ভারত-আফ্রিকা মেলবন্ধন
সিনেমার উৎসব
ত্যজিতের (বিভূতিভূষণেরও) অপরাজিত-তে একদিন জুলু-যোদ্ধার সাজে অপু চমকে দেয় তার মাকে। উঠোনে ‘আফ্রিকা আফ্রিকা’ বলে লাফাতে লাফাতে এক ছুটে পিছনের দরজা দিয়ে চলে যায় খোলা মাঠে। সর্বজয়া অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে তার দিকে। পঞ্চাশের দশকে আফ্রিকার নানান দেশে যখন ভারতীয় ছবি দেখানো হত, সর্বজয়ার মতোই অবাক হয়ে দেখত সেখানকার মানুষজন। সংস্কৃতিতে যত বৈচিত্রই থাকুক আফ্রিকার প্রায় পঞ্চাশটি দেশে, উপনিবেশ বা পরাধীনতার নিরন্তর গুঁতো সইতে হয়েছে সবাইকেই। তাই সেখানে অসম্ভব জনপ্রিয় হত ভারতীয় ছবি, আফ্রিকাবাসী আশ্চর্য হয়ে লক্ষ করত ছবিগুলির যারা নায়ক-নায়িকা তাদের গায়ের রং তামাটে, তারা অবিচারের বিরুদ্ধে নিজের পরিবারের সম্মান রক্ষার জন্যে লড়ে কোথাও যেন ‘আইডেনটিফিকেশন’ ঘটে যেত।
সিনেমা দেখার সঙ্গে সিনেমা তৈরির আগ্রহও শুরু হল, ইউরোপীয় দেশগুলির উপনিবেশ ছিল বলে সে সব দেশের সিনেমার স্টাইল তো রপ্ত হলই, স্বাধীনতার পর ফিল্ম-উৎসাহীরা মস্কো প্রাগ ওয়ারশ-তে গিয়ে ছবি তৈরি শিখতে লাগলেন। এঁদের ভিতর থেকেই এলেন সেনেগালের ওসমানে সেমবেনে (১৯২৩-২০০৭), রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক ভাষ্য বুনে দিলেন নিজের ছবিতে। ‘ওঁর ’৬৫ সালের ছবি ব্ল্যাক গার্ল দেখাচ্ছি এ বার’, জানালেন ১৮তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-এর (১০-১৭ নভেম্বর) অধিকর্তা যাদব মণ্ডল। ‘আফ্রিকার একগুচ্ছ ছবি দেখানোই হচ্ছে যাতে আমাদের সঙ্গে ওঁদের সাংস্কৃতিক বন্ধন আরও দৃঢ় হয়।’ উৎসবে ছবি বাছাইয়ের পুরোধা সন্দীপ রায় বললেন ‘পুরনোর সঙ্গে নতুনদের ছবিও রাখা হয়েছে যাতে হালফিল আফ্রিকান সিনেমার মেজাজটা বোঝা যায়।’ যেমন শাদ-এর মহমত্-সালেহ্ হারুন (জন্ম ১৯৬০), তাঁর নতুন ছবি আ স্ক্রিমিং ম্যান (সঙ্গে ছবির একটি দৃশ্য) দেখানো হচ্ছে এ বারে। ছবিটি কান-এ পেয়েছে জুরি পুরস্কার, আর ভেনিসে ‘রোবের ব্রেসঁ সম্মান’ পেয়েছেন হারুন। ১৫ নভেম্বর আফ্রিকার প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনার আয়োজন হচ্ছে, জানালেন উৎসব-অধিকর্তা।

