|
|
|
|
|
|
 |
যেখানে ভূতের ভয়... |
সেই বাড়ি |
সত্যজিতের ‘ব্রাউন সাহেবের বাড়ি’র নাম ছিল এভারগ্রিন লজ, সামনে দাঁড়ালে মনে হয় যেন ইংল্যান্ডের গ্রামাঞ্চলের একটা পুরনো পরিত্যক্ত বাড়ি। ছোট্ট কাঠের গেট, অজস্র নাম-না-জানা গাছ এবং ইউক্যালিপটাস। ‘বাবার গল্পের বর্ণনার সঙ্গে যেন হুবহু মিলে গিয়েছিল বাড়িটা। টালির ছাউনি দেওয়া পোর্টিকো, বাঁকা থাম বেয়ে ওঠা লতা, দেওয়ালের ওপর শ্যাওলা, পুরনো দরজা-জানালা, কাঠের মেঝে, আর প্রতিটি ঘরেই ফায়ারপ্লেস। একটা ঘর বেছে নিয়ে সেটাকে ঠিকঠাক করা ছাড়া আমাদের প্রায় কিছুই করার ছিল না।’ সত্যজিতের গল্পটা থেকে ফিল্ম তোলার গল্প শোনাচ্ছিলেন সন্দীপ রায়। কালিম্পঙে যে বাড়িতে রবীন্দ্রনাথ ছিলেন, সেটাকেই কয়েক দিনের জন্যে ব্রাউন সাহেবের বাড়ি বানালেন তাঁরা। ‘বাবার লেখায় যদিও শহরটা বেঙ্গালুরু, কিন্তু সেটা একেবারেই প্রাধান্য পায়নি, গা-ছমছমে পরিবেশ নিয়ে বাড়িটাই বড় হয়ে উঠেছে গল্পে। তা ছাড়া সাহেবদের প্রিয় জায়গা যত-না বেঙ্গালুরু তার চেয়েও বেশি কালিম্পং।’ |
 |
ছবি তুলেছেন সন্দীপ-পুত্র/ সত্যজিৎ-পৌত্র সৌরদীপ রায়। |
লু হিল্ট-কে যেমন চমৎকার মানিয়েছে ডক্টর লার্কিন-এর চরিত্রে, গল্পটাকে এ-বঙ্গে এনে ফেলায়, এখানে দীর্ঘ বসবাসের ফলে ভাঙা বাংলায় ইংরেজি মিশিয়ে কথা বলে চরিত্রটি। রঞ্জন অনীক আর মিস্টার ব্যানার্জির চরিত্রে আবির ভাস্বর (সঙ্গের ছবিতে) আর বিশ্বজিৎ। অবশ্য ফায়ার প্লেস আর একটা বিশেষ ধরনের লাল হাই-ব্যাক্ড চেয়ারও ক্লাইম্যাক্সে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হয়ে ওঠে। ফায়ার প্লেস পাওয়া গেলেও অন্যটা ‘শেষ পর্যন্ত বুনি (ললিতা রায়) খুঁজে খুঁজে একটা ফার্নিচারের দোকান থেকে নিয়ে এল।’ এর সঙ্গে সত্যজিতের ‘অনাথবাবুর ভয়’ ও শরদিন্দুর ‘ভূত-ভবিষ্যৎ’ নিয়ে সন্দীপের নতুন ছবি ‘যেখানে ভূতের ভয়’, প্রযোজনা শ্রী ভেঙ্কটেশ ও সুরিন্দর ফিল্মস। তিনটে গল্পকে কথকের মতো বুনেছেন পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (তারিণীখুড়ো)। ‘বাবার তারিণীখুড়ো-সিরিজের গল্পগুলো থেকে এই চরিত্রটাকে নিয়ে আমার মতো করে ব্যবহার করেছি গোটা ছবিতে।’ জানালেন সন্দীপ। তাঁর হাতে ভূতেদের ভবিষ্যৎ কী দাঁড়ায়... দিন গুনছে দর্শক। |
বাংলার মুদ্রা |
খ্রিস্টজন্মের অনেক আগেই এ দেশে ছিল ‘পাঞ্চ মার্কড কয়েন’। বাংলার বহু প্রত্নস্থল থেকে এই মুদ্রা পাওয়া গিয়েছে। ১২০৪-এ পাওয়া যাচ্ছে বাংলার প্রথম সুলতানি মুদ্রা বা বখতিয়ার খিলজির মুদ্রা (সঙ্গের ছবি)। