নতুন করে পদ সৃষ্টি না করে জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীতে (এনভিএফ) জঙ্গলমহলের যুবকদের নির্বাচন করায় পুরুলিয়ায় অনেকেই কাজ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। শূন্যপদের প্রায় দ্বিগুন সংখ্যক যুবককে এনভিএফ হিসেবে নির্বাচন করায় এই বিপত্তি। অবিলম্বে সকল প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সদস্যকে কাজ দিতে হবে- এই দাবিতে শুক্রবার পুরুলিয়ার জেলাশাসকের অফিসে অবস্থান করলেন তাঁরা। পাশাপাশি এনভিএফে শূন্যপদ সৃষ্টিরও দাবি তুলেছেন তাঁরা। জেলাশাসক মহম্মদ গুলাম আলি আনসারি বলেন, “ওঁদের সকলকে এক সঙ্গে কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। তবে, ওঁদের সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখে জানাব।”
রাজ্য সরকার পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও মেদিনীপুরের জঙ্গলমহল এলাকায় কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে কনস্টেবলের সঙ্গে এনভিএফ নির্বাচন করে। পুরুলিয়া জেলার জঙ্গলমহলের ৮৭৫ জন যুবককে জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নির্বাচন করা হয়। জুন মাসে তাঁদের ৭৫ দিনের প্রশিক্ষণ শেষ হয়। পরবর্তীকালে তাঁদের মধ্যে ৭২ জন পুলিশের চাকরিতে যোগ দেন। বাকি ৮০৩ জনের মধ্যে সবাই কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাজ পাননি। প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলায় এনফিএফের পদ ছিল ৬৫০। ওই পদে ইতিপূর্বে প্রায় ২০০ জন কর্মরত ছিলেন। নতুন প্রশিক্ষণপ্রার্তদের মধ্যে ৪০০-র কিছু বেশি যুবককে কাজ দেওয়া হয়। বাকি প্রায় ৪০০ জন প্রশিক্ষণ নিয়েও কর্মহীন অবস্থায় ছিলেন। |
সেপ্টেম্বর মাসে তাঁরা আন্দোলন শুরু করায় জেলা প্রশাসন নদিয়া জেলায় দু’মাসের জন্য এনভিএফ হিসেবে কাজে পাঠান। কিন্তু নভেম্বর মাসের গোড়াতেই তাঁদের কাজ সেখানে শেষ হয়ে যায়। জেলায় ফিরেই তাঁরা ফের কাজ আন্দোলন শুরু করেছেন।
ওই এনভিএফ কর্মীদের তরফে দশরথ মাহাতোর দাবি, “প্রশাসনের আধিকারিকরা আমাদের বলছেন শূন্য পদ না থাকায় বাকি ৪০০ জনকে এখন কাজ দিতে পারবেন না। কিন্তু নিয়মিত কাজ পাওয়া যাবে, এই ভরসাতেই আমরা পরীক্ষায় বসেছিলাম। সংসার চালাব কী করে?” যতজনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, সকলকেই একই সঙ্গে নিয়োগ করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। সে জন্য তাঁরা নতুন করে পদ সৃষ্টির দাবি তুলেছেন। স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সংগঠনের সভাপতি দেবদাস দুবেও একই কথা বলেছেন। তিনি বলেন, নতুন করে এনভিএফ নির্বাচন করার আগেও এই জেলায় যত পদ ছিল, এখনও তাই রয়েছে। অবিলম্বে পদ সৃষ্টির প্রয়োজন।” তবে প্রশাসনের এক আধিকারিকের দাবি, এনভিএফ কর্মীরা সারা বছর কাজ পান না। সাধারণত বিভিন্ন সরকারি অফিস, আধিকারিকদের বাংলো-সহ কিছু ক্ষেত্রে তাঁদের রক্ষী হিসেবে কাজ দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন মেলা, পুজো প্রভৃতি জায়গাতেও তাঁদের কাজ দেওয়া হয়। পালা করে করে তাঁরা কাজ পান। বাঁকুড়া জেলার এক আধিকারিক জানান, এই জেলার জঙ্গলমহলের ৬৬৬ জন যুবককে এনভিএফের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের সবাই এতদিন কাজ করছিলেন। তবে আজ শনিবার থেকে তাঁদের ৯১ জনকে আপাতত কিছু দিনের জন্য বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। |