ওষুধ কেনায় গাফিলতি, অভিযুক্ত ৩ হাসপাতাল
প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসা-সামগ্রীর অভাব ঘটিয়ে রোগীদের চরম অসুবিধায় ফেলার গুরুতর অভিযোগ ওঠায় কলকাতার তিন প্রথম সারির মেডিক্যাল কলেজকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। কী ভাবে এমন পরিস্থিতি তৈরি হল, তা ওই হাসপাতালের কর্তৃপক্ষদের থেকে জানতে চেয়েছে তারা। এ রকম ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তার জন্য অন্য মেডিক্যাল কলেজগুলিকেও সতর্ক করা হয়েছে।
অভিযুক্তের তালিকায় থাকা তিন হাসপাতাল হল এসএসকেএম, নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ (এনআরএস) এবং কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।
কী ভাবে এরা নিজেরাই নিজেদের হাসপাতালে ওষুধ ও চিকিৎসা-সামগ্রীর অভাব তৈরির জন্য দায়ী?
স্বাস্থ্য ভবনের প্রোকিওরমেন্ট বিভাগের কর্তাদের অভিযোগ, ২০১২-’১৩ সালে ওষুধপত্র ও চিকিৎসা-সামগ্রী কিনতে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও এনআরএস-কে চার কোটি করে এবং এসএসকেএম হাসপাতালকে সাত কোটি টাকা দিয়েছিল দফতর। দুই খেপে ২০১২ সালের এপ্রিল ও জুলাই মাসে ওই টাকা দেওয়া হয়েছে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ইতিমধ্যে তিন কোটি টাকার ওষুধপত্রের বরাত দিয়েছে সরকার অনুমোদিত সংস্থাগুলির কাছে।
একই ভাবে এনআরএস ও এসএসকেএম, দু’টি হাসপাতালই দু’কোটি টাকার বরাত দিয়েছিল। ওষুধ ও অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহও করে দিয়েছিল সংস্থাগুলি। কিন্তু তার পরে আর তাদের পাওনা টাকা মেটাচ্ছে না এই তিন মেডিক্যাল কলেজ। কেউ অর্ধেক টাকা দিয়েছে। কেউ তারও কম দিয়েছে।

কোন মেডিক্যাল কলেজের কত বকেয়া
• হাসপাতাল ওষুধের বরাত মিটিয়েছে
• মেডিক্যাল কলেজ ৩ কোটি ৩৫ লক্ষ
• এসএসকেএম ২ কোটি ৪৫ লক্ষ
• এনআরএস ২ কোটি ৬৫ লক্ষ
* টাকায়
প্রোকিওরমেন্ট বিভাগের এক শীর্ষস্থানীয় কর্তার কথায়, “ওই হাসপাতালগুলি থেকে পরপর অভিযোগ আসছিল যে, ওদের ভাঁড়ার শূন্য। ওষুধ নেই, সেলাইয়ের জিনিস, গ্লাভ্স নেই। আমরা তখন সরবরাহকারী সংস্থাগুলির জবাবদিহি চাই। ওরা কাগজপত্র দেখিয়ে জানায়, আগে যে ওষুধপত্র পাঠানো হয়েছে, তারই টাকা এখনও ওই তিন হাসপাতাল মেটায়নি। তাই হাসপাতালগুলি নতুন করে যে বরাত দিচ্ছে, সেই জিনিস পাঠানো বন্ধ করা হয়েছে।” তাঁর আরও বক্তব্য, “কম্পিউটারে সব তথ্য যাচাই করে যখন হাসপাতালগুলির কাছে জানতে চাওয়া হয়, তখন তারা জানায়, বিল সব ট্রেজারিতে প্রোসেস করতে দেওয়া হয়েছে। সেখানে একটু দেরি হচ্ছে বলে ওষুধ সরবরাহকারীদের হাতে ঠিক সময়ে চেক পৌঁছচ্ছে না। কিন্তু আমরা খবর নিয়ে দেখেছি, এই দেরি অনেক ক্ষেত্রেই ইচ্ছাকৃত। তাই বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। কারণ এই গড়িমসিতে সব চেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে রোগীদের।”
স্বাস্থ্য দফতর, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ওষুধ সরবরাহকারী সংস্থাগুলির মধ্যে এই টানাপোড়েনে মাসের পর মাস প্রয়োজনীয় ওষুধ ও সামগ্রীর সরবরাহ আটকে গিয়েছে ওই হাসপাতালগুলিতে। অথচ শুধু কলকাতা ও তার আশপাশ নয়, দূর-দূরান্তের জেলা থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার রোগী এই মেডিক্যাল কলেজগুলিতে চিকিৎসার জন্য আসেন। সেখানেই এখন অ্যান্টিবায়োটিক, ডিস্টিল ওয়াটার, গ্লাভ্স, তুলো, গজ, ব্যান্ডেজ, সেলাইয়ের সুতো-সূচ সব কিছুরই আকাল। বিপিএল তালিকাভুক্ত রোগীদেরও এই সব বাইরের দোকান থেকে কিনতে হচ্ছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষেরা অবশ্য যুক্তি দিয়েছেন, সরকারি নিয়ম মেনে চলতে গিয়েই চেক তৈরিতে দেরি হচ্ছে। ট্রেজারিতে গিয়ে বিল পড়ে আছে। ওরা বিল ক্লিয়ার করে চেক না পাঠালে টাকা দেওয়া যাচ্ছে না। তা ছাড়া, কম্পিউটারে সমস্যার জন্যও দেরি হচ্ছে। তাঁদের পাল্টা অভিযোগ, “অধিকাংশ অন্য রাজ্যের সংস্থাকে বরাত দেওয়া হচ্ছে। তারা সময়মতো জিনিস পাঠাতে পারছে না বলে বিনা কারণে মাল আটকে আমাদের নামে অভিযোগ করছে।”স্বাস্থ্যকর্তারা অবশ্য এর মধ্যে অন্য ষড়যন্ত্রও দেখছেন। এক শীর্ষ কর্তার মন্তব্য, “হাসপাতালের কিছু চিকিৎসক এবং ট্রেজারির কিছু লোক ইচ্ছাকৃত ভাবে এই দেরির জন্য দায়ী। এঁরা চাইছেন, দেরি হচ্ছে দেখে ওষুধ সরবরাহকারী সংস্থাগুলি যেন এঁদের দ্বারস্থ হন এবং বিশেষ কিছু সুবিধা দেন। তখন বিল দ্রুত প্রোসেস হবে। কিন্তু এই দুষ্টচক্র ভাঙা হবেই।”

বাজারে নতুন
স্বাস্থ্য রক্ষারনয়া পণ্য আনল ভার্জিন গোষ্ঠী। সংস্থার দাবি, এর মধ্যে আছে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষ টি ব্যাগ, শিশুদের দাঁত পরিষ্কার করার আয়ুর্বেদিক ড্রপ, চুলের তেল ইত্যাদি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.