|
|
|
|
যন্ত্রে তৈরি মিষ্টিই সামাল দিচ্ছে ভাইফোঁটার বাজার |
সুব্রত সীট • দুর্গাপুর |
যন্ত্রে গড়া মিষ্টিই সামলে দিল ভাইফোঁটার বাজার।
কালীপুজোর সন্ধ্যায় রীতিমতো মিষ্টির আকাল দেখা দিয়েছিল দুর্গাপুরে। তবে রাত পোহাতেই বদলে গেল ছবিটা। ভাইফোঁটার আগের দিন শহরের সব দোকানেই মিষ্টির সম্ভার বেড়ে গেল এক ধাক্কায়। সৌজন্যে, যন্ত্রে গড়া মিষ্টি। গত কয়েক বছরের মতোই এ বারও পুজোর মরসুমে এবং ভাইফোঁটায় বাজারের চাহিদা মেটাল সেই যন্ত্রে গড়া মিষ্টিই।
মিষ্টি ব্যবসায়ীরা মনে করেন, তাঁদের ব্যবসায় যন্ত্রের প্রবেশের পিছনে ছিল মূলত দু’টি কারণ। প্রথমত, কারিগরের সংখ্যা দিনদিন কমছে। নতুন প্রজন্মের কেউ আর সময়সাপেক্ষ এবং ধৈর্য্যের এই কাজে আসতে চাইছেন না। এই কাজে রোজগারও তুলনায় কম। দ্বিতীয়ত, আগের থেকে ক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে। আগে শুধু বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠান, পুজো বা আত্মীয়স্বজনের বাড়ি যাওয়ার আগে সাধারণ মানুষ মিষ্টি কিনতেন। এখন কিন্তু তা নয়। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মিষ্টি কেনার হিড়িকও বেড়েছে। সেই চাহিদা মেটাচ্ছে যন্ত্র। অল্প সময়ে অনেক মিষ্টি তৈরি করে ফেলতে যার জুড়ি নেই। |
|
|
সিটি সেন্টারের মিষ্টির দোকানে ভাইফোঁটার প্রস্তুতি
জমজমাট। ছবি দু’টি তুলেছেন বিশ্বনাথ মশান। |
|
মিষ্টি ব্যবসায়ীরা জানান, রসগোল্লা, কালাকাঁদ বা রসমালাইয়ের মতো মিষ্টি দোকানেই কারিগরদের দিয়েই তৈরি করতে হয়। কিন্তু কালীপুজোর দিন দুপুরের মধ্যেই সেই সমস্ত মিষ্টি শেষ হয়ে যায়। সারা রাত ধরে কারিগরেরা নতুন করে মিষ্টি বানান। কিন্তু বাকি মিষ্টির জন্য ভরসা সেই রানিগঞ্জ বা বর্ধমানের কারখানা, যেখানে মানুষ নয়, কারিগর যন্ত্রই। এই সমস্ত কারখানা থেকে দশ-বারো রকমের সন্দেশ এসেছে। নানা সন্দেশে বিভিন্ন উপকরণের প্রাধান্য। কোনওটিতে কাজু, কোনওটিতে গাজর, কোনও মিষ্টিতে নারকেল আবার কোথাও কিসমিস ব্যবহার করা হয়েছে। দেখতে লোভনীয়, নিখুঁত আকৃতির এই সমস্ত মিষ্টি ইতিমধ্যেই বাজারে বেশ সুনাম কিনেছে। বেনাচিতি বাজারের এক মিষ্টি ব্যবসায়ী রণজিৎ বর্মণের কথায়, “নতুন ধরনের এই মিষ্টি বাজারে আসায় আমরা হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছি। খদ্দেরদের চাহিদা মেটাতে পারছি। পাশাপাশি বিক্রিও বেড়েছে।” তিনি জানান, দোকানদারদের জন্য আরও একটা ‘প্লাস পয়েন্ট’, এই সমস্ত মিষ্টি থাকেও বেশ কয়েক দিন। নষ্ট হয় না।
সিটি সেন্টারের একটি পুরনো দোকানে মিষ্টি কিনতে এসেছিলেন বি-জোনের প্রবীণ বাসিন্দা প্রমোদ দত্ত। তিনি বলেন, “আগের মতো স্বাদ নেই মিষ্টির। কিন্তু এখনকার মিষ্টিতে এক অন্য ধরনের স্বাদ রয়েছে। খেতে ভালই লাগে।” সিটি সেন্টারের কবিগুরু এলাকার রজত চট্টোপাধ্যায়, বিধাননগরের প্রসেঞ্জিৎ সমাদ্দার বা বেনাচিতির অপর্ণা বসুরা বলেন, “সাধে কি আর বলে, মানুষ অভ্যাসের দাস!”
|
|
|
|
|
|