|
|
|
|
অসম |
অনুপ্রবেশ সমস্যা নিয়ে শ্বেতপত্র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
অনুপ্রবেশ নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করল অসম সরকার। মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ শ্বেতপত্র প্রকাশ করে বলেন, “আগের তুলনায় এখন অনুপ্রবেশ সমস্যা অনেকটাই কম। বিদেশি প্রসঙ্গ নিয়ে অগপ বা বিজেপি বাড়াবাড়ি করছে। অসমের ক্ষেত্রে বেকারত্ব, অনগ্রসরতা এর চেয়ে অনেক বড় সমস্যা হয়ে আছে।”
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সীমান্ত সিল করার কাজে অসম অনেকটাই এগিয়ে। শ্বেতপত্র অনুযায়ী, ১৯৪১ ও ১৯৫১ সালে, ব্যাপক হারে পূর্ববঙ্গের মানুষ অসমে প্রবেশ করায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২০.৪% ও ১৯.৯% হয়ে গিয়েছিল। যা জাতীয় গড়ের তুলনায় অনেকটাই বেশি। ১৯৬১ ও ১৯৭১ সালে একই কারণে তা ৩৫ শতাংশে পৌঁছয়। কিন্তু এই সময়ে যাঁরা এসেছিলেন তাঁরা কেউই অনুপ্রবেশকারী ছিলেন না। তাঁরা ছিলেন শরণার্থী, তাঁদের আশ্রিতের মর্যাদা দেওয়া হয়। সেই কারণে, আইএমডিটি আইনে এ সংক্রান্ত ট্রাইবুনাল যে ৬১৭৭৪ জনকে বিদেশি হিসাবে চিহ্নিত করেছে, তাদের মধ্যে কেবল মাত্র যাঁরা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পরে অসমে ঢুকেছেন, তাঁদের অসম থেকে বের করে দেওয়া যাবে। শ্বেতপত্র অনুযায়ী এই সংখ্যাটি ২৯২৩৭ জন। এদের মধ্যে ২৪৪২ জনকে ইতিমধ্যেই সীমান্ত পার করিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ‘ডি-ভোটার’ বা সন্দেহজনক ভোটার প্রসঙ্গে শ্বেতপত্র বলছে, ১৯৯৮ থেকে ২০১২ সালের এপ্রিল মাস অবধি মোট ২৩১৬৫৭ জনের ক্ষেত্রে আদালত ৪৪২২০ জনকে ভারতীয় ও ৬৫৯০ জনকে ‘ডি-ভোটার’ হিসাবে রায় দিয়েছে। এখনও ১৪৩৪৫৬ জনের ভাগ্য ঝুলে আছে। বাকি সব অভিযোগ খারিজ হয়ে গিয়েছে।
গগৈ বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে অনুপ্রবেশকারী প্রত্যার্পণ নিয়ে ভারত সরকারের সাফ চুক্তি হওয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বা প্রশাসন অনুপ্রেবেশকারীদের ফেরত নিতে বা তাদের স্বীকার করতে চান না।” গগৈ জানান, ১৯৯১ সালে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ২৪.২ শতাংশ। এরপর সরকার ব্যবস্থা নেওয়ায়, ২০০১ থেকে ২০১১ সাল অবধি জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার দাঁড়ায় ১৮.৯% থেকে ১৬.৯%। তুলনায় দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১৭.৬ শতাংশ। এটা স্বাভাবিক বৃদ্ধি। শ্বেতপত্র অনুযায়ী, সীমান্ত বন্ধ করার ক্ষেত্রে অসম প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায় মিলিয়ে ২২৪.৬৯ কিলোমিটারের মধ্যে ২১৮.১৭ কিলোমিটার অর্থাৎ ৯৭ শতাংশ কাজ সেরে ফেলেছে। অসম-বাংলাদেশ সীমান্তে আর মাত্র ৬৩.৭৯ কিলোমিটার জমিতে বেড়া বসাবার কাজ বাকি, এর মধ্যে ৪৪.২৩ কিলোমিটার জলভাগ।
গগৈয়ের মতে, রাজ্যে মুসলিম জনসংখ্যার বৃদ্ধির জন্য অনুপ্রবেশ দায়ী নয়। শ্বেতপত্র অনুযায়ী, ১৯৫১ সালে রাজ্যে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ২৪.৬৮ শতাংশ। ১৯৭১ সালে তা ছিল ২৪.৫৬ শতাংশ। ২০০১ সালে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ৩০.৯২ শতাংশ। রাজ্যে হিন্দু ও মুসলিম জনসংখ্যার অনুপাত এখন ৬৪.৮৯ ঃ ৩০.৯২।
|
|
|
|
|
|