|
|
|
|
লক্ষ্মণরা বিষধর, শুভেন্দুর মন্তব্যে বিতর্ক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া |
অসহিষ্ণুতা, ঔদ্ধত্য আর লাগামহীন ভাষা যেন অনিবার্য অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে রাজ্য-রাজনীতির। প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ অনিল বসু, তৃণমূলের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক থেকে সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তথা বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লাআপত্তিকর ভাষায় আক্রমণ শানানো রাজনীতির কারবারিদের তালিকায় এ বারের সংযোজন শুভেন্দু অধিকারী।
শনিবার হলদিয়ায় এক সভায় তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু বলেন, “অশোক গুড়িয়া, অমিয় সাহুদের জেলার কোথাও কোথাও দেখা যাচ্ছে। বিষধর সাপ এলাকায় ঢুকলে যেমন আচরণ করেন, ওদের সঙ্গেও ঠিক তেমন আচরণ করুন। লক্ষ্মণ শেঠ হলদিয়ায় ঢুকলেও একই আচরণ করুন।”
নন্দীগ্রাম-নিখোঁজ মামলায় জামিনপ্রাপ্ত সিপিএম নেতা অশোকবাবু ও অমিয়বাবু কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরে ঢোকার অনুমতি পেয়েছেন। সেই প্রেক্ষিতেই শুভেন্দুর এই মন্তব্য বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে।
রাজনীতিতে যুযুধান পক্ষের লাগামছাড়া মন্তব্য নিয়ে বারবারই বিতর্ক হয়েছে। কখনও প্রকাশ্য জনসভায় তৃণমূল সরকারের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেছেন, “হাটেবাজারে সিপিএমের সঙ্গে গল্পগুজব করবেন না। ওদের কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানেও যাবেন না।” কখনও বা সিপিএম নেতা রেজ্জাক মোল্লাকে পুলিশকর্মীদের প্রতি বলতে শোনা গিয়েছে, “দিদির (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) কথা শুনুন। কিন্তু মনে রাখবেন দাদারা আসছেন। আমাদের ছেলেদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসালে, মা-বোনেরা আপনাদের মাথায় ঢিল ছুড়ে মারবে।” |
|
হলদিয়ার সেই সভায় শুভেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র |
শুভেন্দুর এ দিনের বক্তব্য শুনে প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠের প্রতিক্রিয়া, “ভাষাই মানুষের পরিচয়। উনি (শুভেন্দু) আমাদের প্রাণে মেরে ফেলতে উস্কানি দিচ্ছেন। এটা হিংসার রাজনীতি। নিজের জীবন নিয়ে আতঙ্কিত নই, আমার আতঙ্ক রাজ্যের গণতন্ত্র নিয়ে। এ ধরনের মন্তব্য গণতন্ত্রের পক্ষে অশনি-সঙ্কেত।”
কংগ্রেসকে বিঁধতেও ছাড়েননি শুভেন্দু। কংগ্রেস নেতৃত্বকে ‘সাইবেরিয়া থেকে আসা পরিযায়ী পাখি’ বলে কটাক্ষ করেন। গত সপ্তাহে লালগড়ে কংগ্রেসের সভার পাল্টা হিসেবে রামগড়ে সভা করতে গিয়েও কংগ্রেস নেতা-নেত্রীদের ‘পরিযায়ী পাখি’ বলেছিলেন শুভেন্দু। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দীপা দাশমুন্সির পাল্টা মন্তব্য, “উনি (শুভেন্দু) কিছু দিন আগে রায়গঞ্জে গিয়েছিলেন। সেখানে পাখি দেখে বোধহয় পরিযায়ী কথাটি ওঁর পছন্দ হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও বেপরোয়া। ওঁর সাংসদ, বিধায়কেরাও তাই।”
বন্দর থেকে এবিজি-বিতাড়নের পরে কাজহারা শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষায় ‘হলদিয়া চলো’ অভিযানের ডাক দিয়েছিল কংগ্রেস। গত ২০ নভেম্বর চিরঞ্জীবপুরে হয়েছিল সভা। তারই পাল্টা হিসেবে শনিবার ‘হলদিয়া চলো’র ডাক দিয়েছিল তৃণমূল। হেলিপ্যাড ময়দানের প্রায় ৭০ হাজার মানুষের জমায়েতের সামনে শুভেন্দু অবশ্য এবিজি-প্রসঙ্গে কিছু বলেননি। উল্টে নন্দীগ্রাম প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। দাবি করেন, নন্দীগ্রামে ২০০৭ সালের ১৪ মার্চের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের অগ্রগতি প্রত্যাশিত নয়। বলেন, “কিছু দিনের মধ্যে যথাযথ ভাবে সিবিআই তদন্ত না হলে, নন্দীগ্রামের শহিদ পরিবারের সদস্যেরা সল্টলেকে সিবিআই দফতরে ধর্নায় বসবেন।” |
|
|
|
|
|