গত ২৬ ডিসেম্বর আনন্দবাজার পত্রিকার নদিয়া-মুর্শিদাবাদ পৃষ্ঠায় ‘খ্রিস্ট সঙ্গীতে বাংলার নানা সুরের মিলন’ র্শীর্ষক সংবাদে বঙ্গসংস্কৃতির একটি ধারাকে তুলে ধরার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। সুব্রত পাল, অভিজিৎ বসু প্রমুখেরা এ বিষয়ে গবেষণায় ব্রতী হয়েছেন জেনে আনন্দ পেলাম। প্রসঙ্গত বলি, প্রকাশিত সংবাদে উদ্ধৃত ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে গগনচন্দ্র দত্তের লেখা ‘ভোর হইল, ভানু প্রকাশিল’ একটি প্রাচীন খ্রিস্ট সঙ্গীত হলেও তা প্রাচীনতম নয়। প্রাচীনতম খ্রিস্ট সঙ্গীতের উৎস খুঁজে পাওয়া যাবে বাংলা বাইবেলের পূর্ণাঙ্গ অনুবাদক তথা বাংলা গদ্যের জনক উইলিয়াম কেরির বাংলা শিক্ষক রামরাম বসুর রচনায়। তিনি ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে খ্রিস্টস্তবে লিখছিলেন-
‘কেআর তরিতে পারে
লর্ড জিজছ ক্রাইস্ট বিনা গো’।
মূল ইংরেজি গান ‘জিজাস, আই লাভ দাই চারমিং নেম’ ও ‘হি ডাইস! দি ফ্রেন্ড অব্ সিনারস্ ডাইস’-এর অনুসরণে ১৮০২ খ্রিস্টাব্দে রামরাম বসু যথাক্রমে লেখেন ‘হে খ্রিস্ট যিশু মুকদিত’ ও ‘হে শুন পাতকিগণ’ শীর্ষক দু’টি গান। তা ছাড়াও শ্রীরামপুর মিশনের পাদ্রি ওয়ার্ডের অনুরোধে রামরাম বসু ‘খ্রিস্ট বিবরণামৃতং স্তবং’ অংশে যিশু খ্রিস্টের স্তবগান রচনা করে লেখেন,
‘দয়াতে যে গুণময়
অবতরি য়হোদয়
ত্রাণহেতু লভিল মরণ।’
‘বাংলা খ্রিস্ট সঙ্গীত’ নিয়ে গবেষণার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে, তবে তা অবশ্যই রামরাম বসুকে বাদ দিয়ে নয়।
শ্যামল রায়, জিয়াগঞ্জ। |