শতবর্ষে
বাবা কিরণচন্দ্র সেন যখন প্রয়াত হন, অশোকার বয়স তখন ছয়। মা জ্যোতির্ময়ী দেবী মানুষ করেছিলেন ওঁদের ছয় ভাইবোনকে। ৯৬ বছরের জীবনজোড়া লড়াইয়ের বীজটা বোধহয় তখনই বোনা হয়েছিল। কুড়ি বছর বয়সে বিয়ে হয় আই সি এস শৈবাল গুপ্তর সঙ্গে। চার বছর বাদেই অল ইন্ডিয়া উইমেন্স কনফারেন্স-এর সদস্য। ১৯৪৩-এর মন্বন্তর, ’৪৬-এ নোয়াখালি গণহত্যা, স্বাধীনতার পর উদ্বাস্তু পুনর্বাসন, নারী-উন্নয়ন, ভারত স্কাউটস অ্যান্ড গাইডসসর্বত্র তাঁর অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতার প্রকাশ। মা জ্যোতির্ময়ীর সাহিত্যপ্রতিভার পূর্ণাঙ্গ পরিচয় তিনিই লোকলোচনে আনেন। জীবনের প্রতিটি দিন ছিল তাঁর কাছে অর্থবহ। জন্মশতবর্ষে ছকভাঙা এই মানুষটির লেখাপত্র নিয়ে চমৎকার সংকলন তৈরি করেছেন তাঁর পরিবারের সকলে, সম্পাদনায় শর্মিষ্ঠা দত্তগুপ্ত ও নারায়ণী গুপ্ত, ভূমিকা যশোধরা বাগচীর। আ ফাইটিং স্পিরিট/ সিলেক্টেড রাইটিংস অব অশোকা গুপ্ত (নিয়োগী বুকস) বইটির প্রকাশ ১১ নভেম্বর চারটেয়, আইসিসিআর-এ। উদ্যোগে এআইডব্লিউসি এবং বিভিন্ন সমাজসেবী সংগঠন।

কূর্মাবতার
গিরিশ কাসারাভল্লি আসছেন, সঙ্গে নতুন সিনেমা। কলকাতার সিনেমা-পাগল দর্শকদের জন্যে সুখবর বইকী। নতুন ছবির নামেও নতুনত্ব ‘কূর্মাবতার’, তবে গল্পটা এ কালের। অবসরের প্রান্তে পৌঁছনো এক সরকারি অফিসার, টিভি সিরিয়ালে গাঁধীজির চরিত্রে অভিনয়ের সময় তাঁর চরিত্রেও মহাত্মার গুণগুলি দেখা যেতে লাগল...! জাতীয় পুরস্কার পাওয়া এই কন্নড় ছবিটি (সঙ্গে স্থিরচিত্র) দেখা যাবে ১১ নভেম্বর সন্ধে ৬টায় মেট্রো সিনেমা হলে। ওই ছবি দিয়েই উদ্বোধন সিনে সেন্ট্রালের এ বারের ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম অব নিউ সিনেমা-র, উদ্বোধক মৃণাল সেন। বিশিষ্ট আলোকচিত্রী রামানন্দ সেনগুপ্তকে সারা জীবনের সম্মান জানানো হবে ওই সন্ধ্যায়। ২৬টি দেশের ৭৮টি ছবি, সঙ্গে ওয়াংকার ওয়াই-এর রেট্রো। মেট্রো-য় প্রতিদিন ৩টি শো, ১৮ অবধি।

রামমোহন
রামমোহন ‘‘একই সঙ্গে ছিলেন প্রকাণ্ড সংস্কৃত পণ্ডিত, ‘জবরদস্ত মৌলবী’, এবং সমকালীন ইউরোপীয় চিন্তাধারার অতি বিশিষ্ট পাঠক”, লিখছেন রমাকান্ত চক্রবর্তী, কোরক রামমোহন রায় সংখ্যায় (সম্পা. তাপস ভৌমিক)। মাত্র দশ বছর পরেই রামমোহনের আড়াইশো বছর পূর্ণ হবে, আজও তাঁকে নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। সংকলনে নবীন-প্রবীণ কলমে আলোচিত হয়েছে তাঁর মনীষার নানা বিচিত্র দিক। যেমন রামমোহন চর্চার সালতামামি (গৌতম নিয়োগী), তাঁর গান (সুধীর চক্রবর্তী), রবীন্দ্রদৃষ্টিতে রামমোহন (পিনাকেশ সরকার), প্রবাসজীবন (দিলীপ সাহা) এবং আরও অনেক নিবন্ধ, পুনর্মুদ্রণ, গ্রন্থসূচি, রামমোহন-বিষয়ক গ্রন্থতালিকা, বিভিন্ন বিশেষ সংখ্যার রচনাপঞ্জি, নানা শিল্পীর দৃষ্টিতে রামমোহন সব মিলিয়ে রামমোহন-আলোচনায় উল্লেখযোগ্য সংযোজন।

