|
|
|
|
সূর্যকান্তের খাসতালুকে তৃণমূলের কর্মী-সম্মেলন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
মেদিনীপুরে যখন সিপিএমের বর্ধিত সভা চলছে, তখনই প্রাক্তন মন্ত্রী তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের খাসতালুক বলে পরিচিত নারায়ণগড়ের বেলদায় কর্মী সম্মেলন করল তৃণমূল। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের এই কর্মসূচি। উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়, নারায়ণগড় ব্লক সভাপতি মিহির চন্দ প্রমুখ। বক্তব্য রাখতে গিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএমকে ‘শূন্য হাতে’ ফেরানোর ডাক দেন উপস্থিত নেতৃত্ব। তৃণমূলের জেলা সভাপতি যেমন বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমাদের জিততেই হবে। এখন থেকে প্রস্তুতি শুরু করুন। পঞ্চায়েত আমাদের দখলে এলে উন্নয়নের কাজে গতি আসবে। গ্রামের উন্নয়ন হবে।”
অক্টোবরের শেষে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে এসেছিলেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। নারায়ণগড়ের কাশীপুর, বেলদা ও ভদ্রকালী এলাকায় তিনি দলের কর্মসূচি থেকে তৃণমূলের কড়া সমালোচনা করেছিলেন। বুধবারের কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে যেন সেই সব অভিযোগেরই জবাব দিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূল সূত্রে খবর, জেলার বিভিন্ন ব্লকেই কর্মী সম্মেলন হচ্ছে। সেই মতো নারায়ণগড়ের বেলদায় সম্মেলন হয়েছে।
চলতি মাসের ৪ তারিখ থেকে ব্লক-ভিত্তিক কর্মী সম্মেলন শুরু হয়েছে। শেষ হবে আগামী ২২ নভেম্বর। শনিবার বেলপাহাড়ির শিলদা, জামবনির গিধনি ও ঝাড়গ্রাম গ্রামীণের লোধাশুলিতে সম্মেলন হয়েছে। রবিবার বেলদায় কর্মী সম্মেলনে জেলা নেতৃত্বের পাশাপাশি জেলার তৃণমূল বিধায়কেরাও যোগ দেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে যে এই ধরনের কর্মসূচি, তা মানছেন দলের জেলা সভাপতিও। দীনেনবাবুর বক্তব্য, “পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। পুজোর আগে ব্লকে ব্লকে কর্মী-সম্মেলন হয়েছিল। পুজোর পরে ফের সম্মেলন হচ্ছে।”
পশ্চিম মেদিনীপুরে বরাবরই সিপিএমের প্রভাব বেশি ছিল। রাজ্যে পালাবদলের পরে অবশ্য পরিস্থিতি পাল্টেছে। ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে পাশের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে বদলের ‘হাওয়া’ লেগেছিল। জেলা পরিষদের ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল। তবে এ জেলায় সেই ‘হাওয়া’র বিশেষ প্রভাব পড়েনি। ফলে, ২৯০টি গ্রাম পঞ্চায়েত, ২৯টি পঞ্চায়েত সমিতি ও ৬২টি জেলা পরিষদের আসনের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠই দখলে রাখতে পেরেছিল সিপিএম। এক কথায় অটুটই থেকেছিল ‘লালদুর্গ’। ‘পরিবর্তিত’ পরিস্থিতিতে এ বার পঞ্চায়েতের দখল নিতে তৎপর হয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। নির্বাচনকে সামনে রেখে তাই আগে থেকেই শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। দলের জেলা সভাপতির কথায়, “মানুষ যা চেয়েছেন, এই ১৭ মাসে তার থেকেও বেশি পেয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে জঙ্গলমহলে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মানুষ নতুন করে জীবন ফিরে পেয়েছেন।” তাঁর বক্তব্য, “উন্নয়নমূলক কাজকর্ম শুরু হয়েছে। সিপিএম রাজনৈতিক স্বার্থেই উন্নয়নের কাজ ব্যাহত করার চেষ্টা করছে। পঞ্চায়েত আমাদের দখলে এলে উন্নয়নে গতি আসবে।” পাশাপাশি সিপিএমের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “যারা গণতন্ত্র মানে না, মানুষের উপর অত্যাচার করে, তাদের রাজনীতি করার অধিকার নেই। নতুন করে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা হলে মানুষই তার জবাব দেবেন।” |
|
|
|
|
|