ভোটের মুখে সিপিএম নেতা খুনে আটক ৪
বগ্রামে সিপিএম নেতা খুনের ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার জনকে আটক করেছে। শনিবার রাতে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন সিপিএমের শিবপুর লোকাল কমিটির সদস্য আবদুল হামিদ (৪৫)। এর পাশাপাশি তিনি ডিওয়াইএফআই-এর শিবপুর লোকাল কমিটির সম্পাদকও ছিলেন। বাড়ি নবগ্রাম থানার শিবপুর পঞ্চায়েতের মুকুন্দপুরে। যদিও গত ছ’বছর ধরে তিনি বহরমপুরের বাসিন্দা। জঙ্গিপুর লোকসভা উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর হয়ে মুকুন্দপুরে প্রচার সেরে নিমতলা মোড়ের কাছে একটি দোকানে ভোটার তালিকা জেরক্স করছিলেন। সেই সময়ে দুষ্কৃতীরা খুব কাছ থেকে তাঁকে গুলি করে। পরে এলোপাথাড়ি ভাবে কোপায়। ঘটনাস্থলেই মারা যান ওই সিপিএম নেতা। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “ওই খুনের ঘটনায় চার জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। খুনের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। ঘটনার তদন্ত চলছে।”
এদিকে ওই খুনের ঘটনার জেরে রবিবার ১২ ঘন্টার নবগ্রাম বিধানসভা বন্ধের ডাক দেয় সিপিএম। এদিন সকালে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কও অবরোধ করে তারা। বন্ধের সমর্থনে এলাকায় মিছিলও বের হয়। ওই সিপিএম নেতা স্থানীয় বহড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। এলাকার বিধায়ক সিপিএমের কানাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “এলাকায় সমাজসেবী হিসেবেও তিনি পরিচিত ছিলেন। কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আমাদের ওই নেতাকে খুন করেছে। খুনীদের গ্রেফতারের দাবিতে এদিন বন্ধ পালিত হয়েছে। বনধে সাড়াও মিলেছে ভাল।”
ময়নাতদন্তের পরে এদিন বিকেলে মৃতদেহ বহরমপুরের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামের বাড়ি মুকুন্দপুরে। সিপিএমের ওই নেতাকে দেখার জন্য কয়েক হাজার মানুষ গ্রামের বাড়িতে ভিড় করেন। সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য বলেন, “উপনির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় আশঙ্কা করেই খুন-সন্ত্রাসের রাজনীতি শুরু করেছে কংগ্রেস। উপনির্বাচনে দিশেহারা কংগ্রেস ওই খুনের ঘটনা ঘটিয়ছে।”
পাল্টা জেলা কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, “জঙ্গিপুর লোকসভা এলাকা ঘুরলেই টের পাওয়া যায় দিশেহারা কারা, সিপিএম নাকি কংগ্রেস! তদন্ত করলেই খুনের প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তিন পুরুষের পারিবারিক বিবাদের জেরেই ওই খুন। এতে কংগ্রেস কোনও ভাবেই জড়িত নয়। আর নবগ্রামে খুনের রাজনীতি কারা আমদানি করেছে, তা এলাকার মানুষ ভালই জানেন।”
শিবপুর পঞ্চায়েত অবশ্য বামফ্রন্টের দখলে রয়েছে। ১৩ আসনের ওই পঞ্চায়েতে ৭ জন সিপিএম, ১ জন আরএসপি এবং ৫ জন কংগ্রেসের সদস্য রয়েছেন। খুনের ঘটনার পরে আবদুল হামিদের স্ত্রী স্থানীয় মুকুন্দপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ফিরোজা পারভিন নবগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। বিধায়ক কানাই মণ্ডল বলেন, “প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে বিষয়টি জানার পরেই ১৮-১৯ জনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।” যদিও প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান দুষ্কৃতীরা সংখ্যায় ৮-১০ জন ছিল। তারা ঝুনকা নালা পেরিয়ে মুকুন্দপুর গ্রামের নিমতলা মোড়ে পৌঁছায় এবং খুব কাছ থেকে ওই সিপিএম নেতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। দোকানের সামনেই মাটিতে লুটিয়ে পড়লে দুষ্কৃতীরা মৃত্যু নিশ্চিত করতে পাশলি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাথাড়ি কোপ মারে। ঘটনাস্থলেই মারা যান ওই সিপিএম নেতা।
বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু এই দিন কলকাতায় বলেন, “যে এলাকায় কমরেড হামিদ শেখ খুন হয়েছেন তা উপনির্বাচন উপলক্ষে অতি উত্তেজনাপ্রবণ বলে ঘোষনা করেছিল নির্বাচন কমিশন। কংগ্রেসের দুর্বৃত্তরা এরপরেও যেভাবে এই হত্যাকান্ড সংগঠিত করল তাতে পুলিশ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। রাজ্যের সামগ্রিক আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থারও অবনতি ঘটেছে। রাজ্যে তৃণমূল জোটের সরকার তৈরি হওয়ার পর তৃণমূল কংগ্রেস ও কংগ্রেসের হাতে বামফ্রন্টের ৮১ জন কর্মী, সমর্থক, ও নেতা খুন হয়েছেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.