বর্ধমানে দলের সাংগঠনিক শৃঙ্খলা রক্ষায় তৃণমূল নেতৃত্ব তৎপর হলেও, জেলায় কারখানা বা হাসপাতালে দলের কর্মীদের হামলা নিয়ে তাঁরা নীরবই থাকলেন। প্রথমে জয় বালাজি কারখানায় আধিকারিকদের হেনস্থা, তারপর শুক্রবারই দুর্গাপুরে বেসরকারি হাসপাতালে তৃণমূল কর্মীদের বিক্ষোভ হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শনিবার দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কালীঘাটে বর্ধমানের তৃণমূল নেতা, বিধায়ক-মন্ত্রীদের ডেকে পাঠিয়েছিলেন। জেলার এক মন্ত্রী ও দুই বিধায়কদের কাজ নিয়ে সমালোচনাও করেছেন মমতা। কিন্তু বৈঠকে কারখানা বা হাসপাতালের অশান্তি নিয়ে কোনও আলোচনাই হয়নি বলে দলীয় সূত্রের খবর। প্রশ্নের জবাবে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় বলেন, “আমাদের দলের ব্যাপারে আলোচনার জন্য নেত্রী দলীয় কর্তাদের বাড়িতে ডেকেছিলেন। ফলে দলের অন্দরের কথা বাইরে বলব না।”
পঞ্চায়েত ভোটের আগে কালীঘাটে জেলাওয়ারি বৈঠক করছেন মমতা। এর আগে দুই ২৪ পরগনার বৈঠক হয়ে গিয়েছে। এ দিন বর্ধমানের বৈঠক হয়। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাংগঠনিক বিষয়ে জড়িয়ে না-পড়ে মন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়কে তাঁর দফতরের কাজে মনোনিবেশ করতে পরামর্শ দিয়েছেন মমতা। এলাকা উন্নয়নের কাজে গাফিলতি হচ্ছে বলে আসানসোলের মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় ও কুলটির বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের কঠোর সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি নেতাদের সতর্ক করে বলেছেন, পঞ্চায়েত ভোটে কেবল সিপিএমই নয়, কংগ্রেস-বিজেপিও তৃণমূলের প্রতিপক্ষ। ফলে কঠিন লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেন মমতা।
বৈঠকে কটোয়ায় দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে বেশি সমালোচনা হয়। দুর্বলতার জন্য দলীয় নেতা কাঞ্চন মুখোপাধ্যায়-সহ কয়েকজনকে দোষারোপ করা হয়। অপমানিত কাঞ্চনবাবু বৈঠক থেকে বেরিয়েই সংবাদমাধ্যমের কাছে তৃণমূল ছেড়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। পরে অবশ্য তিনি বলেন, “আমি দল ছাড়ার কথা বলিনি। আমি দলের জেলার ভাইস-প্রেসিডেন্টের পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছি। কাটোয়ায় সাংগঠনিক ত্রুটিতে দল দুর্বল। তাই আমি পদত্যাগ করে নতুন কমিটি গড়ার জন্য নেতৃত্বের কাছে বার্তা দিতে চেয়েছি।’’ তবে জেলার এক পদাধিকারী বলেন, “কাঞ্চনবাবুর তো পদই নেই। তা হলে আবার পদত্যাগের কী আছে!” বরং, সংবাদমাধ্যমের কাছে কাঞ্চনবাবুর মুখ খোলায় দলীয় নেতৃত্ব বিরক্ত।
|
বাড়িতে গুলি, অভিযোগ নেতার
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
বাড়িতে দুষ্কৃতী হামলার অভিযোগ তুললেন দুর্গাপুরের আইএনটিটিইউসি নেতা অসীম প্রামাণিক। গত কয়েক দিনে জয় বালাজির ইস্পাত কারখানায় আধিকারিকদের ঘেরাও ও বেসরকারি হাসপাতালে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়ায় নাম জড়িয়েছিল এই অসীমবাবুরই। শুক্রবার গভীর রাতে সগড়ভাঙায় তাঁর বাড়ি লক্ষ করে দুষ্কৃতীরা গুলি ছোড়ে বলে পুলিশে অভিযোগ করেন তিনি। জয় বালাজি কারখানার কিছু আধিকারিকের মদতেই এমন ঘটেছে বলে তাঁর দাবি। যদিও কারখানার ভাইস প্রেসিডেন্ট নিরঞ্জন গৌরীসারিয়া বলেন, “ভিত্তিহীন অভিযোগ। ওই নেতা ও তাঁর সংগঠনকে অবৈধ ঘোষণা করার জন্যই হয়তো তিনি এ সব বলছেন।” পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত চলছে। শুক্রবার অসীমবাবুদের বিক্ষোভে যে হাসপাতাল জেরবার হয়েছিল, এ দিন অবশ্য সেখানে স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়েছে বলে জানান সিইও প্রবীর মুখোপাধ্যায়। |