জানাল সিআইডি
ছিনতাইয়ে বাধা দিতে গিয়েই খুন সুপ্তেন্দু
ছিনতাইয়ে বাধা দিতে গিয়েই দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হয়েছিলেন হুগলির বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ-কর্তা সুপ্তেন্দু দত্ত। চার্জশিটে এ কথা জানিয়েছে সিআইডি। ছিনতাইকারীরা সুপ্তেন্দুবাবুর গাড়ির চালক সুশান্ত ঘোষালকেও গুলি করে মেরেছিল। বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে খুনগুলি করে দু’জনের মৃতদেহ-সহ সুপ্তেন্দুবাবুর গাড়িটি প্রায় এক কিলোমিটার চালিয়ে উত্তর বাদরার কাছে নিয়ে গিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। পুলিশকে বিভ্রান্ত করার জন্যই তারা এটা করেছিল। তার পরে তারা গাড়ি থেকে নেমে যায়। তদন্তকারীরা এই বিষয়টিও চার্জশিটে জানিয়েছেন। গত ১৯ অক্টোবর ওই জোড়া খুনের চার্জশিট ব্যারাকপুর আদালতে জমা দিয়েছে সিআইডি।
গত বছর ৮ সেপ্টেম্বর সুপ্তেন্দুবাবু ও তাঁর গাড়ির চালক খুন হন। সিআইডি-র বক্তব্য, সেই রাতে তাঁর কলেজের প্রাক্তন হিসাবরক্ষক অসিত রায়কে দমদমে তাঁর বাড়িতে নামিয়ে চুঁচুড়ায় নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন সুপ্তেন্দু দত্ত। পথে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের একটি জায়গায় তাঁরা গাড়ি থামান। সেই সময়েই বান্টি, জিমি ও বুম্বা নামে তিন দুষ্কৃতী তাঁদের উপর হামলা চালায়। চালক সুশান্তবাবু দুষ্কৃতীদের বাধা দিতে যান। তদন্তকারীদের বক্তব্য অনুযায়ী, তখন সুশান্তবাবুর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি করে বান্টি। চালকের ওই অবস্থা দেখে চিৎকার করে ওঠেন মধ্যবয়সী সুপ্তেন্দুবাবু। তখন জিমি ও বুম্বা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। একটি গুলি লাগে সুপ্তেন্দুবাবুর বুকের বাঁ দিকে। লুটিয়ে পড়েন তিনি।
গোয়েন্দারা জেনেছেন, ওই তিন দুষ্কৃতী গত কয়েক বছর যাবৎ বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে রাতের অন্ধকারে গাড়ি থামিয়ে বেশ কয়েকটি ছিনতাই ও রাহাজানি করেছিল।
তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হলেও সিআইডি এখনও পর্যন্ত সুপ্তেন্দুবাবুর খোয়া যাওয়া ব্রিফকেস ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করতে পারেনি। ওই ব্রিফকেসে জরুরি নথিপত্র ছিল বলে জানিয়েছেন নিহত সুপ্তেন্দুবাবুর স্ত্রী মৌসুমী দত্ত। তাঁর বক্তব্য, “অভিযুক্তরা গ্রেফতার হয়েছে ঠিকই কিন্তু আমার স্বামীর ব্রিফকেস আর মোবাইল ফোন পাওয়া যায়নি। তবে সিআইডি ভাল কাজ করেছে।” ছিনতাই করাই দুষ্কৃতীদের উদ্দেশ্য থাকলেও ওই দু’জনকে মেরে তারা কী কী লুঠ করেছিল, সিআইডি-র চার্জশিটে তার উল্লেখ নেই। তবে বিরাটির শরৎ কলোনিতে তিন দুষ্কৃতীর বাড়ি থেকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছেন গোয়েন্দারা।
সিআইডি-র আগে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশ কিছু দিন এই ঘটনার তদন্ত করেছিল। যে জায়গা থেকে গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ দু’টি উদ্ধার হয়েছিল, সেটি দমদম থানার অন্তর্গত। ঘটনার দু’দিনের মধ্যে পুলিশ সুপ্তেন্দুবাবুর কলেজের প্রাক্তন হিসাবরক্ষক অসিত রায়কে গ্রেফতার করে। কিন্তু তাতে জোড়া খুনের কিনারা হয়নি। গ্রেফতার হওয়ার তিন মাস পরে অসিতবাবু জামিনে মুক্তি পান। সিআইডি-র জমা দেওয়া ৮০ পাতার বেশি ওই চার্জশিটে অভিযুক্ত হিসেবে অসিতবাবুর নাম নেই।
কী ভাবে ওই জোড়া খুনের কিনারা হল? এ বছর অগস্ট মাসে দক্ষিণ বিধাননগর থানার পুলিশ একটি চুরির ঘটনার তদন্তে নেমে বান্টিকে প্রথমে গ্রেফতার করে। তাকে জেরা করে জানা যায়, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের উপর বেশ কয়েকটি অপরাধের ঘটনায় সে ও তার দুই বন্ধু জড়িত। সেই সূত্র ধরেই তার পর গ্রেফতার করা হয় জিমি ও বুম্বাকে। পরে তিন জনকে হেফাজতে নেয় সিআইডি। সিআইডি-র ডিআইজি শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, “সুপ্তেন্দু দত্ত ও তাঁর গাড়ির চালককে হত্যার ঘটনায় তিন জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছি। খুনে ব্যবহৃত তিনটি আগ্নেয়াস্ত্রও উদ্ধার হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.