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৭৫৭-য় কলকাতায় একটি মিন্ট স্থাপন করে। এখানে যে মোহর তৈরি হয় তাতে লেখা ছিল ‘আলিনগর কলকাতা’। অত্যন্ত দুর্লভ এই মুদ্রা। মুর্শিদাবাদ মিন্টে যেমন তৈরি হয়েছিল শাহ আলমের মুদ্রা। দনুজমর্দ্দন মহেন্দ্রদেব ছাড়াও ত্রিপুরা-কোচবিহারের কিছু মুদ্রায় আছে বাংলা হরফের ব্যবহার। বাংলা কেন্দ্রিক এমন সব মুদ্রা নিয়েই আয়োজিত হয়েছে বিশেষ প্রদর্শনী ‘কয়েন্স অব বেঙ্গল থ্রু দি এজেস’। নিউমিসম্যাটিক সোসাইটি অব ক্যালকাটার ষোড়শ প্রদর্শনীতে দশ জন সংগ্রাহকের দুর্লভ সংগ্রহ দেখা যাবে। প্রদর্শনী, আলোচনার সঙ্গে থাকবে অন্যান্য মুদ্রার প্রদর্শন এবং নিলাম। স্মারক মুদ্রা বিক্রির জন্য থাকবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার কাউন্টার। বালিগঞ্জ পার্কের হলদিরাম ব্যাঙ্কোয়েট হলে এই মুদ্রা উৎসব চলবে ২৭-৩০ ডিসেম্বর, সকাল ১০-৬টা।
|
ইতিহাসবিদ |
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ইতিহাস চর্চার যে ধারা নরেন্দ্রকৃষ্ণ সিংহের হাত ধরে শুরু হয়েছিল তাকে এগিয়ে নিয়ে যান নীলমণি মুখোপাধ্যায়। কলকাতা, বর্ধমান, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর পাশাপাশি ফোর্ড ফাউন্ডেশনের বৃত্তি নিয়ে আমেরিকায় উচ্চতর গবেষণা করেছেন। প্রথম বই ব্রিটিশ শাসনের সময়ে মাদ্রাজের রায়তওয়ারি ব্যবস্থা নিয়ে। ১৯৬৮-তে কলকাতা বন্দর পত্তনের শতবার্ষিকী, বন্দর কর্তৃপক্ষের অনুরোধে লিখলেন কলকাতা বন্দরের ইতিহাস। তাঁর পূর্বপুরুষ ছিলেন উত্তরপাড়ার জমিদার জয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়, ১৯৭৭-এ জয়কৃষ্ণের জীবনী ‘দি স্টোরি অব আ বেঙ্গল জমিনদার’ তাঁকে এনে দেয় রবীন্দ্র পুরস্কার। অধ্যাপনা ছাড়াও সামলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনের দায়িত্ব। ক্ষীণ দৃষ্টির জন্য শেষ দিকে গবেষণা থেকে সরে যেতে বাধ্য হন। দীর্ঘ অসুস্থতার পরে ৮২ বছর বয়সে রসিক, সুপুরুষ, ছাত্রঅন্তপ্রাণ মানুষটি চলে গেলেন।
|
শতবর্ষে |
১৯১৪-র ১৫ জানুয়ারি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, এশিয়াটিক সোসাইটি হলে প্রথম ‘ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেস’-এর উদ্বোধনী ভাষণে ইউরোপীয় এবং ভারতীয় বিজ্ঞানীদের সক্রিয় সহযোগিতায় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রসারের আহ্বান জানিয়েছিলেন। ৩-৭ জানুয়ারি ২০১৩, এই কলকাতাতেই বসতে চলেছে বিজ্ঞান কংগ্রেসের শততম বার্ষিক অনুষ্ঠান। সংস্থার সাধারণ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ গত ২ জুন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘শতবার্ষিকী হল’-এ শততম বর্ষের সূচনা করেন। প্রথম অধিবেশনের সময় সদস্য ছিলেন ১০৫ জন, সে বার পড়া হয়েছিল ৩৫টি পেপার। শততম অনুষ্ঠানে সদস্য সংখ্যা ২২ হাজার ছাড়িয়েছে, থাকছেন ৬ জন নোবেলজয়ী। গবেষণাপত্রের সংখ্যা অন্তত ২,০০০। কলকাতার স্মরণীয় বিজ্ঞানীদের স্মৃতিতে অধিবেশনগুলি নামাঙ্কিত। বিজ্ঞান কংগ্রেসের প্রথম সভাপতি আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিতে একটি বিশেষ বক্তৃতাও থাকবে, জানালেন কার্যনির্বাহী সম্পাদক অমিতকৃষ্ণ দে। অনুষ্ঠানের প্রধান আহ্বায়ক কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। স্মারকগ্রন্থ, ১০০ বছরের ১০০টি বিজ্ঞানের শ্রেষ্ঠ নিবন্ধের সংকলনগ্রন্থের পাশাপাশি প্রকাশ পাবে বিশেষ ডাকটিকিট। যুবভারতী স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী-সহ বিশিষ্টজন।
