পুস্তক পরিচয় ৪...
বইবাজার, খেপ এবং আক্ষেপ
‘পঞ্চান্ন, আটষট্টি, বাহাত্তর, পঁচিশ...’ চারপায়ীর উপর মুদিত লোচনে মার্জারীর কথা ভাবিতেছিলাম। শরতেও দারুণ দহনজ্বালায় নিদ্রা আসিতেছিল না। আফিমেরও বড়ই আকাল। তাই কিঞ্চিৎ চিন্তাবিলাস করিতেছিলাম। হেনকালে উপরোক্ত সংখ্যা-কয়টি বলিতে বলিতে মার্জারীর প্রবেশ। কী মুশকিল, নামতা পড়িতেছে নাকি? প্রশ্ন করিতে মুচকি হাসিয়া বলিল, ‘নামতা নহে, প্রকাশিতব্যের সংখ্যা। আগামী বইমেলায় কোন প্রকাশকের প্রকাশিতব্য গ্রন্থসংখ্যা কত তাহাই হিসাব করিতেছিলাম।’ তাহাতে লাভ? ‘লাভ প্রথমত, আগামী বৎসর তোমরা যাহাকে বইবাজার বল সেই সাহিত্যের গুদাম সাবাড় সেলটি কেমন জমিবে তাহার আন্দাজ পাওয়া। দ্বিতীয়ত, কত বৃক্ষ বইমেলা তথা বৃক্ষসূয় যজ্ঞে কাটা পড়িয়াছে তাহারও আভাস।’ বুঝিলাম প্রসন্নর দুগ্ধে জল কমিয়াছে, নহিলে মার্জারী এমন চিন্তাশীল কেন? নীরবতাই শ্রেয় মনে করিলাম। সত্যই ত, বৎসরের পরে বৎসর এত গ্রন্থ প্রকাশিত হয়, প্রকাশকের ঘর কালো করিয়া বসিয়া থাকে এবং বৎসরান্তে অতি স্বল্প লক্ষ্মীর বিনিময়ে বিদেয় হয়। কেন? লে লে বাবু ছে আনা ধাঁচে যাহাদের বিদায় করিতে হয় তাহাদের না-ছাপিলেই বা ক্ষতি কী হইত? একটি অবশ্য হইত। বুঝাইয়া বলি। বইপাড়ার অধিকাংশ এখন চলে খেপ এবং আক্ষেপের আবর্তনে। ‘খেপ’ অর্থে নীরব কবিকে (‘কবি’ প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্যতত্ত্বের অর্থে, অর্থাৎ শুধু কবিতালেখক নন) উপযুক্ত মূল্যে সরব করা। ‘আক্ষেপ’ অর্থে উত্তম গ্রন্থ বিক্রি হইতেছে না বলিয়া বিলাপ। আক্ষেপে ক্ষতি না হইলেও খেপে হইত। কথাটি মার্জারীকে বলিতে গিয়া দেখি সে মৎ-চারপায়ী-নিম্নে উপহৃত গ্রন্থ-থাকে নিশ্চিন্তে নিদ্রা গিয়াছে!


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.