চেয়ারম্যান পাওয়া নিয়ে নাটক
নির্বাসন হলে লড়াই করতে তৈরি বাগান কর্তারা
ডার্বি ম্যাচের রায় জানানোর জন্য ফেডারেশন আজ শনিবার দিল্লিতে আই লিগ কোর কমিটির যে সভা ডেকেছে, তার চেয়ারম্যান হতে চাইছেন না কেউ!
নিয়মানুযায়ী চেয়ারম্যান হওয়ার কথা ছিল ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেলের। কিন্তু শুক্রবার সকালে তিনি দিল্লি থেকে মুম্বই চলে যান ‘বিশেষ কাজে’। সচিব কুশাল দাশ দিল্লি থেকে ফোনে বললেন, “প্রেসিডেন্টের সভায় থাকার সম্ভবনা ফিফটি-ফিফটি। সকালে তো প্রচণ্ড কুয়াশা থাকে। বিমান ছাড়তে দেরি হয়।” বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, বিতর্ক এড়াতে রাজনীতির লোক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রফুল্ল থাকতে চাইছেন না সভায়।
প্রফুল্ল না থাকলে নিয়মিত সভা পরিচালনা করেন যিনি, ফেডারেশনের সেই সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুব্রত দত্ত-ও এড়িয়ে যেতে চাইছেন ‘সভাপতি’র চেয়ার। এ দিন দিল্লি পৌঁছে বলে দিলেন, “যে দু’টো দলের মধ্যে ঝামেলা দু’টোই বাংলার। আমি বাংলার লোক হয়ে সেই সভায় চেয়ারম্যান হব না। যে-ই শাস্তি পাক কষ্ট হবে। সভায় কোনও কথা বলব না। ঢুকেই জানিয়ে দেব অন্য কেউ চেয়ারম্যান হোক।” জানা গিয়েছে, সুব্রতবাবুর সঙ্গে মোহনবাগান কর্তাদের সম্পর্ক সাপে-নেউলে। আই এফ এ-র সভায় সুব্রতবাবুর বিরুদ্ধে মোহন-সচিব অঞ্জন মিত্র প্রশ্ন তুলেছিলেন, যিনি বাংলার আই লিগ দলগুলির সমস্যা নিয়ে ভাবেন না, তাঁকে কেন বাংলার প্রতিনিধি করে ফেডারেশনে পাঠানো হবে?
কিন্তু চেয়ারম্যানের চেয়ার কেন এড়িয়ে যাচ্ছেন ফেডারেশনের গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীরা? দিল্লির ফুটবল হাউসে ফোন করে দু’রকম তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। কর্তাদের একাংশ মনে করছেন, মোহনবাগানের দু’বছরের নির্বাসন অনিবার্য বুঝেই দায়িত্ব এড়াতে চাইছেন ফেডারেশনের বড় কর্তারা। কারণ নিয়মানুযায়ী সভার রায় মোহনবাগানকে জানাবেন চেয়ারম্যানই। কর্তাদের অন্য অংশ অবশ্য এই যুক্তি মানতে নারাজ। জানাচ্ছেন, চেয়ারম্যান যিনিই হোন রায় নির্ধারিত হবে এক সদস্যের কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতেই। চেয়ারম্যান বা কমিটির অন্য সদস্যদের সেই অর্থে কিছুই করার নেই। রীতি মানতে হয় বলেই সভা হচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের রিপোর্ট আজ সকাল এগারোটায় খোলা হবে কোর কমিটির সভায়। মুখবন্ধ খাম খোলার পরই জানা যাবে ৯ ডিসেম্বরের ডার্বিতে বিরতির সময় দল তুলে নিয়ে মোহনবাগান ঠিক করেছে কি না। দোষী হলে, এ বছর তো বটেই সামনের দু’বছরও নির্বাসন হবে ওডাফাদের। আর নির্দোষ হলে ডার্বির রিপ্লে হবে। ফেডারেশন সচিব কুশল দাস বললেন, “রিপোর্ট খোলার পর নিয়ামানুযায়ী যা হওয়ার হবে। কমিটি রিপোর্ট পড়বে। তারপর দোষী বা নির্দোষ ক্লাবকে ওদের মাধ্যমেই জানিয়ে দেওয়া হবে রায়।” কোর কমিটিতে ক্লাবের প্রতিনিধি হিসাবে থাকবেন ডেম্পো, লাজং, পুণের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের প্রতিনিধিও। থাকার কথা ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট-সহ মোট পাঁচ সদস্যের। থাকবেন সচিব কুশল দাস ও আই লিগের সিইও সুনন্দ ধরও।
শতবর্ষ প্রাচীন ক্লাবের ইতিহাসে নজিরবিহীন শাস্তির সামনে দাঁড়িয়েও মোহনবাগান অবশ্য লড়াই থেকে পিছু হটছে না! অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত প্রশ্ন তুলেছেন সভায় ইস্টবেঙ্গল প্রতিনিধির উপস্থিতি নিয়ে। “ডার্বি ম্যাচে আমাদের প্রতিপক্ষ ছিল ইস্টবেঙ্গল। তারাও তো একটা পক্ষ। রায়দানের সভায় ওরা থাকবে কেন?” পাশাপাশি তাঁর প্রশ্ন, “সুব্রতবাবু যদি নিরপেক্ষই হন, তা হলে চেয়ারম্যান হতে ভয় পাচ্ছেন কেন?” রাতে জানা গেল, সভার চেয়ারম্যান হতে রাজি হয়েছেন দক্ষিণের প্রতিনিধি, কর্নাটকের এ আর খলিল।
নির্বাসন হচ্ছে ধরে নিয়ে অবশ্য ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছে মোহনবাগান। সেখানে তাদের প্রধান অস্ত্র সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি তরুণ চট্টোপাধ্যায়ের ‘রায়’। কর্তাদের দাবি, সবকিছু দেখে তরুণবাবু লিখিত জানিয়েছেন, “ডার্বি ম্যাচে খেলার মতো পরিস্থিতি ছিল না।” ২৪ ডিসেম্বর দিল্লিতে সওয়ালের সময় সেই ‘রায়’ এক সদস্যের কমিশনের কাছেও জমা দিয়েছেন সবুজ-মেরুন কর্তারা। আজ বিকেলে আইনজীবীদেরও ক্লাব তাঁবুতে আসতে বলেছেন কর্তারা। সচিব অঞ্জন মিত্র বললেন, “রায়টা দেখি। তার পর যা করার করব। সব পথই খোলা রাখছি আমরা।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.