বীতশোক
‘এই তো সেদিন সার্ধশতবার্ষিকীর সেমিনারে/ আচমকা দেখা হতেই চর্যাপদ নিয়ে সবিস্তারে/ তর্ক জমে উঠেছিল আমাদের... ’, স্নেহার্ঘ্য লিখেছেন অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত, প্রয়াত বীতশোক ভট্টাচার্যকে (১৯৫১-২০১২) নিয়ে, এবং মুশায়েরা-র (সম্পা: সুবল সামন্ত) ‘বীতশোক ভট্টাচার্য বিশেষ সংখ্যা’য়। প্রবন্ধ রচনায় বিরল গদ্যকার ছিলেন বীতশোক, বিস্তৃত ছিল তাঁর বিষয়ের বিচরণভূমি। শিল্পের নন্দনতত্ত্ব, গ্রামীণ উপকথা, উত্তর আধুনিকতা, ভাষাতত্ত্ব, বিদেশি সাহিত্য, সাহিত্যের গঠনতত্ত্ব ইত্যাদি কোনও বিষয়ই বাদ যেত না তাঁর লেখনী থেকে। লোকনাথ ভট্টাচার্যের রচনাবলিও সম্পাদনা করেন তিনি। লিখতেন কবিতা, কাব্যনাটক, গল্প। অনুবাদও করতেন। তাঁর কিছু রচনা, তাঁকে নিয়ে বেশ কিছু আলোচনা ও স্মৃতিচারণা নিয়েই এ-সংখ্যা, জানানো হয়েছে সম্পাদকীয়তে।

বহুরূপী
‘কবিতাই তাঁকে নাটক লেখার পথে পাঠিয়েছে এই অবিচল ধারণায় কোনো দিন মতান্তর পোষণ করেননি।’ মোহিত চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে বহুরূপী-র সম্পাদকীয়তে জানিয়েছেন প্রভাতকুমার দাস। মোহিত নিজেও বলেছেন ‘কবিতাই আমাকে বলেছে নাটক লিখতে, নাটক আমাকে নাটক লিখতে বলেনি। যদি কিছু স্বাতন্ত্র্য আমার নাটকের মধ্যে ফুটে উঠে থাকে, আমার ধারণা তা আমার কবিতা লেখার চরিত্রের জন্যই।’ প্রয়াত এই মানুষটিকে নিয়েই এ বারের সংখ্যায় বিশেষ ক্রোড়পত্র, ইন্দ্রপ্রমিত রায়ের প্রচ্ছদে। লিখেছেন দিব্যনারায়ণ ভট্টাচার্য শ্যামল ঘোষ বিভাস চক্রবর্তী অশোক মুখোপাধ্যায় দ্বিজেন বন্দ্যোপাধ্যায় দেবাশিস মজুমদার প্রমুখ। অন্যান্য প্রবন্ধের বিষয় দ্বিজেন্দ্রলাল রায় থেকে অবনীন্দ্রনাথ। প্রয়াত সত্যদেব দুবে সম্পর্কে শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রবন্ধটি উল্লেখযোগ্য।

জাদুসম্রাট
গুরু গণপতি চক্রবর্তীর সামান্য শিক্ষা নিয়ে তীব্র অধ্যবসায়ের মাধ্যমে নিজেকে অসামান্য করে তুলেছিলেন প্রতুলচন্দ্র সরকার। বিশ্বের যেখানেই গিয়েছেন, জয় তাঁর সঙ্গে। জাদুকর পি সি সরকারের এ বছর জন্মশতবর্ষ। এই উপলক্ষে গোর্কি সদনে আয়োজিত হয়েছে একটি বিশেষ প্রদর্শনী, ‘হিজ স্টোরি ইজ হিস্টরি’। প্রায় একশো প্যানেলে এখানে প্রদর্শিত হবে বহু দুর্লভ আলোকচিত্র। সঙ্গে ওঁর ব্যবহৃত জাদু সামগ্রী, পোশাক, পুরস্কার এবং পাণ্ডুলিপি। লেখক হিসেবেও তাঁর পরিচয় মিলবে ‘বিচিত্রা’, ‘ভারতবর্ষ’ সহ নানা পত্রিকায় প্রকাশিত লেখা থেকে। থাকবে তাঁর লেখা বইও। পি সি সরকার মেমোরিয়াল কমিটি ও রুশ সংস্কৃতি কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন ৬ নভেম্বর ১২ টায়, চলবে ৮ পর্যন্ত (১২-৬)। পি সি সরকার (জুনিয়র) জানান, বারুইপুরে গড়ে তোলা হবে সংগ্রহালয়। থাকবে তাঁর নামাঙ্কিত আধুনিক স্টুডিয়ো এবং ইন্দ্রলোক জাদুমঞ্চ।


