লগ্নির সময় নির্বাচনই
সাফল্যের চাবিকাঠি
বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সময় ব্যাপারটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একই লগ্নি কোনও এক সময়ে করলে তার ফল হয় খুবই উপাদেয়, আবার অন্য সময়ে করলে তেতো বিষ। অর্থাৎ লগ্নির সময় নির্বাচন করাটাই হল সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি।
বেশি উঁচু বাজারে শেয়ার কিনেছেন তো মরণফাঁদে পা দিয়েছেন! আবার বাজারের তলানিতে শেয়ার না কেনার জন্য হয়তো পরে আফসোস করেছেন। শুধু শেয়ারের ব্যাপারেই নয়, সঠিক সময়ে সক্রিয় হওয়া কমবেশি গুরুত্বপূর্ণ সব ধরনের লগ্নির ক্ষেত্রেই। এই সময় নিয়েই চলবে আমাদের আজকের আলোচনা।
১) শেয়ারে সাফল্য পেতে লগ্নি করতে হবে দীর্ঘ মেয়াদের জন্য। বাছতে হবে ভাল সম্ভাবনাময় শেয়ার। তিন বছর পর্যন্ত ধরে রাখার কথা মাথায় রাখতে হবে। এক বছরের বেশি সময় ধরে রাখার পর বিক্রি করে লাভ হলে কোনও মূলধনী লাভ-কর দিতে হয় না। একই শর্ত প্রযোজ্য ইক্যুইটি-নির্ভর মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রেও।
২) ভাল শেয়ার কিনতে হবে বাজারে চূড়ান্ত মন্দার সময়ে। মায়া ত্যাগ করে বিক্রি করতে হবে চড়া বাজারে। এর পর অপেক্ষা করতে হবে পরের বড় পতনের জন্য।
৩) মিউচুয়াল ফান্ডে লম্বা মেয়াদে এসআইপি পদ্ধতিতে লগ্নি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই লাভজনক হয়। কারণ আপনি ইউনিট কেনেন গড় দামে। ন্যাভ গড়ের উপরে উঠলেই আপনি লাভের মুখ দেখতে পান।
৪) শেয়ারের মতো মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটও বিক্রি করতে হবে চড়া বাজারে, ন্যাভ যখন বেশ আকর্ষণীয় জায়গায়।
৫) কোনও কোনও ঘটনা ঘটলে বাজার সাময়িক ভাবে ওঠে বা পড়ে এবং কিছু দিনের মধ্যেই আবার পুরনো জায়গায় ফিরে যায়। সময় থাকতে থাকতে সুযোগ নিতে হবে এই সব ঘটনার। যেমন, কর্মী আন্দোলনের জন্য মারুতির মানেসর কারখানা সে সময়ে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দাম পড়ে গিয়েছিল মারুতি শেয়ারের। পরে উৎপাদন চালু হওয়ার পরে শেয়ারের বাজার দর ছাপিয়ে গিয়েছে আগের দামকে।
৬) ব্যাঙ্ক সুদের হার যখন শিখরে, তখন লগ্নি করতে হবে বন্ড এবং বন্ড ফান্ডে। পরে সুদ যখন নামতে শুরু করবে, তখন বাজার দর বাড়বে বিভিন্ন বন্ডের। বাড়বে বন্ড ইউনিটের ন্যাভ।
৭) ব্যাঙ্ক সুদের হার যখন বেশ উঁচুতে, তখন ব্যাঙ্কের মেয়াদি আমানতে টাকা রাখতে হবে লম্বা মেয়াদে। একই কথা প্রযোজ্য রেকারিং ডিপোজিটের ক্ষেত্রেও। পরে সুদের হার নেমে এলেও আপনি চুক্তি মতো পুরো মেয়াদেই সুদ পেতে থাকবেন।
৮) কোনও ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাতেই লম্বা মেয়াদে লগ্নি করা ঠিক হবে না। সুদ কিছুটা কম হলেও ছোট মেয়াদে লগ্নি করে সব ঠিকঠাক চললে মেয়াদ শেষে আবার রিনিউ করা যেতে পারে। বড় মেয়াদে টাকা রাখলে সংস্থার হাল যদি হঠাৎ খারাপ হয়, তবে টাকা ফেরত পাওয়া শক্ত হতে পারে।
৯) কোনও প্রকল্পে লগ্নির আগে তাতে লক-ইন মেয়াদ আছে কি না, তা জেনে নেওয়া উচিত। লক-ইন মেয়াদ হল, যে-সময়ে টাকা তুলে নেওয়া যায় না। যেমন কর সাশ্রয়কারী ব্যাঙ্ক-জমার লক-ইন মেয়াদ হল ৫ বছর। অন্য দিকে কর সাশ্রয়কারী মিউচুয়াল ফান্ডের ইএলএসএস প্রকল্পের লক-ইন মেয়াদ ৩ বছর।
১০) কোনও সূত্র থেকে কোনও অর্থ চেকের মাধ্যমে পেলে তা তৎক্ষণাৎ জমা করুন নিজের
ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। সেভিংস ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সুদ কষা হয় দৈনিক ব্যালান্সের ভিত্তিতে।
১১) সেভিংস অ্যাকাউন্টে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি টাকা জমে উঠলে তা ৪ শতাংশ সুদে ফেলে না রেখে, উঁচু আয়যুক্ত কোনও মেয়াদি আমানতে লগ্নি করতে পারেন।
কোনও বেসরকারি ব্যাঙ্ক অবশ্য এখন সেভিংস অ্যাকাউন্টে সুদ দিচ্ছে ৬-৭ শতাংশ হারে।
১২) বয়স ৬৫-৭০ পেরোলে খুব বড় মেয়াদি প্রকল্পে ক্রমপুঞ্জীত (কিউমুলেটিভ) শর্তে লগ্নি না-করে তা নিয়মিত আয়যুক্ত প্রকল্পে রেখে আয় ভোগ করার কথা ভাবতে পারেন।
১৩) জীবনবিমা যত কম বয়সে দীর্ঘ মেয়াদের জন্য করা যায়, ততই ভাল। স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়াম যেন বাৎসরিক মেয়াদ ফুরোনোর আগেই দেওয়া হয়। তা না-হলে পলিসি বাতিল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
১৪) কোন প্রকল্পের মেয়াদ কবে শেষ হচ্ছে, তা একটি ডায়েরিতে লিখে রাখুন। মেয়াদ শেষ হওয়া মাত্র নবীকরণ করুন অথবা টাকা তুলে নিয়ে তা অন্যত্র লগ্নি করতে অথবা প্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে পারেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.