|
নতুন সাজে |
শহরের বইপ্রেমীদের জন্য নতুন করে সেজে উঠেছে এলগিন রোডের বুকস্টোর ক্রসওয়ার্ড। পছন্দের বই চটজলদি মিলবে এটিই সাজের মূলকথা। তাই তৈরি হয়েছে রকমারি বিভাগ। বিষয় তো বটেই, বিভাগ তৈরিতে প্রাধান্য পেয়েছে পাঠকের বয়সও। টিনএজারদের জন্য রয়েছে ইয়ং ফিকশন, সত্যজিৎ রায়ের সিরিজ ছাড়াও ম্যানেজমেন্ট, গণিত, রেফারেন্স বই। দেশি-বিদেশি বইয়ের সম্ভারেও রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল বুকস, ম্যাগাজিন, বুকসেট, ক্রসওয়ার্ড রেকমেন্ডেশন ইত্যাদি বিভাগ। কলকাতা সেল্ফ-এ থাকছে কলকাতা সংক্রান্ত উল্লেখযোগ্য বই। ক্রসওয়ার্ড রেকমেন্ডেশন-এ রয়েছে রকমারি বেস্টসেলার-এর সম্ভার। রয়েছে হিন্দি ও বাংলা বইয়ের আলাদা আলাদা জায়গা। পড়ে দেখার ব্যবস্থাও রয়েছে। পড়ার ফাঁকে গলা ভিজিয়ে নেওয়ার জন্য রয়েছে কাফেটেরিয়া। বুকস্টোরের ‘বই বাজার’-এ নির্বাচিত বইয়ের ওপর সারা বছরই মিলবে বিশেষ ছাড়। ২১ ডিসেম্বর ক্রসওয়ার্ডের নবরূপের উদ্বোধন করতে আসছেন চানক্যজ চান্ট খ্যাত লেখক অশ্বিন সাংঘি।
|
কথামালা |
‘বাঙালি ডালভাত খায়। সত্যজিৎ রায়ের রহস্য গল্প পড়ে। দুটোই পূর্বে সূর্য ওঠার মতো স্বাভাবিক ঘটনা।’ লিখছেন সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ। আবার শ্রীম-র ‘কথামৃত’ নিয়ে লিখছেন ‘পড়তে গিয়ে মনে হয়, যেন সেই পবিত্র পুরুষের শ্বাসপ্রশ্বাসের শব্দও শোনা যাচ্ছে।’ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী সম্পর্কে: ‘এক জ্যোৎস্নার রাতে পুনে শহরের প্রান্তে মূলামুঠা নদীর তীরে নীরেনদার সঙ্গে নেচে নেচে কোরাস গেয়েছিলাম...।’ সম্প্রতি তাঁর এই কথামালা (কারিগর, ৩৮০.০০) বইটির উদ্বোধন হল তাঁর পরিবারবর্গ এবং সুধীর চক্রবর্তী রামকুমার মুখোপাধ্যায় রবিশঙ্কর বলের উপস্থিতিতে। দেখানো হল সিরাজকে নিয়ে তৈরি কে জি দাসের তথ্যচিত্র। এ-বইয়ের শুরুতে সিরাজ জানিয়েছেন, তাঁর মনে হয়েছিল এ-লেখাগুলি নিজের স্বভাবেই জলের মতো উবে যাবে, অথচ গ্রন্থিত করতে গিয়ে ‘দেখছি অন্য এক আমি আমার ভেতরে লুকিয়ে ছিল।’ পৌষের প্রথম রোদের মতোই তাঁর এ-গদ্য পাঠককে টেনে নিয়ে যাবে দূরের স্মৃতিতে, উস্কে দেবে তর্ক। কৃষ্ণেন্দু চাকীর প্রচ্ছদ আর অলংকরণ।
|
শ্রমজীবী স্বাস্থ্য |
ডাক্তার ধীরেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় শুধু পাভলভপন্থী মনোচিকিৎসক ছিলেন তা নয়, বিজ্ঞান আন্দোলনে তিনি ছিলেন এক পুরোধাপুরুষ। বাংলা বিজ্ঞানরচনায় তিনি অন্য মাত্রা এনেছিলেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ও সম্পাদিত ‘মানবমন’ পত্রিকা পঞ্চাশ বছর পেরিয়েও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী। এ বারও পাভলভ ইনস্টিটিউট ও ‘মানবমন’-এর উদ্যোগে তাঁর নামাঙ্কিত বক্তৃতা ২১ ডিসেম্বর বিকেল ৫টায় বাংলা আকাদেমি সভাঘরে। বিষয় ‘শ্রমজীবী স্বাস্থ্য’। বলবেন ডাঃ অনিলকুমার সাহা, যিনি এই কাজে বহুকাল ধরে যুক্ত।
