পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে উল্টো পথে তেহট্টে অনুপ্রবেশ করলেন অধীর
নস্যাস রাইফেল নিয়ে পুলিশি পাহারা ছিল রাজ্য সড়কের উপরে। মন্ত্রী ঢুকলেন উল্টো পথে, নদী পেরিয়ে। বাধা দূরের কথা, সে পথে পাহারায় থাকা জনা কয়েক পুলিশ কর্মী মন্ত্রীর গাড়ি দেখে সেলাম ঠুকলেন তাঁকে।
তিনি কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী।
১৪৪ ধারার অনুশাসন এড়িয়ে শুধু তেহট্টের হাউলিয়া মোড়েই নয়, অধীর এ দিন দেখা করে এলেন পুলিশের গুলিতে নিহত অশোক সেনের পরিবারের সঙ্গেও। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশের চোখে ধুলো দিতে তো আসিনি। রাধানগর ঘাট পেরিয়ে তেহট্ট আসার পথে কোথাও তো পুলিশ আমাকে আটকায়নি।”
বেলা সাড়ে ন’টা নাগাদ সটান তেহট্টের হাউলিয়া মোড়ে পৌঁছনর পরে পদস্থ পুলিশ কর্তারা অবশ্য মন্ত্রীর গাড়ি থামিয়েছিলেন। গাড়ি থেকে নেমে অধীর মৃদু হেসে পুলিশ কর্তাদের বলেন, “এটা তো বাজার। এত লোক ঘুরছে, এখানেও ১৪৪ ধারা জারি আছে নাকি!”
সাত সকালে তেহট্টের প্রাণকেন্দ্র হাউলিয়া মোড়ে তখন পথ চলতি মানুষ আর রিকশার ঠেলাঠেলি। মন্ত্রীকে দেখে ভিড়টা ক্রমশ চাক বাঁধতে থাকে। দলীয় সাংসদ মান্নান হোসেন এবং বিধায়ক আবু তাহেরকে নিয়ে সেখানেই মিনিট পনেরো অপেক্ষার পর মন্ত্রী এ বার পাড়ি দেন নিহতের বাড়ির দিকে। অশোকবাবুর মায়ের হাতে নগদ ৩০ হাজার টাকা তুলে দিয়ে বেরিয়ে এসে এ ব্যাপারেও অধীরের পাল্টা ব্যাখ্যা, “আমরা নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম মাত্র তিন জন। সে ক্ষেত্রেও ১৪৪ ধারা ভঙ্গের প্রশ্ন নেই।”
বিকেলে জেলা পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমন মিশ্র অবশ্য দাবি করেন, মন্ত্রীকে তেহট্টে ঢুকতে বার বার নিষেধ করেছিলেন রাস্তায় প্রহরায় থাকা পুলিশ কর্মীরা। তিনি বলেন, “মন্ত্রী পুলিশ কর্মীদের অনুরোধ অগ্রাহ্য করেই হাউলিয়া মোড়ের দিকে এগিয়ে গিয়েছিলেন। এর বেশি আর আমরা কী করতে পারি!” দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর এই ‘নিয়ম ভঙ্গে’ কিঞ্চিৎ অস্বস্তিতে পড়েছে দিল্লির হাইকম্যান্ডও।
বুধবার পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনার পর থেকেই তেহট্টে ঢোকার মূল প্রবেশ পথে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সিপিএম এবং বিজেপির প্রতিনিধি দলকে পুলিশই বৃহস্পতিবার ফিরিয়ে দিয়েছিল। এবং শুক্রবার কৃষ্ণনগর ছেড়ে তেহট্টের পথে রওনা হওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই থমকে দেওয়া হয়েছিল আর এক কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দীপা দাসমুন্সির কনভয়-ও। তাহলে অধীর পুলিশের ব্যূহ এড়ালেন কী করে?
কৃষ্ণনগর-তেহট্ট রাজ্য সড়কে গলাকাটা মাঠের কাছে এ দিনও সকাল থেকে ছিল পুলিশের আঁটোসাঁটো ব্যারিকেড। শহরের আনাচে কানাচেও ভারি বুটের টহলদারি। কিন্তু রাধানগরের দিক থেকে শহরে ঢোকার পথে পুলিশি প্রহরা ছিল নাম কা ওয়াস্তে। শনিবার সকালে সেই ‘সুযোগটাই’ নিয়ে ছিলেন বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ। রাধানগরে বাঁশের সাঁকো দিয়ে জলঙ্গি নদী পেরিয়ে শ্যামনগর হয়ে প্রায় ১৬ কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে তেহট্টের হাউলিয়া মোড়ে পৌঁছে যান অধীর। জেলা পুলিশের এর কর্তা বলেন, “ওই নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো পার হয়ে যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আসতে পারেন, পুলিশ তা অনুমানই করতে পারেনি।”
পুলিশের ‘বজ্র-ব্যারিকেড’ যে আদপে ফস্কা গেরো শনিবার তা আরও এক বার সামনে এল। তবে এ ব্যাপারে অধীরের যুক্তি, “তেহট্টে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে কেন তাই তো স্পষ্ট নয়। রাজনৈতিক সংগঠনগুলো এখানে এলে বরং ভালোই হবে। এলাকার দম বন্ধ পরিবেশটা হালকা হবে।’’ সেই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীরও এখানে আসা উচিত ছিল। না এসে তিনি দায়িত্বহীনের মতো মন্তব্য করে যাচ্ছেন।’’



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.