‘নৃশংস’ মানুষ, ঘোর বিড়ম্বনায় বন বিভাগ
তেড়ে আসা বুনো মোষকে বাগে আনতে না পেরে, গলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হল জ্বলন্ত টায়ার। যন্ত্রণায় গর্তে গিয়ে পড়ল মোষ। মারাও গেল। গত কাল কাজিরাঙার জখম দুই গন্ডারের মৃত্যুর পরে, আজ ফের এই ঘটনা ঘটল। সেই সঙ্গে একটি গন্ডারের দেহ ভেসে এল বাগোরি রেঞ্জে। অন্য দিকে, কোহরা রেঞ্জের হাতিকুলিতে কালভার্টের তলায় আটকে পড়া গন্ডারকে উদ্ধারের জন্য দিনভর চেষ্টা চালালেন বনকর্মী, দমকলকর্মীরা।
কাজিরাঙায় গন্ডারের দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছে বন দফতরের হস্তি-বাহিনী।
মোট কথায় কাজিরাঙা ও আশপাশে বন্য প্রাণীদের উপর স্থানীয় মানুষের অত্যাচার অব্যাহত।
সিবিআইয়ের তদন্তকারী দল কাজিরাঙায় তিন বছরের গন্ডার নিধন পর্ব নিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন। আজ দিল্লি থেকে ওয়াইল্ডলাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরোর সদস্যরাও গন্ডার মৃত্যুর ঘটনা খতিয়ে দেখতে কাজিরাঙায় আসে।
দলে রয়েছেন সি বেহেরা, এ কে ঝা, এল কুরুভিল্লা, কে কে শর্মা। তাঁদের উপস্থিতিতেই বাগোরি রেঞ্জে একটি গন্ডারের দেহ মেলে। তবে বন দফতরের দাবি, গন্ডারটি জলে ডুবে মারা গিয়েছে। তার খড়্গটিও বনরক্ষীরা কেটে নিয়েছে। অন্য দিকে, আজ আরও একটি গন্ডার জঙ্গল থেকে বের হয়ে, গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে কোহরা রেঞ্জের হাতিকুলি চা-বাগানের একটি কালভার্টের নীচে ঢুকে পড়ে। তাকে উদ্ধার করতে এসে পশু উদ্ধার কেন্দ্রের চিকিৎসকরা জনরোষে ফিরে যেতে বাধ্য হন।
শিবসাগর জেলা থেকে শনিবার দু’টি চিতাবাঘের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করে বন দফতর।
আজ ভোরে নিখোঁজ গবাদি পশুর সন্ধানে গ্রামবাসীরা জঙ্গলে গেলে চিতাবাঘের বাচ্চা দু’টি মুখোমুখি
পড়লে তাদের হত্যা করে গ্রামবাসীরা। ছবিতে শাবক দু’টিকে নিয়ে ‘উল্লসিত’ গ্রামবাসীরা।
বনরক্ষীদের অভিযোগ, পুলিশের সামনেই উত্তেজিত জনতা কোহরার রেঞ্জ অফিসে তালা মেরে দেয়। আজও তাঁদের উদ্ধার কাজে বাধা দেওয়া হয়। ফরেস্টার রূপক ভুঁইয়া বলেন, “জখম গন্ডারটিকে জনতা কালভার্টের নীচে মারতে থাকে। গত দু’দিন জখম গন্ডারদের চিকিৎসা চালাতে গিয়ে স্থানীয় মানুষের অত্যাচারে বনরক্ষী ও চিকিৎসকদের সমস্যায় পড়েন। আজ বনকর্মী ও চিকিৎসকদের এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এমন চললে কাজিরাঙায় কাজ করাই সমস্যার হয়ে উঠবে।’’ গন্ডার উদ্ধারে দমকলেরও সাহায্য নেওয়া হয়। তাতেও কাজ হয়নি। আনা হয় রাস্তা তৈরির জেসিবি মেশিন। সন্ধায় তাকে বের করা হয়। কোহরা রেঞ্জে আজই একটি বুনো মোষ গ্রামবাসীদের তাড়া করলে গাছের উপর থেকে তার গলায় জ্বলন্ত টায়ার পড়িয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। ওই অবস্থায় গর্তে পড়ে গিয়ে মারা যায় বুনো মোষটি।
এই পরিস্থিতিতে কাজিরাঙা-সহ রাজ্যের অন্য জাতীয় উদ্যানকে বাঁচাতে বিশেষ প্রাণী সুরক্ষা বাহিনী বা অ্যানিম্যাল ডিফেন্স ফোর্স গড়ার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার।

ছবি: উজ্জ্বল দেব


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.