|
মাস্টারমশাই |
সম্প্রতি চলে গেলেন ‘মাস্টারমশাই’। মধ্যমগ্রামের কুশলনাথ ভদ্র এই নামেই পরিচিত ছিলেন। প্রধান শিক্ষকের পদে ছিলেন বিভিন্ন বিদ্যালয়ে। নেশা ছিল দুঃস্থ ছেলেমেয়েদের নিজের পায়ে দাঁড় করানো। পড়ানোর পাশাপাশি কিনে দিতেন খাতা-বই। স্ত্রী’র গয়না বন্ধক রেখে ‘বারাসাত সান্ধ্য কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করেন। লেখালেখির জগতেও ছিল তাঁর অবাধ বিচরণ। পূর্ব বাংলায় শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখেছিলেন তুমি ডাক দিয়েছ কোন সকালে, দাঙ্গা কবলিত মানুষের কথা নিয়ে লিখেছিলেন স্মৃতির অতল থেকে। ঢাকা এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যলয়ের এম এ। বাংলা, ইংরেজি এবং সংস্কৃত সাহিত্যে সুপণ্ডিত কুশলবাবু বিরাট এলাকার শিক্ষককুলের কাছে ছিলেন ‘চলন্ত অভিধান’। ‘সাহিত্যিকা’ তাঁর স্মরণে বিশেষ সভা করল ১৬ ডিসেম্বর।
|
পুতুল নেবে... |
পুতুল নেবে গো! না, প্লাস্টিকের খেলনায় ছেয়ে যাওয়া আজকের মেলায় এমন ডাক শোনার আশা বৃথা। কিন্তু স্মৃতিটুকু থাকে। ছোটবেলার সেই স্মৃতিই কৃষ্ণনগর ছুটিয়েছিল অরুন্ধতী গুপ্ত আর উর্বশী বসুকে। তার পরে পুতুল-সন্ধান এবং তারই কিছু নির্বাচিত নিয়ে ৬২ বালিগঞ্জ প্লেসে উর্বশীর ‘ডিজাইন স্টুডিয়ো’য় কর্মশালা ও প্রদর্শনী, চলবে ২২ পর্যন্ত।
|
কবির প্রয়াণ |
“কাটল জীবন ধাঁধার ফাঁদে ব্যক্তিগত।/ একলা এখন হেঁটে বেড়াই- বাইরে একটা পুকুর আছে/ শান্ত হাওয়া মনে করায় একটি ছবি......।” এই কবিই লিখেছিলেন- “এখানে বেঁচে থাকার মানে/ নীল জিনস্, পল্লবগ্রাহীর ধাঁধা/এবং একজন তাত্ত্বিককে নিয়ে/কথা বলা যে অনেকটাই ভাঁড়।” জীবনবোধের এই টানাপড়েন ছড়িয়ে আছে তাঁর কাব্যগ্রন্থে। চিত্রকল্প থেকেই বোঝা যায় আনন্দ ও বিষাদকে কী ভাবে জড়িয়ে রেখেছেন তাঁর কবিতায়। সম্প্রতি চলে গেলেন কবি অর্ধেন্দু চক্রবর্তী। জন্ম ২০ নভেম্বর ১৯৩৪-এ বর্মায় (এখন মায়ানমার)। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে চলে আসেন চট্টগ্রামে। পরে কলকাতাতেই ছিলেন আমৃত্যু। কবিতা, গদ্য, প্রবন্ধ লেখা ছাড়াও অনুবাদ করেছেন বিশ্বসাহিত্যের বিচিত্র সম্ভার। সম্পাদনা করেছেন পত্রিকা।
|
ভালোমানুষ |
 |
ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য |
