এসএসকেএম
ওয়ার্ডে আরশোলার তাণ্ডব
যেন পোড়ার উপরে খাঁড়ার ঘা!
একে পোড়ার অসহ্য জ্বালা। তার উপরে আবার আরশোলা আর ইঁদুরের উৎপাত। এই ত্র্যহস্পর্শে জেরবার রাজ্যের সবচেয়ে নামী সরকারি হাসপাতাল এসএসকেএমের বার্ন ওয়ার্ডের রোগীরা।
এই ইউনিটটিকে রাজ্যের সেরা বার্ন ইউনিটের তকমা দেওয়া হয়। কিন্তু এখানেই এখন ২৪ ঘণ্টা আরশোলার দৌরাত্ম্য! কখনও তারা রোগীর ক্ষতস্থানে হেঁটে বেড়াচ্ছে, কখনও বা ঢুকে পড়ছে ব্যান্ডেজের ফাঁক গলে। বসছে খাবারের থালাতেও। কখনও কখনও আবার উড়ে বেড়াচ্ছে ঘরময়। তাদের সঙ্গে থাকে মূষিক-দলও! এক নার্সের কথায়, “যে ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্নতা বজায় থাকা সবচেয়ে জরুরি, সেখানকার এই হাল!”
রাজ্যে বার্ন ইউনিটের সংখ্যা খুবই কম। স্বাস্থ্যকর্তারা নিজেরাই মানছেন, পিজি-র বার্ন ইউনিটে জায়গা পাওয়া লটারি পাওয়ার সামিল। সেখানে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকলেও রোগীরা নিরুপায়। যেমন দেহের ৪৫ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় তিন হাসপাতাল ঘুরে এসএসকেএমের ওই ইউনিটে জায়গা পেয়েছিলেন এক তরুণী। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, সারতে সময় লাগবে। সেই ‘সময়’ যে মাসের হিসেব পেরিয়ে বছরের কাছাকাছি দাঁড়াবে, তা অবশ্য তাঁরা কল্পনাও করতে পারেননি।
অলঙ্করণ: সুমিত্র বসাক
ডাক্তার-নার্সদের আপ্রাণ চেষ্টা সত্ত্বেও বাদ সেধেছিল আরশোলাকুল। সুপার তমালকান্তি ঘোষ বলেন, “পোকামাকড় মারে যে সংস্থা, তাদের সঙ্গে আমাদের বার্ষিক চুক্তি রয়েছে। তাদের খবর পাঠিয়েছি। আশা করি দ্রুত সমস্যা কমবে।”
কিন্তু আরশোলার উৎপাত তো মাসের পর মাস চলছে, তা মেটানোর ব্যবস্থা এত দিনে হয়নি কেন? সেই প্রশ্নের জবাব কর্তৃপক্ষ দিতে পারেননি। কথা বলেননি সংশ্লিষ্ট পেস্ট কন্ট্রোল সংস্থার কর্তারাও।
বার্ন ইউনিটের এক চিকিৎসক বলেন, “ওয়ার্ডে রোগীর বাড়ির লোকজন ঢুকছেন, খাচ্ছেন। সাফাইকর্মীর সংখ্যা কম বলে ওয়ার্ড নিয়মিত পরিষ্কারও হয় না। আমরা অসহায়ের মতো দেখছি।”
হাসপাতাল সূত্রের খবর, গত তিন মাসে আরশোলার উপদ্রব সংক্রান্ত অন্তত ১০টি অভিযোগ জমা পড়েছে। প্রশাসনিক দফতরের সামনে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন রোগীর পরিজনেরা। কিন্তু তাতে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়নি।
সমস্যা আরও রয়েছে। বিভাগের এক চিকিৎসক বলেন, “শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র প্রায়ই অকেজো থাকছে। পূর্ত দফতরে জানিয়েও ফল হয় না। তাই দরজা-জানলা খোলা থাকে। অবাধে ধুলো-ময়লা ঢোকে।” কর্তৃপক্ষ জানান, যন্ত্র মোটেই অকেজো নয়, পূর্ত দফতরের কর্মীরা মাঝেমধ্যে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রগুলি বন্ধ করে দেওয়াতেই বিপত্তি ঘটছে। কেন বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে যন্ত্র? কোনও জবাব দেননি পূর্ত-কর্মীরা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.