বিধানসভা কাণ্ডের জের, উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি |
গতকাল বিধানসভায় ‘চিট ফান্ড’-এর বাড়বাড়ন্ত নিয়ে আলোচনা ঘিরে অশান্ত হয়ে ওঠে সভাকক্ষ। পরিস্থিতি হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায় বিরোধী ও বামেদের মধ্যে। বাধ্য হয়ে অধ্যক্ষ অধিবেশন মুলতুবি করে দেন। সাসপেন্ড হন তিন বাম সাংসদ— নাজমুল হক, সুশান্ত বেসরা এবং আমজাদ হোসেন। বিধায়ক দেবলীনা হেমব্রম অভিযোগ করেন যে, তাঁকে চুল ধরে টেনে ফেলে দিয়ে মারধর করা হয়। জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন পাণ্ডবেশ্বরের বাম বিধায়ক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়। সমস্ত ঘটনায় শাসক দলের বিভিন্ন বিধায়কেরা জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা।
আজ অধিবেশনের শুরুতেই বামেরা তাদের তিন বিধায়কের উপর থেকে সাসপেশন তুলে নেওয়ার আর্জি জানান। কিন্তু সে আর্জি খারিজ করা হলে তাঁরা বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করেন। সভাকক্ষের বাইরে নকল অধিবেশনের নাটক করে প্রতীকী প্রতিবাদ জানান রেজ্জাক মোল্লা-সহ বাম বিধায়করা।
অপর বিরোধী দল কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও হেলমেট পরে বিধানসভার অধিবেশনে প্রবেশ করে প্রতীকী প্রতিবাদ জানান হয়। সর্বদল বৈঠকের দাবি করেন তাঁরা। কিন্তু তাও খারিজ হয়ে গেলে কংগ্রেস বিধায়করাও বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করেন। গতকালের ঘটনার কথা বলতে গিয়ে আজ তৃণমূল বিধায়ক শিখা মিত্র জানান, ‘‘যে দলই করে থাকুক, অন্যায় করেছে। এই ঘটনা নক্কারজনক।” তিনি আরও বলেন, এই অবস্থায় তাঁর নিজেরও সভাকক্ষে যেতে ভয় করছে। এই ‘দলবিরোধী কাজের’ জন্য অনির্দিষ্ট কালের জন্য সাসপেন্ড হলেন তিনি। প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানান, “আমারও অনেক কথা বলার আছে, যা বলব চিঠি পাওয়ার পর ”।
|
প্রয়াত হলেন কিংবদন্তী সেতার বাদক ও ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের মাইহার ঘরানার স্রষ্টা পণ্ডিত রবি শঙ্কর। শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছিলেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার আমেরিকার সান দিয়াগোর এক হাসপাতালে তিনি ভর্তি হন। সেখানেই আজ সকাল ৬টা নাগাদ তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।
৭ এপ্রিল ১৯২০ সালে উত্তরপ্রদেশের বেনারসে এই প্রবাদপ্রতীম শিল্পী জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত তিনি দিল্লির অল ইন্ডিয়া রেডিওতে সঙ্গীত পরিচালক হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন। ১৯৫৫ সালে সত্যজিত্ রায়ের পথের পাঁচালী ছবিতে আবহসঙ্গীতের সৃষ্টিতে পণ্ডিতজির অবদান অনস্বীকার্য। এ ছাড়াও অপরাজিত, অপুর সংসার ও পরশ পাথর ছবিতে এই দুই কিংবদন্তী একসঙ্গে কাজ করেছেন। ১৯৬৭ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি পুরস্কারে সম্মানিত হন। ১৯৮১ সালে পদ্মভূষণ, ১৯৯৯ সালে ভরতরত্ন সম্মানে ভূষিত এই শিল্পী প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের ধ্রূপদি সঙ্গীতের এক অনবদ্য মেলবন্ধন ঘটিয়েছিলেন। তিনি ভারতীয় ধ্রূপদি সঙ্গীতকে আন্তর্জাতিক জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে দিয়েছেন। জনপ্রিয় আন্তর্জাতিক রক ব্যান্ড বিট্লস-এর জর্জ হ্যারিসন ১৯৬৬ সালে তাঁর কাছে সেতার শিখতে ভারতে আসেন। ২০০২ সালে তিনি ২টি গ্র্যামি পুরস্কার পান। পণ্ডিতজির শেষ সঙ্গীত সৃষ্টি, তাঁর শেষ মিউজিক অ্যালবামটিও ২০১৩-র গ্র্যামি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছে।
তাঁর মৃত্যুতে বিশ্ব সঙ্গীত মহলে এক গভীর শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর প্রয়াণে রাজ্যসভায় শোক জ্ঞাপন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ পণ্ডিত রবিশঙ্করের মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন।
|