প্রশাসনিক কাজকর্মের বাইরেও রীতিমতো আবৃত্তি আর নাটকের চর্চা করেন সৌমিত্র মিত্র। কখনও নিছক কবিতার আবৃত্তি, কখনও বা সেই প্রথাগত ধারা থেকে বেরিয়ে বিখ্যাত সঙ্গীত পরিচালককে দিয়ে আবহ যোগ করা। কিন্তু নাটকে তিনি যেন আরও বেশি জড়িয়ে থাকেন। সেই ১৯৭০ থেকে নাটকে জড়িয়ে পড়া সৌমিত্রর। আর সেই উত্তাল সময়ে ‘আর্চিক’ বলে ছোট্ট একটি নাট্যদলে যে নাটকে অভিনয় করলেন তার নাম ‘উত্তাপ-সংক্রান্ত কলকাতা’। সার্ত্রের ‘মেন উইদাউট শ্যাডো’র বাংলা অনুবাদ করেছিলেন সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, এই নামে। তার পরে এই চার দশক জুড়ে সরকারি কাজকর্মের পাশাপাশি তাঁর মঞ্চ-জীবনটিও বেশ জমজমাট। ‘নান্দীকার’, ‘গণকৃষ্টি’ হয়ে এখন তাঁর নিজের দল ‘পূর্বপশ্চিম’-এর প্রযোজনায় চলছে তিনটি নাটক ‘পটলবাবু ফিল্ম স্টার’, ‘রক্তকরবী’ আর ‘ভালোমানুষ’। “ওই শেষেরটাই এখন আমার কাছে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং। ও নাটকে অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় যে চরিত্রটা করতেন, মাখনবাবু, সেটাতেই এখন অভিনয় করি আমি,” বলছিলেন সৌমিত্র। ভয় করে না? “করে বটে, তবে অজিতেশের নাটকটার রিহার্সাল দিনের পর দিন দেখেছি, তাই কিছুটা ভরসাও পাই।” ‘ভালোমানুষ’-এর পরের অভিনয় ২০ ডিসেম্বর, মধুসূদন মঞ্চে। |
|
|
|
|
এই শহরে |
১৯৩২-৩৩-এ প্রথম কলকাতায় এলাম। প্রথমে কলকাতায়! চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউতে কী একটা হোটেল ছিল, তাতে আমরা ছিলাম মনে আছে। ...সে একটা টিপিক্যাল বাংলা খাবার, থালায় করে ভাত আসছে মাছ, মাছের ঝোল। পাগলের মতো খেতাম। কী যে ভালো লাগত। ...এই সময়ে আলাপ হল হরেনদার সঙ্গে। হরেন ঘোষ। হরেনদার অফিস ছিল Tiger সিনেমার সামনে। Corporation Street-এ। ...ভাবতেও অবাক লাগে যে ওই ছোট্ট অফিসেই কলকাতার সেরা লোকদের আড্ডা ছিল।” অনুলিখিত স্মৃতিকথা স্মৃতি-তে বলেছিলেন পণ্ডিত রবিশঙ্কর। এই শহর তাঁর সঙ্গে জড়িয়েছিল আমৃত্যু। এ কলকাতাই পাল্টে দিয়েছিল তাঁকে। নিজেই বলছেন, “একটা কথা ঠিক, এলগিন রোডে এসেই আমার অনেক কিছু চেঞ্জ হয়ে গেল। সেনেট হাউসে প্রথম বাবাকে দেখলাম মানে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁকে, আলি আকবরের তখন বারো বছর বয়স। ...এ সময়টা হল, end of December of 1934. এটাই প্রথম All Bengal Music Conference ভূপেনবাবু করেছিলেন।” প্রায় দু’দশক আগে এই অন্তরঙ্গ স্মৃতিকথা প্রকাশিত হয়েছিল। অনুলিখন ও সম্পাদনা করেছিলেন শংকরলাল ভট্টাচার্য। বহু নতুন ছবি-সমেত প্রতিভাস থেকে এই সপ্তাহেই সম্পূর্ণ নতুন রূপে প্রকাশিত হচ্ছে স্মৃতি আর শংকরলাল ভট্টাচার্যের লেখা অন্য রবিশঙ্কর। এ দিকে শেফালি নাগের গান-কোম্পানি ‘ছন্দধারা’ এ বার জার্মানি থেকে কলকাতায়। একদা বিদেশে ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের লাইভ কনসার্টগুলি অ্যালবাম হিসেবে প্রকাশ করত তারা, এ বার এই শহর থেকেই প্রকাশিত হচ্ছে সেগুলি, ইউডি সিরিজের পরিবেশনায়। সেই সিরিজে ডিজিটাল রেকর্ডিংয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত হল ‘ইনক্রেডিবল রবিশঙ্কর’।
সঙ্গের ছবিটি ১৯৯০-এর ডিসেম্বরে কলকাতায় তুলেছিলেন সোমনাথ ঘোষ। |
|
|
|
 |
|
|