ব্যাগে ইয়ো ইয়ো-টা রাখতে ভোলেননি তিনি। সেই সঙ্গে নোটবুক, টি-শার্ট আর বাড়ির ফোটো অ্যালবামটা।
চার মাস আগে মহাকাশে রওনা দেওয়ার সময় মনে করে নিয়ে এসেছিলেন পছন্দের জিনিসগুলো। এ বার তাঁর ফেরার পালা। বাড়ি ফিরছেন সুনীতা উইলিয়ামস।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই মহাকাশচারীর সঙ্গে পৃথিবীতে ফিরছেন আরও দুই নভোশ্চর। জাপানের আকিহিকো হোশিদি এবং রাশিয়ার ইউরি ম্যালেনচেঙ্কো। ভারতের মধ্যরাত্রি ৩টে বেজে ৫৬ মিনিট নাগাদ মহাকাশযান ‘সোয়ুজ’-এ চেপে মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র থেকে পৃথিবীর উদ্দেশে রওনা দেবেন তাঁরা। পৌঁছতে পৌঁছতে সোমবার সকাল ৭টা ২৩।
যাতায়াত নিয়ে মোট ১২৭ দিন মহাকাশে কাটালেন সুনীতা। গবেষণা কেন্দ্রের ৩৩তম কম্যান্ডার ছিলেন তিনিই। গত কাল কেন্দ্রের দায়িত্ব তুলে দিয়েছেন কেভিন ফোর্ডের হাতে। ২৫ অক্টোবর থেকে সুনীতাদের সঙ্গী ছিলেন তিনিও। মহাকাশের আস্তানা এ বার কেভিনের দায়িত্বে।
মেয়েকে স্বাগত জানাতে বস্টন থেকে হিউস্টনে চলে এসেছেন দীপক পাণ্ড্য। এ দিকে, ঘরে ফিরতে মোটেই মন চাইছে না মেয়ের। |
সামনের সারির মাঝে নতুন কম্যান্ডার কেভিন ফোর্ড। পিছনে সুনীতারা।
নাসার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে। —ফাইল চিত্র |
সুনীতার কথায়, “সত্যিই দারুণ জায়গা। কারোরই ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করবে না।”
যদিও এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন তিনি, এত দিন মহাকাশে অমন একটা গতির মধ্যে কাটিয়ে ফেলেছেন। ভুলতেও চান না সে সব স্মৃতি। কী অদ্ভুত লাগে ভাবতে, নভোশ্চররা কী তাড়াতাড়ি পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেন, বললেন সুনীতা। “সামান্য একটু চেষ্টা করলেই হল। ডিগবাজি খেয়ে মাথাটা নীচের দিকে করে, তার পর প্রায় ঝুলে থাকা, দেখ মা, হাত না লাগিয়েই!” ফেরার আগে ভিডিও কনফারেন্সে এমনই সব অভিজ্ঞতা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন তিনি। আরও বলেন, “অকল্পনীয় সুন্দর জায়গা। বর্ণনার প্রয়োজন নেই। কেন কেউ ফিরতে চাইবে?” এত দিন ধরে মহাকাশে কাটানো। তবু বেশি মালপত্র হয়নি সুনীতাদের। পুরো সোয়ুজে মাত্র দেড় কেজি। জানালেন, “জামাকাপড়, টুথব্রাশ, পেস্ট এ সব কিছুই নিতে হয়নি আমাদের। সবই এখানে ছিল। এমনকী বিশেষ শার্ট, কার্গো প্যান্টও। যে জিনিসগুলো নিয়ে ফিরছি, সেগুলো নিজেদের।”
এত দিন মহাকাশে থাকতে না জানি কত জামাকাপড় লেগেছে সুনীতাদের! ওখানে জামাকাপড় ধোয়া হয়ই বা কী ভাবে? মনে এ সব প্রশ্ন জাগতেই পারে।
নিজেই জানালেন সুনীতা। বললেন, এখানে জামাকাপড় অত বেশি নোংরা হয় না। শুধুমাত্র কাজ করতে গিয়ে মাঝেমধ্যে দাগ লেগে যায়। “আমাদের এখানে ধোয়াধুয়ির ব্যবস্থাই নেই। নতুন জামা পরি আর পুরনোগুলো ফেলে দিই। পৃথিবীতে যত বার করে জামা বদলাই, এখানে তেমন না।”
তা ছাড়া, কাউকে ‘ইমপ্রেস’ করার দরকারও তো নেই, যোগ সুনীতার। |