বালুশিল্পী
ছেলেবেলা থেকেই পুরীর সৈকতে খেলার সামগ্রী ছিল সোনালি বালুরাশি। তাই দিয়েই ‘স্যান্ড আর্ট’ তৈরি করে শিল্পী সুদর্শন পট্টনায়ক আজ বিশ্বখ্যাত। জন্ম ১৯৭৭-এ। প্রথম সৃষ্টি মাত্র সাত বছর বয়েসে। ক্রমশ গড়ে তুলেছেন অসামান্য সব ভাস্কর্য। প্রথমে দেবদেবীর মূর্তি, পরে শিল্পীর ভাবনায় প্রতিফলিত হয়েছে দূষণ, এডস, পোলিয়ো বা কোনও সমকালীন বিষয়। ১৯৯৫-তে শুরু ‘সুদর্শন স্যান্ড আর্ট ইনস্টিটিউট’, শিক্ষক হিসেবেও সফল। দেশ-বিদেশে ৫০টিরও বেশি প্রদর্শনীতে যোগ দিয়ে পেয়েছেন সেরার শিরোপা। বালুশিল্পী সুদর্শন এ বার এ শহরে। শনিবার বিড়লা আকাদেমিতে শুরু হল ওঁর প্রদর্শনী ‘ইমাজিনেশনস ইন স্যান্ড’। ভাস্কর্য ছাড়াও থাকছে ক্যানভাসে বালুচিত্র এবং স্যান্ড অ্যানিমেশন-এর কর্মশিবির। প্রদর্শনী ১৮ পর্যন্ত (১৪ ব্যতীত), ৩-৮টা প্রতি দিন। সঙ্গে তাঁর একটি কাজ।

হারানো সুর
যাত্রা দেখে ফাত্রা লোকে! এই ছিল প্রবাদ। অথচ চৈতন্য স্বয়ং যাত্রার মাধ্যমে করেছিলেন প্রচার, অভিনয় করেছিলেন রুক্মিণীর ভূমিকায়। রামকৃষ্ণও শিবের ভূমিকায় অভিনয় করেন। স্বাধীনতা আন্দোলনে বরিশালে গড়ে ওঠে ‘স্বদেশী যাত্রাপার্টি’। চড়া অভিনয়ের আঙ্গিক বদলেছে। খোলা মঞ্চেরও পরিবর্তন। টুকে দেওয়া হচ্ছে হিন্দি বা বাংলা ছবি। নিজস্বতা হারাচ্ছে যাত্রা। প্রবীণ শিল্পী পান্না চক্রবর্তীর অভিনয় দেখে যাত্রার ইতিহাস নিয়ে খোঁজ শুরু করেন পার্থ ভট্টাচার্য। ফলাফল তথ্যচিত্র ‘হারানো সুর’। উঠে এসেছে শিল্পীদের বঞ্চনার কথাও। ৭ নভেম্বর ভারতীয় ভাষা পরিষদে ৩ টেয় দেখানো হবে তথ্যচিত্রটি।

নিসর্গের প্রত্নতত্ত্ব
বিদেশে প্রত্নতত্ত্ব চর্চা অনেক দিনই মাটির তলায় আটকে নেই। এখন নিসর্গও প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণার আওতায়। বিভূতিভূষণের ‘আরণ্যক’-এর নিসর্গ আজ অতীত। এ রকম আরও কত নিসর্গ আমরা হারিয়েছি, তবু এমন বিষয়ে চর্চা এ দেশে আজও অধরা। তবে কলকাতার সেন্টার ফর আর্কিয়োলজিক্যাল স্টাডিজ অ্যান্ড ট্রেনিং, ইস্টার্ন ইন্ডিয়া পিছিয়ে নেই, এ বার তাদের সপ্তদশ বার্ষিক আলোচনাসভার বিষয় ‘এনডিয়োরিং ল্যান্ডস্কেপ্স’ (৫-৭ নভেম্বর, কারেন্সি বিল্ডিংস, ১ বিবাদী বাগ)। প্রতিষ্ঠা দিবসের ভাষণ দেবেন জাতীয় গ্রন্থাগারের মহাধ্যক্ষ স্বপন চক্রবর্তী। প্রত্নবিদ জুলিয়ান টমাস কি ক্যাথলিন মরিসন, ব্রজদুলাল চট্টোপাধ্যায় কি এ পি জামখেড়কর-এর পাশাপাশি চলচ্চিত্রবেত্তা সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, ইংরেজির শিক্ষক শান্তা দত্ত কি ভূগোলবিদ সুনন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি তুলে আনবেন আগ্রহীজনের কাছে।

