পুজোর মুখে জোড়া নিম্নচাপে আশঙ্কার মেঘ
পুজোর মুখে দুঃসংবাদ!
বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে একটি নিম্নচাপ। ওড়িশার দিকে ওই নিম্নচাপের সরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও তাতে দুশ্চিন্তা কাটছে না। কারণ, পিছনে ধাওয়া করে আসছে আরও একটি নিম্নচাপ। এবং সেটির গতিপ্রকৃতি শেষ পর্যন্ত কী হবে, আবহবিদেরা আপাতত তা বলতে পারছেন না। সব মিলিয়ে তাঁদের পূর্বাভাস, বৃষ্টি এখনই ছাড়ছে না দক্ষিণবঙ্গকে। জোড়া নিম্নচাপের হুঙ্কারে প্রমাদ গুনছে পুজো কমিটি।
সাধারণ ভাবে এটা বর্ষা-বিদায়ের পর্ব। উত্তর ও পশ্চিম ভারত এবং মধ্য ভারতের কিছু অঞ্চল থেকে বর্ষা ইতিমধ্যে বিদায়ও নিয়েছে। এটা পশ্চিমবঙ্গ থেকেও বর্ষা-বিদায়ের ইঙ্গিত কি না, তা নিয়ে আলোচনা শুরু করে দিয়েছিলেন আবহবিদদের একাংশ। কিন্তু চলতি মরসুমের সূচনা থেকে মৌসুমি বায়ু যে-খামখেয়ালিপনা দেখিয়ে চলেছে, তার রেশ শেষ বেলাতেও। ভঙ্গিটা অনেকটা ‘যেতে পারি, কিন্তু কেন যাবো’ গোছের। গত সপ্তাহে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপরে তৈরি হওয়া একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা বর্ষার বিদায়ের পথে প্রাচীর তুলে দাঁড়িয়ে ছিল। তখনই বোঝা
গিয়েছিল, স্বাভাবিক সময়ে বর্ষা-বিদায় এ বার অন্তত সম্ভব নয়। তার পরে বঙ্গোপসাগরের বায়ুপ্রবাহ জানিয়ে দিল, জোড়া নিম্নচাপের ধাক্কায় বর্ষা আরও কিছু দিন থেকেই যাবে দক্ষিণবঙ্গে।
আসলে নিয়মমতে চলার ইচ্ছে যে তার বিশেষ নেই, গত ১০ বছর ধরেই তা বুঝিয়ে দিচ্ছে বর্ষা। ১০ বছরের আবহাওয়া-ক্যালেন্ডার বলছে, মৌসুমি বায়ু জুন, জুলাই, অগস্টে বৃষ্টি যেমন দেওয়ার দিচ্ছে। কখনও কম, কখনও বেশি। কিন্তু বৃষ্টি বাড়ছে সেপ্টেম্বরে। আর পুজো এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরির হিড়িক পড়ে যাচ্ছে। শরতের আকাশে পেঁজা তুলোর মতো মেঘ নেই। আকাশের মুখভার। সূর্যের দেখা নেই।
এ বারেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। মরসুমের প্রথম দিকে প্রায় চুপ মেরে গিয়ে দক্ষিণবঙ্গকে বৃষ্টি-ঘাটতির মুখে ফেলে দিয়েছিল মৌসুমি বায়ু। পরে তেড়েফুঁড়ে ব্যাট চালিয়ে ঘাটতি অনেকটা পুষিয়ে দিয়েছে। এ বছর পুজো অনেকটাই পরে পড়েছে। তা সত্ত্বেও গত প্রায় ১০ বছরের ধারা মেনে চোখরাঙানি কমছে না বর্ষার। রবিবার সারা দিনে সূর্যের মুখ দেখেনি কলকাতা। মাঝেমধ্যে বয়ে গিয়েছে দক্ষিণ দিক থেকে আসা বাতাস। সেই বাতাসে শিউলি নয়, বৃষ্টির গন্ধ। পুজোর উদ্বিগ্ন উদ্যোক্তারা বারবার ফোন করছেন আলিপুর আবহাওয়া দফতরে। তাঁদের প্রশ্ন একটাই, প্রস্তুতির চূড়ান্ত পর্যায়ে নিম্নচাপের বৃষ্টি সব ভেস্তে দেবে না তো?
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ জানান, শনিবার থেকেই বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হচ্ছিল। রবিবার সেটি পূর্ণতা পেয়েছে। ওই নিম্নচাপের ফলে প্রচুর জলীয় বাষ্প ঢুকছে পরিমণ্ডলে। তৈরি হয়েছে মেঘ। তবে ওই নিম্নচাপ থেকে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের তেমন কোনও আশঙ্কা এই মুহূর্তে নেই। কারণ সে সরে যাচ্ছে ওড়িশার দিকে। ওই নিম্নচাপের ফলে কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায় হাল্কা বৃষ্টি হতে পারে। বেশি বৃষ্টি হবে দুই মেদিনীপুর ও হাওড়ায়।
কলকাতার পুজো-প্রস্তুতি ওই নিম্নচাপের হাত থেকে কোনও ভাবে রক্ষা পেলেও বঙ্গোপসাগরে দানা বাঁধতে থাকা অন্য একটি নিম্নচাপ নিয়ে ভীষণ সংশয়ে আছেন আবহবিদেরা। বঙ্গোপসাগরে বায়ুপ্রবাহ কেমন থাকে, তার উপরেই নির্ভর করছে দ্বিতীয় নিম্নচাপটির ভবিষ্যৎ। গোকুলবাবু জানান, আগামী কয়েক দিন আকাশ মেঘলা থাকবে। কমবেশি বৃষ্টিও হবে। কিন্তু পুজোর ক’দিন আবহাওয়া কেমন থাকবে, সেই ব্যাপারে এখনই কোনও পূর্বাভাস দিচ্ছে না আলিপুর আবহাওয়া দফতর। এক আবহবিদের পরিসংখ্যান বলছে, গত ১০ বছরের মধ্যে সাত বারই পুজোর ঠিক মুখে নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে বঙ্গোপসাগরে। তবে কোনও বারই তা পুজোকে পুরোপুরি ভাসিয়ে দিতে পারেনি। পুজোর দিনগুলিতে দুপুরে বা রাতে কয়েক পশলা বৃষ্টি হয়েছে মাত্র। এ বারেও পুজোর ক’দিন আবহাওয়া যাতে অসুরের ভূমিকা না-নেয়, সেই প্রার্থনা শুরু করে দিয়েছেন উদ্যোক্তারা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.