আমি খেলোয়াড়, রোজ প্র্যাক্টিস করি, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাই, মদ্যপান বা ধূমপানের নেশা নেই। তাই ক্যানসার আমাকে ছুঁতেও পারবে না— এই ধারনাটা আমার মতো অনেক খেলোয়াড়েরই মনের মধ্যে গেঁথে রয়েছে। কিন্তু এ বার বোধহয় সেই ধারণাটা পাল্টানোর সময় এসেছে। প্রথমে আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সতীর্থ যুবরাজ সিংহ এবং সম্প্রতি মার্টিন ক্রো ও টনি গ্রেগের ফুসফুসে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবর শুনে এই ধারণায় ধাক্কা লাগবে না তো কী?
আমি এখনও বাবা হইনি ঠিকই, তবে চার পাশে দাদা, বোনেদের তো দেখছি, ওদের দেখেই বুঝি, সন্তানদের কিছু হলে বাবা-মায়েরা কতটা উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন। যুবরাজের জীবনযুদ্ধের সময় ওর মায়ের অবস্থা কেমন ছিল, তা আন্দাজ করাটাও তাই খুব একটা কঠিন নয়। আশা করি টনি গ্রেগ, মার্টিন ক্রো-রাও যুবির মতোই লড়াই করে ফিরে আসবেন। টনি গ্রেগের খেলা আমি সে রকম দেখিনি। তবে ১৯৯২-এর বিশ্বকাপে টিভিতে ওর ব্যাটিং দেখেছি। ডানকান ফিয়ার্নলে ব্যাট আর ডি বি ড্রট হেডব্যান্ডে রীতিমতো রঙিন চরিত্র। বিশেষ করে ওঁর অফ ড্রাইভ দেখা একটা দারুণ অভিজ্ঞতা। সেই খেলোয়াড়কে ক্যানসারে ভুগতে হচ্ছে শুনে অবাক লাগে বইকী! এ সব দেখে মনে হয়, মৃত্যুর পর দেহদানের অঙ্গীকার করে ভালই করেছি। ১০০ বছর পর কেউ যদি গৌতম গম্ভীরের ফুসফুস নিয়ে বাঁচে, তা হলে তার চেয়ে ভাল আর কী হতে পারে?
দক্ষিণ আফ্রিকার অলরাউন্ডার ডেভ কালাঘান সেই কেপ টাউনেরই মানুষ, যেখানে আমরা এখন আছি। খুব ছোট বয়স থেকেই ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করেছেন ডেভ। এ সব ভাবলে আমাদের হার-জিত, সেঞ্চুরি-ডাক এ সব কেমন যেন মূল্যহীন হয়ে যায়। যদিও দেশের হয়ে মাঠে নামাটা বিশাল ব্যাপার।
তবুও বাস্তবের মাটিতে পা রেখে বলতেই হচ্ছে, চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ পর্যায়ে নামছি আমরা। আগের ম্যাচগুলোতে খুব খারাপ খেলার পর অন্তত শেষ ম্যাচটা আমরা জিতে মাঠ ছাড়তে চাই। সঙ্গে ক্রো-গ্রেগের জন্য প্রার্থনা তো রয়েছেই। |