মুজিবর
রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে বিদেশ ঘুরে এলেন এ শহরের তরুণ পরিচালক মুজিবর রহমান। এডিনবরা, লন্ডন, গ্লাসগো, পূর্ব সাসেক্স। আমন্ত্রণ এসেছিল ও দেশের টেগোর সেন্টারের তরফে। কবির সার্ধশতবর্ষে মুজিবর সৃষ্টি করেছেন নব্বই মিনিটের ছবি ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবন ও সময়’। এ নিয়েই তিনি পাড়ি দিয়েছিলেন সম্প্রতি। এডিনবরা নেপিয়ের ইউনিভার্সিটি, ভারতীয় বিদ্যাভবনের দর্শকরা দেখে গেলেন মুজিবরের রবীন্দ্রনাথ। সঙ্গে অজস্র শুভেচ্ছা ও প্রশংসা। তালিকায় রয়েছেন উইলিয়ম রাদিচে স্বয়ং। মুজিবরের কৃতিত্বে রয়েছে উস্তাদ আল্লারাখা, বিলায়েত খাঁ, কিষেণ মহারাজ, ভীমসেন যোশী, বেগম রোকেয়া, মুন্সি প্রেমচাঁদ, এমন আরও বহু রত্ন চিত্র। রবীন্দ্রনাথের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত পরিচালকের ইচ্ছে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে আরও অনেক কাজ করার। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আগেই হয়েছে, এ বার ও দেশের ‘স্কটিশ ফাউন্ডেশন ফর টেগোর স্টাডিজ’-এর পাঠক্রমে আগামী মাস থেকে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে মুজিবর রহমানের রবীন্দ্রনাথ। সঙ্গের ছবি শেক্সপিয়রের জন্মস্থানে তোলা।

কাস্তে কবি
তিরিশের দশকের শেষ দিকে জাহাজে করে বিদেশ থেকে মার্কস, এঙ্গেলস, র্যালফ ফক্স-এর বই ও সাম্যবাদী পত্রপত্রিকা কলকাতায় আসত। কাব্যপ্রেমী এক তরুণ গোপনে সে সব সংগ্রহ করে পড়তেন। নিজেই এক দিন লিখে ফেললেন, ‘বেয়নেট হোক যত ধারালো/ কাস্তেটা ধার দিও বন্ধু/ শেল আর বোম হোক ভারালো/ কাস্তেটা শান দিও বন্ধু’। ১৯৩৭-এ লেখা কবিতাটি কেউ ছাপতে রাজি হননি। শেষে অরুণ মিত্র উদ্যোগী হয়ে শারদীয় আনন্দবাজারে দিনেশ দাসের ‘কাস্তে’ ছাপান। ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯১৩ চেতলায় কবির জন্ম। চেতলা স্কুল, আশুতোষ ও স্কটিশ চার্চ কলেজে পড়াশুনো। ১৯৪৯ থেকে চেতলা বয়েজ স্কুলে বাংলা বিভাগে শিক্ষকতা। ‘দেশ’ পত্রিকায় ১৯৩৪-এ প্রকাশিত হয় প্রথম কবিতা ‘শ্রাবণে’। ১৯৪২-এ পূর্বাশা থেকে তাঁর প্রথম গ্রন্থ ‘কবিতা’। একাধিক বিদেশি ভাষায় পারদর্শী। অনুবাদ করেছেন আরাগঁ ও হাইনের কবিতা মূল ভাষা থেকে। সহজ সরল মানুষটি কাছ থেকে দেখেছেন সাধারণের জীবনযাত্রা। কবিতায় প্রতিফলিত সেই সব মানুষের জীবনচরিত। ভুখামিছিল, অহল্যা, দিনেশ দাসের শ্রেষ্ঠ কবিতা, কাচের মানুষ, অসংগতি, কাস্তে, রাম গেছে বনবাসে প্রভৃতি স্মরণীয় গ্রন্থ। পেয়েছেন নজরুল পুরস্কার, রবীন্দ্র পুরস্কার। ১৯৮৫-তে কবি প্রয়াত হন। জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে গোপালনগর ৭৮ পল্লি মণ্ডপ সাজিয়েছিল কবির আদি বাসস্থান ও কবিতা অবলম্বনে বিশেষ থিমে, ‘শতবর্ষে দিনেশ দাস, কাশফুল এক রাশ’।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.