নিরঞ্জনের ঢাকের আওয়াজের সঙ্গে মিশে গিয়েছে ঈদুজ্জোহার নামাজে সামিল হওয়ার জন্য আজানের আহ্বান।
শনিবার আত্মত্যাগের উৎসব ঈদ-উল-আযহা। যার পোশাকি নাম ঈদুজ্জোহা। ওই উৎসব পালনের জন্য জেলা জুড়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে যেমন তুমুল ব্যস্ততা রয়েছে। অন্য এক ব্যস্ততা রয়েছে ভাগীরথীর বিসর্জনের ঘাটগুলিতে। বৃহস্পতিবার দশমীর পরে সেখানে শুক্রবারও চলেছে শেষ মুহূর্তের প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে। তবে দুর্গাপুজোর সমাপন আর ঈদুজ্জোহা উদযাপনের আগে টেলিফোনে, এসএমএসে, ফেসবুকের পাতায় ‘বিজয়ার শুভেচ্ছা’ ও ‘ঈদ মুবারক’ জানানোর সুযোগ পেয়ে দুই সম্প্রদায়ের মানুষ বেজায় খুশি। এরকম মাহেন্দ্রক্ষণ তো সচরাচর দেখা যায় না! বহরমপুরের পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য বলেন, “আগামী ২৮ অক্টোবর বিসর্জনের শেষ দিন। এদিনও বেশ কয়েকটি পুজো কমিটির প্রতিমা ভাগীরথীতে নিরঞ্জন হয়েছে। তবে শনিবার ঈদুজ্জোহার দিন কোনও প্রতিমা বিসর্জিত হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।” একই কথা বলেন বহরমপুর থানার আইসি মোহায়মেনুল হকও।
মুর্শিদাবাদের যে ঘরের ছেলেরা কর্মসূত্রে বাইরে রয়েছেন, তাঁরা ঈদুজ্জোহার উৎসবে সামিল হওয়ার জন্য বাড়ি ফিরছেন। ওই উপলক্ষে গত কয়েক দিনে বাস-ট্রেনে তিল ধারণের জায়গা নেই। লালগোলাগামী প্রতিটি ট্রেনের কামরায় যাত্রীরা বসার জায়গা না পেয়ে দাঁড়িয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছেন। আসন না পেয়ে বাসের ছাদেও ভিড় উপছে পড়েছে। ঈদুজ্জোহা উপলক্ষে জেলার ২৬টি ব্লকের বেশ কিছু ঈদগাহ সাজানো হয়েছে। সাজানো হয়েছে অনেক পাড়াও।
উৎসবের আগে এদিন সকাল থেকে বহরমপুরের বাজারে কেনাকাটায় ভিড় চোখে পড়েছে। মূলত কাজের জন্য বাইরে ছিলেন, জমানো অর্থে তাঁরা আত্মীয়-প্রিয়জনের জন্য পোশাক কেনাকাটার জন্য বহরমপুরের বাজারে ভিড় করেন। কেননা, কিনে দেওয়া নতুন পোশাক গায়ে দেওয়া ছেলেমেয়ের মুখে হাসি দেখে তাঁরা শরীর-মন থেকে ঝেড়ে ফেলতে চান দৈনন্দিন জীবন যুদ্ধের ক্লান্তি। এদিন যেমন ভগবানগোলার সীমান্ত এলাকা থেকে পেশায় রাজমিস্ত্রি বাবা লিয়াকত শেখের হাত ধরে লালবাগের বাজারে আসা বছর ছয়েকের আদুরি খাতুনের চোখে-মুখেও খুশির জোয়ার। |
ঈদের সাজ। ডোমকল ও করিমপুরে ছবিগুলি তুলেছেন বিশ্বজিৎ রাউত ও কল্লোল প্রামাণিক। |