সমীক্ষা পাঁচ মহানগরীতে
চাকরির সুযোগ তৈরিতে একেবারে শেষে কলকাতা
চাকরির সুযোগ তৈরির দৌড়ে দেশের পাঁচ মেট্রো শহরের মধ্যে একেবারে শেষে স্থান পেল কলকাতা!
এক দিকে, প্রায় নিয়ম করে রাজ্য সরকার দাবি করছে নতুন লগ্নি আসার। তুলে ধরছে লক্ষাধিক কর্মসংস্থানের সূত্র তৈরির প্রতিশ্রুতি। অন্য দিকে, শিল্পমহলের সমীক্ষার ফলাফল কিন্তু হাঁটছে ঠিক তার বিপরীতে। উঠে আসছে উল্টো পরিসংখ্যান। যেখানে স্পষ্ট, দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু তো দূর অস্ৎ। কাজের সুযোগ তৈরির প্রশ্নে এমনকী চেন্নাইয়ের থেকেও বহু যোজন পিছিয়ে কলকাতা।
নিয়োগের জন্য সাধারণত কর্মসংস্থানের বিভিন্ন পোর্টাল এবং জাতীয় ও আঞ্চলিক খবরের কাগজে বিজ্ঞপ্তি দেয় বেসরকারি সংস্থা। তার ভিত্তিতেই মেট্রো শহরে কাজের সুযোগ তৈরির বিষয়ে সমীক্ষা করেছে বণিকসভা অ্যাসোচ্যাম। সেই অনুযায়ী, এ বছর জানুয়ারি থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে দিল্লি ও রাষ্ট্রীয় রাজধানী অঞ্চলে চাকরির সুযোগ তৈরি হয়েছে সব থেকে বেশি। প্রায় ১.১ লক্ষ। মুম্বই, বেঙ্গালুরু ও চেন্নাইয়ে এই সংখ্যা যথাক্রমে ৭৭ হাজার, ৭৫ হাজার ও ৪৪ হাজার। সেখানে কলকাতা প্রায় বামন। কাজের সুযোগ তৈরির সংখ্যা মাত্র ২৫ হাজার। এটা ঠিকই যে, এই সমীক্ষা অনুযায়ী, এ বার সারা দেশেই কাজের সুযোগ তৈরির হার কমেছে প্রায় ২১%। কিন্তু কমার এই ধারা বজায় থেকেছে সব শহরের ক্ষেত্রে। তাই তার আড়ালে ‘মুখ লুকোনোর সুযোগ’ কলকাতার নেই বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়
রাজ্যের এই মলিন ছবি তুলে আনা পরিসংখ্যানকে অবশ্য নম্বর দিতে নারাজ শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বরং তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, “শূন্যপদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি মানেই কি নতুন চাকরির সুযোগ? তা তো না-ও হতে পারে? কীসের ভিত্তিতে শূন্য পদের হিসেব ধরে সমীক্ষা করা হয়েছে, তা জানব কী করে?”
তবে রাজ্যে চাকরি-বাজারের হাল যে বেশ খারাপ, সম্প্রতি তেহট্ট সফরে সে কথা মেনে নেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে বেকারের সংখ্যা ১ কোটিরও বেশি কবুল করে তিনি বলেন, “যে যেখানে পারবেন, সরকারি-বেসরকারি, সব ক্ষেত্রেই আবেদন করুন। তারপরে আমি দেখব।”
কিন্তু সমস্যা হল, নতুন লগ্নি বা পুরনো ব্যবসা সম্প্রসারণ না-হলে, কাজের সুযোগ তৈরি হবে কোথা থেকে? বিশেষত বেসরকারি সংস্থায়। তাই এ জন্য রাজ্যে লগ্নির খরাকেই দুষছে শিল্পমহল। ঠিক যে ভাবে প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেনের প্রশ্ন ছিল, কল-কারখানা না হলে চাকরির জায়গা কোথায়?
কিন্তু বিনিয়োগ না- আসার এই সমালোচনাকেও তেমন পাতে দিচ্ছেন না বর্তমান শিল্পমন্ত্রী। পার্থবাবুর দাবি, তাঁরা ২২২টি প্রকল্পকে (মোট প্রস্তাবিত লগ্নি ১ লক্ষ ৯ হাজার কোটি টাকা) নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন। যার সুফল মিলবে ধাপে ধাপে। কারণ লিজ-চুক্তির পরে কারখানা চালু হতে প্রায় বছর তিনেক সময় লাগে। শুধু তা-ই নয়, শিল্প-পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য যে উজ্জ্বল ছবি তুলে ধরতে মরিয়া, তারও ইঙ্গিত মিলেছে শিল্পমন্ত্রীর কথায়। তাঁর দাবি, রাজ্য আর শুধু লগ্নির ইচ্ছের হিসাবের উপর ভিত্তি করে বিনিয়োগের সম্ভাব্য অঙ্ক কষতে রাজি নয়। বরং এখন গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বাস্তবে কতটা লগ্নি হচ্ছে, তার উপর। তাই এ বার জমির লিজ-চুক্তিকে কাজ শুরুর সময় ধরে ছ’মাস অন্তর অগ্রগতি খতিয়ে দেখবে শিল্প দফতর। দফতরের আধিকারিকদের নির্দিষ্ট প্রকল্পের তালিকাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ৩ বছর পর্যালোচনার পরেও যদি দেখা যায় কাজ এগোয়নি, তাহলে জমি ফিরিয়ে নেবে রাজ্য। এ ধরনের উদ্যোগ এই প্রথম বলে পার্থবাবুর দাবি। তিনি অবশ্য মনে করেন, এতে সুবিধা হবে শিল্পোদ্যোগীরও। কারণ, সময়ে সব সরকারি অনুমোদন মিলছে কি না, সেটাও এই পর্যালোচনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.