উত্তর কলকাতা
মেটারনিটি হোম
উন্নত সেবার সন্ধানে
ত্তর কলকাতার অবিনাশ দত্ত মেটারনিটি হোমে ‘নিও নেটাল কেয়ার ইউনিট’ চালু করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ইউনিটটি চালু হবে বলে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের দাবি। পাশাপাশি যৌথ উদ্যোগে ‘রেডিওলজি ও প্যাথলজি’ পরিষেবাও চালু হবে।
রাজ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথি বলেন, “আধুনিকীকরণের কাজ আগেই শুরু হয়েছিল। এ ধরনের মেটারনিটি হাসপাতালে ‘নিও নেটাল কেয়ার ইউনিট’-এর খুব প্রয়োজন। দ্রুত ইউনিটটি চালু হবে। আধুনিক চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য আরও পরিকল্পনা রয়েছে।”
১৯৭২-এ এই হাসপাতাল চালু হয়। তবে অভিযোগ, ঠিকমতো পরিষেবা পাওয়া যেত না। ১৯৭৭-এ তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী অজিত পাঁজা একশো শয্যা চালু করেন। তার পরেও এই হাসপাতালের কোনও উন্নতি হয়নি। স্থানীয় বিধায়ক শশী পাঁজার কথায়: “আগে দরকার পাঁচ তলা বাড়িটির মেরামতি। বামফ্রন্ট আমলে কিছুই হয়নি। ঘরগুলিরও শোচনীয় অবস্থা ছিল। অথচ, এই হাসপাতালের জন্য রাজ্য সরকারের একটি নির্দিষ্ট বাজেট ছিল। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে উন্নয়নের কাজ শুরু হয়। হাসপাতালটিকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের আওতায় আনা হয়।”
হাসপাতাল সূত্রে খবর, অনেক সময় সদ্যোজাতের কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিলে শিশু সুস্থ হয়ে ওঠে। সেই জন্যই নিও নেটাল কেয়ার ইউনিট প্রয়োজন। রাজ্যের অনেক হাসপাতালেই ‘নিও নেটাল কেয়ার ইউনিট’ চালু করা হয়েছে বলে জানান রাজ্য সরকারের ‘নিও নেটাল কেয়ার ইউনিট’ টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান ত্রিদিব বন্দ্যোপাধ্যায়।
আর জি কর হাসপাতালের অধ্যক্ষ পার্থজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই হাসপাতালটি বর্তমানে আমাদের আওতায়। এখান থেকে চিকিৎসকেরা ওই হাসপাতালে রোগী দেখতে যান। প্রসূতি এবং সদ্যোজাত শিশুদের উন্নতমানের স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। নিও নেটাল কেয়ার ইউনিট চালু হলে পরিষেবার মান আরও বাড়বে।” পার্থজিৎবাবু জানান, পাইকপাড়ায় ইন্দিরা মাতৃসদনও আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের আওতায় নেওয়া হয়েছে।
অবিনাশ মেটারনিটি হোমের সুপার প্রণবকুমার রায় বলেন, “২০১১-এ উন্নয়নের জন্য ১ কোটি ২২ লক্ষ টাকা পাই। তা দিয়ে বাড়িটির মেরামতি এবং বৈদ্যুতিক সংযোগের কাজ হয়েছে।” এখানে ‘গাইনোকলজি ও অবসট্রাকটিস’ ছাড়াও ‘পেডিয়াট্রিকস’ বিভাগ রয়েছে। এ ছাড়াও, যৌন রোগ নিরাময়ের জন্য আলোচনা কেন্দ্রও রয়েছে। অপারেশন থিয়েটার দু’টি। আরও একটি অপারেশন থিয়েটার তৈরি হচ্ছে। ডাক্তার আছেন ১৮ জন। এ ছাড়াও বহির্বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা
নিয়মিত বসেন।
স্থানীয় কাউন্সিলর তৃণমূলের শিখা সাহা বলেন, “হাসপাতালটি পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছিল। এখন হাসপাতালটি আধুনিকমানের প্রসূতি কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।” এই হাসপাতালে ভর্তি এক রোগীর আত্মীয় বললেন, “২৪ ঘণ্টা প্যাথোলজি বিভাগ ছাড়া আর কোনও সমস্যা নেই। আর জি করের আওতায় আসার ফলে চিকিৎসায় সুবিধা হয়েছে।” প্রণববাবু জানান, সব সময় প্যাথোলজি এবং রেডিওলজি পরিষেবা দেওয়ার জন্য একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগের কথা হয়েছে। আশা করা যায় কয়েক মাসের মধ্যেই তা কার্যকরী হবে।

—নিজস্ব চিত্র




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.