বলিউডের অন্যতম ‘বিগ ফ্যাট’ বিয়ে তো বটেই!
ঐশ্বর্যা-অভিষেকের বিয়ের পর এত হইচই, এত জল্পনা আর কোনও বিয়ে নিয়ে হয়নি। সইফ দোজবর হয়েই অনেককে টেক্কা দিলেন! মঙ্গলবার বান্দ্রার বাড়িতে রেজিস্ট্রি হয়ে যাওয়ার পরে করিনা কপূরও পটৌডি পরিবারের ছোটি বেগম হলেন!
সইফ-অমৃতার বিয়ে যখন হয়েছিল, তখন সইফ শুধু পটৌডি-শর্মিলার ছেলে বলেই খ্যাত। নিজে তেমন কিছু করে উঠতে পারেননি তখনও। অমৃতা নায়িকা হলেও পয়লা সারির ছিলেন না কোনও দিনই। সেই তুলনায় আজকের সইফ-করিনা বিয়ে কিন্তু তাঁদের নিজেদের ওজনেই অনেক বেশি হেভিওয়েট!
মঙ্গলবার সকালেই সইফ-করিনার রেজিস্ট্রি হল। সাক্ষী হিসেবে থাকলেন শর্মিলা ঠাকুর, রণধীর কপূর আর ববিতা। উপস্থিত ছিলেন করিশমাও। সইফ সই করেছেন ছোটবেলার নাম, ‘সাজিদ আলি খান’ হিসেবে। বয়স, ৪২। করিনার বয়স লেখা আছে, ৩১। তবে রেজিস্ট্রি নোটিস দেওয়ার পরেই তাঁর জন্মদিন ছিল। ফলে এমনিতে তিনি এখন ৩২। রাতে তাজে রিসেপশন ছিল। আর সেখানে নবদম্পতিকে শুভেচ্ছা জানাতে হাজির ছিলেন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই। এসেছিলেন শশী কপূর, রতন টাটা। রণবীর কপূর, সুভাষ ঘাই, প্রীতি জিন্টা, সকন্যা অনিল কপূর, শাহরুখের স্ত্রী গৌরীও তাড়াতাড়িই চলে এসেছিলেন। |
তবে রেজিস্ট্রির দিনে সবচেয়ে বড় চমকটা আসে করিনার প্রাক্তন প্রেমিক শাহিদ কপূরের কাছ থেকে। রীতিমতো আনুষ্ঠানিক ভাবে সইফিনা এবং তাঁদের পরিবারকে নিজের তরফে শুভেচ্ছা জানালেন তিনি। বললেন, “ববিতা আন্টি আর রণধীর আঙ্কলকে অনেক দিন ধরে চিনি। মেয়ের বিয়ে একটা বিশাল ব্যাপার। করিনা আর সইফ, দু’জনকেই আমি শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আশা করব, বিয়ের পরেও অভিনয়টা চালিয়ে যাবে করিনা। এই মুহূর্তে ও ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম সেরা অভিনেত্রী।” বিয়েতে তিনি কি আমন্ত্রিত? এই প্রশ্নটা পাশ কাটিয়ে গিয়েছেন শাহিদ। টুইট করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন শাহরুখ খান।
সইফ-করিনা রেজিস্ট্রি বিয়ে চেয়েছিলেন। সেই মোতাবেক বিয়ে মিটেও গেল। বাকি থাকল নিকাহ। তার পরই ‘গ্র্যান্ড রিসেপশন’ বা দাওয়াত-এ-ওয়ালিমা। ১৮ অক্টোবরের সেই রাজকীয় আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন শর্মিলা। আমন্ত্রণ জানাতে গিয়েছেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছেও। শর্মিলার নিজের বিয়েতে হাজির ছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জাকির হোসেন। কিন্তু শর্মিলার ছেলের বিয়েতে উপস্থিত থাকতে পারবেন না প্রণব। সে দিন সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে তাঁর অন্য কর্মসূচি রয়েছে। তবে ১৮ তারিখ প্রণববাবুর শুভেচ্ছা-বার্তা পৌঁছে দিয়ে যাবেন তাঁর এডিসি। |
তবে প্রথম সারির অনেক কংগ্রেস নেতাই ও দিন থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে। শর্মিলার সঙ্গে কংগ্রেসের সম্পর্ক বরাবরই ভাল। সম্পর্ক ভাল খোদ সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে। যদিও দেশীয় রাজাদের অনুদান ব্যবস্থা (প্রিভি পার্স) ভেঙে দেওয়ার বিরুদ্ধে নিজের অসন্তোষ গোপন রাখেননি মনসুর আলি খান। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ভোটেও দাঁড়িয়েছিলেন, জিততে পারেননি। সম্পর্ক আরও খারাপের দিকে যায়, যখন দুপ্লে রোডের বাসভবন নিয়ে বিতর্কে সরকারি সম্পত্তি ব্যবহারের অভিযোগে মনসুরের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা হয়। অরুণ জেটলি তখন মনসুরের হয়ে মামলা লড়ার আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। শেষমেশ পটৌডি দম্পতি নিজেদের অধিকার নিয়ে আর লড়েননি। দিল্লির বসন্ত বিহারের বাড়িতেই থাকতে শুরু করেন ওঁরা। কিন্তু এত কিছুর মধ্যেও শর্মিলা কংগ্রেসের সঙ্গে সুসম্পর্কই বজায় রেখে গিয়েছেন। সেন্সর বোর্ডের প্রধানও হয়েছিলেন তিনি।
বিয়ের অনুষ্ঠান মিটে গেলেই শর্মিলা চলে যাবেন বিলেতের বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্মানিক ডক্টরেট নিতে। পরিচালক সঙ্গীতা দত্ত শর্মিলা আর সোহাকে নিয়ে ‘লাইফ গোজ অন’ বলে একটি ছবি বানিয়েছিলেন। সেই সঙ্গীতার সঙ্গে একটি কথোপকথন-অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন শর্মিলা। সঙ্গীতা সেই দিকেই তাকিয়ে আছেন। “শর্মিলাজি এত ডিসিপ্লিনড, সেটাই হয়তো ওঁর সিক্রেট। দেখছেন তো, কেমন একা হাতে বিয়ের ব্যাপারটা সামলাচ্ছেন তিনি।”
|