গাড়ির ধাক্কায় একটি।
২৫ জুলাই ২০০৭ মহানন্দা অভয়ারণ্যে গুয়াহাটি ঝাঝা এক্সপ্রেসের ধাক্কায় একটি।
৯ নভেম্বর ২০০৭ বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে রেল ইঞ্জিনের ধাক্কায় একটি।
১৫ জানুয়ারি ২০০৮ বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে মালগাড়ির ধাক্কায় একটি।
২২ জুলাই ২০০৮ মহানন্দা অভয়ারণ্যে ঝাঝা এক্সপ্রেসের ধাক্কায় একটি।
৪ অক্টোবর ২০০৮ বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে মালগাড়ির ধাক্কায় একটি।
২৭ মে ২০০৯ জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান লাগোয়া লাইনে একটি।
৩১ মে ২০১০ রেডব্যাঙ্ক চা বাগানের পাশে ইন্টারসিটির ধাক্কায় একটি।
৩ জুন ২০১০ বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পাশে বিএসএফ স্পেশাল ট্রেনের ধাক্কায় একটি।
১৮ জুলাই ২০১০ সিঙ্গিমারি ব্লকে মালগাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু একটি।
৯ অগস্ট ২০১০ চাপরামারির কাছে ইঞ্জিনের ধাক্কায় একটি।
২২ সেপ্টেম্বর ২০১০ মরাঘাট বাগানের পাশে মালগাড়ির ধাক্কায় সাতটি।
১৫ নভেম্বর ২০১০ রহিমপুর বাগানের পাশে মহানন্দা এক্সপ্রেসের ধাক্কায় একটি।
১৬ নভেম্বর ২০১০ মহানন্দা জাতীয় উদ্যানের পাশে মালগাড়ির ধাক্কায় একটি।
২৫ জুন ২০১১ রেডব্যাঙ্ক বাগানের পাশে আসানসোল এক্সপ্রেসের ধাক্কায় দু’টি।
৩ অক্টোবর ২০১১ মহানন্দা জাতীয় উদ্যানের পাশে আর্মি ট্রেনের ধাক্কায় একটি।
৬ নভেম্বর ২০১১ জলদাপাড়ার পাশে গুয়াহাটি রাঁচি এক্সপ্রসের ধাক্কায় একটি।
৩ ডিসেম্বর ২০১২ মহানন্দা অভয়ারণ্যের পাশে একটি।
৫ জানুয়ারি ২০১৩ রাজাভাতখাওয়ায় ঝাঝা এক্সপ্রেসের ধাক্কায় তিনটি হাতির মৃত্যু। |
|