|
|
|
|
সুর কাটল শেষবেলায় |
প্রবল বিশৃঙ্খলা, ভাসানে এসে মৃত্যু যুবকের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • চন্দননগর |
লক্ষ মানুষের ভিড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকেই। বেশ কয়েক বছর আগে চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর ভাসানে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছিল দু’টি শিশুর। এ বার চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার জেরে মারা গেলেন এক যুবক। আহত বেশ কয়েক জন।
পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে মারমুখী জনতা চন্দননগর হাসপাতালে চড়াও হয়। এক চিকিৎসককে মারধর করা হয়। যে অ্যাম্বুল্যান্সে জখম ব্যক্তিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল হাসপাতালে, সেটিতেও ভাঙচুর চলে পুলিশের সামনেই।
হুগলির পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, “ভাসানে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঠিক সময়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।” জেলা পুলিশ কর্তাদের দাবি, পুলিশের নজরদারির অভাব ছিল না। লক্ষ লক্ষ মানুষ পুজোর দিনগুলিতে আসেন। ভাসানেও ভিড় হয় প্রচুর। এটা নেহাতই বিচ্ছিন্ন ঘটনা। |
 |
ছবি: তাপস ঘোষ। |
জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সন্ধ্যায় নিজের পাড়ার ঠাকুর ভাসান দিতে রানিঘাটে এসেছিলেন মোহাডাঙা কলোনির বাসিন্দা পেশায় গাড়ি চালক চালক দীপক বিশ্বাস (৩১) ওরফে পাপ্পু। একটি ট্রাকে করে ঠাকুর গঙ্গার পাড়ে নামানোর সময়ে পুলিশের নজর এড়িয়ে হঠাৎই অন্য একটি ট্রাক চলে আসে। সে সময়ে দু’টি ট্রাকের মাঝে পড়ে পিষ্ঠ হন দীপক। আতঙ্কিত লোকজন পালাতে শুরু করে। হুড়োহুড়ি, চাপাচাপিতে অনেকে আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, রানিঘাটে যথেষ্ট আলোর ব্যবস্থা ছিল না। ফলে ভাসানে এসে খুবই সমস্যায় পড়তে হয় পুজো উদ্যোক্তারা। পুলিশ ভিড় নিয়ন্ত্রণেও উপযুক্ত ভূমিকা নিতে পারেনি বলে অভিযোগ। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে গঙ্গার পাড়ের কাছে চলে আসেন অনেকে। তার জেরেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। আহত যুবককে কোনওক্রমে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। কিন্তু তত ক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।
এ দিকে, দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই চন্দননগর হাসপাতালে ছুটে যান কয়েকশো মানুষ। আহত ওই যুূবককে ভাল চিকিৎসার সুযোগ না দিয়েই ক্ষিপ্ত মানুষজন চিকিৎসকের উপর ঝঁপিয়ে পড়েন। চিকিৎসক পঙ্কজ সাক্সেনাকে মারধর শুরু করেন তাঁরা। কোনও ক্রমে পালিয়ে বাঁচেন ওই চিকিৎসক। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালের নার্স ও অন্য কর্মীরাও পলিয়ে যান। খবর পেয়ে র্যাফ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পুলিশ ময়না-তদন্তের জন্য দেহটি চুঁচুড়া হাসপাতালে পাঠিয়েছে। চন্দননগর কেন্দ্রীয় পুজো কমিটির অন্যতম এক কর্তা বলেন, “আমি নিজে দুর্ঘটনার সময় পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু ঘাটে এ বার আলোর কিছুটা সমস্যা ছিল। প্রচুর মানুষ পুলিশের ব্যারিকেড টপকে চলে আসায় শেষরক্ষা করা যায়নি।” |
|
|
 |
|
|