ওই দেখ, ওটাতেই আছে মনে হচ্ছে।
—নারে, ওইটায়। দেখছিস না, ওটার দরজা খুলতে দেরি হচ্ছে।
এটা-ওটা-সেটা—কীর্ণাহার বাসস্ট্যান্ডের মাঠ তখন বায়ুসেনার তিন কপ্টারের ডানায় ধুলোর আড়ালে। চার দিকে অজস্র ছেঁড়া প্লাস্টিক আর শালপাতার হুটোপুটি। আর বাঁশের ঘেরাটোপের ওপারে, ষষ্ঠীর বিকেল ধোঁয়াশায় ঢেকেছে, কোন কপ্টার থেকে কীর্ণাহারের মাটিতে পা রাখবেন রাষ্ট্রপতি। |
তিন-তিনটে হেলিকপ্টার। নাঃ, এমনটা দেখেনি কীর্ণাহার। মন্ত্রী হওয়ার পরে তাঁর কনভয়ের সঙ্গে পরিচয় রয়েছে বীরভূমের এই খাস মফস্সলের। কিন্তু তার সঙ্গে রাষ্ট্রপতি-আগমনের এমন এলাহি জাঁকের তুলনা হয়?
বাঁশের ব্যারিকেডের ওপারে এ নিয়েই জোর তর্ক। আগের তুলনায় যেমন বেড়েছে ভিড় তেমনই কীর্ণাহারের সেই পরিচিত দলীয় কর্মীদের ভিড়টাও উধাও। তার বদলে রাষ্ট্রপতিকে দেখতে ভেঙে পড়েছে আশপাশের গাঁ-গঞ্জ। শনিবার কীর্ণাহার বাসস্ট্যান্ডে প্রণববাবুর নামার কথা ছিল বেলা তিনটে নাগাদ। দুপুর থেকেই তাই আশপাশের রাস্তাঘাট আর বাসস্ট্যান্ড চলে গিয়েছিল নিরাপত্তাকর্মীদের দখলে। |
দিদির সঙ্গে দেখা সেরে। শনিবার। |
বাঁশের বেড়ার চারদিকে তবু এ-ওকে ঠেলেঠুলে একটু জায়গার খোঁজ। সেই দুপুর থেকে। বিকেল চারটে নাগাদ ছাই রঙা কপ্টার আকাশের কোণে উঁকি মারতেই, “ওই যে, ওই তো!” কিন্তু এ কী? মাটির কাছাকাছি এসেও কপ্টার ফের আকাশমুখো কেন?
চারটে বাজতে বাকি ঠিক সাত মিনিট। প্রথম কপ্টারটি ধুলো উড়িয়ে মাটি ছুঁতেই ও মা, রাষ্ট্রপতি কোথায়? নেমে এলেন জনা কুড়ি নিরাপত্তা কর্মী। ততক্ষণে আকাশে ভেসে এসেছে আরও দুটি কপ্টার। একে একে তারাও নেমে এল। কিন্তু মিরাটির মুখুজ্জে বাড়ির সেই কর্তা কোথায়? কোন কপ্টারে দেশের রাষ্ট্রপতি? প্রায় মিনিট দশেক পরে অবশ্য পরিষ্কার হয় ধন্দটা। তৃতীয় কপ্টার থেকে হাত নেড়ে নেমে আসেন প্রণববাবু। |
কলকাতা বিমানবন্দরে রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার। |
হাত নেড়ে অভিবাদন জানালেন জনতাকে। স্থানীয় মাধপুরের রোশেনারা বিবি কিংবা কীর্ণাহারের ধনপতি দাস উচ্ছ্বসিত। বলছেন, “রাষ্ট্রপতি তো, নেমেই গাড়ি উঠে যাবে ভেবেছিলাম। কিন্তু কীর্ণাহারকে ভোলেননি প্রণববাবু। কেমন ঘুরে ঘুরে হাত নাড়লেন!”
ততক্ষণে তিরিশ গাড়ির কনভয় ছুটেছে পাঁচ কিলোমিটার দূরের মিরাটির দিকে। পথে পরোটা গ্রামে, দিদির বাড়ির সামনে অবশ্য থমকে যায় সে কনভয়। প্রোটোকলের ফাঁস কেটে ভাইয়ের মুখে একটা আনন্দ নাড়ু গুঁজে দেন দিদি অন্নপূর্ণা। নিজের মনেই বলেন, “দিদির হাতে একটা নাড়ু খাবে না, তা কি হয়!”
|
—বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরীর তোলা ছবি। |
বোলপুরে পুজো
নিজস্ব সংবাদদাতা • বোলপুর |
১৭৫ বছরে পড়ল বোলপুরের সর্পলেহনার দে বাড়ির পুজো। দে পরিবারের সদস্য তপনকুমার দে জানান, পুজোর প্রচলন করেন প্রয়াত কেষ্টলাল দে। সনাতনী রীতিতে মাসকলাই বলিদান প্রথা আজও হয় এখানে। দশমীতে প্রতিমা বিসর্জন করা হয় কোপাই নদীতে। |