ধোনিরা আলোয়, ভারত সেই আঁধারে
‘ধোনি...ধোনি...ধোনি’ হাজার পনেরো মানুষের চিৎকারে তখন জামথা স্টেডিয়াম গমগম করছে। কারণ, স্কোরবোর্ডে ধোনির পাশে ৯৯। উল্টো দিকে অ্যান্ডারসন। দৌড় শুরু করলেন ইংরেজ পেসার। অফ স্টাম্পের দিকে গোলার মতো ধেয়ে আসা বলটাকে মিড অফের দিকে ঠেলেই প্রাণপণ দৌড় শুরু করলেন। মিড অফে যে ক্যাপ্টেন কুক, তা দেখেও! ভারতীয় দলনেতা ভুল করলেও ইংরেজ অধিনায়কের কোনও ভুল হল না। সরাসরি ছুড়লেন ধোনির সামনে, স্টাম্পে। ডেসিবেলের মাত্রা চড়ে তখন কতয়, কে জানে। ধোনির ব্যাট কি ক্রিজে পৌঁছেছে? স্লো মোশনের মাত্র একটা ফ্রেমই জবাব দিয়ে দিল। না, পারেননি তিনি। বেশ খানিকক্ষণ পর জায়ান্ট স্ক্রিনে ভেসে উঠল, ‘আউট’। স্কোরবোর্ডে সংখ্যটা একই রয়ে গেল, ৯৯। ম্যাচের ছবিটা বদলানো শুরু এখান থেকেই।
হাল ধরল যে জুটি। ছবি: পিটিআই
শেষ ৩৭ বলে মাত্র ন’রানের মধ্যে ফিরে গেলেন জাডেজা, ধোনি ও চাওলা। টেস্ট জীবনের তৃতীয় সেঞ্চুরি করে তার আগেই ফিরে গিয়েছেন কোহলি। সারা দিনের উপোসের পর দিনের শেষ ঘণ্টায় এই চার শিকারেই ইংল্যান্ডকে ম্যাচে ফেরালেন সোয়ান, অ্যান্ডারসনরা। প্রথম ইনিংসে ৩৩ রানে পিছিয়ে থেকেই রবিবার মাঠে নামবে ভারত। হাতে দু’উইকেট নিয়ে। চতুর্থ দিন ভারতীয় বোলারদেরও বড় পরীক্ষা। ইংল্যান্ডকে বিকেলের মধ্যে গুটিয়ে দিতে না পারলে কিন্তু সিরিজ ড্র করার আশাও শেষ।
বিকেল সাড়ে তিনটেতেই প্রায় সন্ধ্যার অন্ধকার জামথায়। কৃত্রিম আলোই বাঁচাল এ দিনের খেলাকে। তার আগে ভারতকে অন্ধকার থেকে আলোয় নিয়ে এল দুটো কাশ্মীরি কাঠের ব্যাট। একটার মালিক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, অন্যটার বিরাট কোহলি। পাঁচ ঘণ্টা ধরে তাঁরাই রাজত্ব করে গেলেন ইংরেজ বোলারদের ওপর। “প্রতি সেশন নয়, প্রতি ওভার ধরে ধরে খেলছিলাম আমরা। কোনও টার্গেট নিয়ে নামিনি। যতক্ষণ বেশি টিকে থাকা যায়, সেই চেষ্টাই করছিলাম ধোনি আর আমি”, বিকেলে বলছিলেন সেঞ্চুরিয়ন কোহলি। তৃতীয় দিনেও উইকেটে তেমন পরিবর্তন হয়নি, মানলেন তিনি।
এই উইকেটও তো ধোনি চাননি, যেখানে তৃতীয় দিনের শেষেও আতস কাচ দিয়ে ফাটল খুঁজতে হচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা, অবস্থাটা এ দিন স্টেডিয়ামের প্রেসিডেন্টস বক্সে বসে দেখেও গেলেন ক্রিকেট বোর্ড প্রেসিডেন্ট এন শ্রীনিবাসন। এমন উইকেটে ধোনি-কোহলিরা না হয় আলোয় এলেন। কিন্তু দল তো অন্ধকারেই ডুবে রইল। যা থেকে শেষ দু’দিন বেরোতে পারবে কি না, সেটাই বড় প্রশ্ন।
বিরাট লাফ: নাগপুরে সেঞ্চুরি কোহলির। ধোনিকে কিন্তু থামতে হল ৯৯-এ। শততম রান নিতে গিয়ে ইংল্যান্ড
অধিনায়ক কুকের সরাসরি থ্রোয়ে তিনি আউট। তবে পৌনে ছ’ঘণ্টা ধরে ধোনি-কোহলির ১৯৮ রানের
যুগলবন্দিতে ভর করে প্রথম ইনিংসে বিপর্যয় এড়াল ভারত। তৃতীয় দিনের শেষে অবশ্য এখনও
৩৩ রানে পিছিয়ে টিম ইন্ডিয়া। হাতে ২ উইকেট।
এ দিনই প্রথম মুখ খুললেন কিউরেটর প্রবীন হিঙ্গানিকর। বললেন, “উইকেট ভালই। বল তো ভালই ক্যারি হচ্ছে।” কথাগুলো বলা শেষ করেছেন, কী ড্রিঙ্কসের পরের বলেই সোয়ানের শিকার কোহলি। তার আগে এই সোয়ানকেই কভার ড্রাইভে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে ১০০-য় পা রেখেছেন। বর্তমান ও সম্ভাব্য অধিনায়কের (পৌনে ছ’ঘণ্টায়) ১৯৮ রানের যুগলবন্দির যবনিকা নামল এখানেই। দু’জনেই খেললেন তাঁদের দীর্ঘতম টেস্ট ইনিংস।
সেঞ্চুরি পেয়ে বেশ খুশি দিল্লি ব্রিগেডের সবচেয়ে ডাকাবুকো ছেলেটি। বললেন, “এই দিনটার জন্য গত এক মাস ধরে প্রচুর পরিশ্রম করেছি। নিজের ওপর আস্থা ছিল, পারব। তবে ধোনির আউটটা খুবই দুঃখজনক।”
টেল এন্ডারদের সঙ্গে করে ৯০ থেকে ৯৯-এ পৌঁছতে ধোনির লাগল ৭৭ মিনিট, ১৩ ওভার। রঞ্জিতে জোড়া ট্রিপল সেঞ্চুরি করে আসা রবীন্দ্র জাডেজা অধিনায়ককে ব্যাটে ভরসা দিতে ব্যর্থ।
এখন তাই ক্যাপ্টেন কুলের ভরসার নাম সেই অশ্বিন, ইশান্ত, ওঝা।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.