খেলা
অনাদরের আঙিনা
য়স পঞ্চাশ ছুঁইছুঁই। কোথাও হাঁটু সমান ঘাস। কোথাও জল কাদায় গোড়ালি ডুবে যায়। কোথাও ফুটে আছে কাশফুল। যত্রতত্র ঘুরে বেড়ায় গরু, ছাগল। এর মধ্যেই জনা কুড়ি ছেলেমেয়েকে নিয়ে অনুশীলন চলছে। এই অবস্থা হাওড়া জেলার অ্যাথলেটিক্স-এর আঁতুড় ডুমুরজলার ক্রীড়া প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের।
প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সূত্রে খবর, ১৯৬৩ তে ১০-১২ জন ছেলেমেয়েকে নিয়ে বাসুদেব ধাড়া ও সুনীল দেয়াশি এই মাঠে কেন্দ্রটি শুরু করেন। বছর চারেকের মধ্যেই জেলা এবং স্কুলস্তর থেকে সাফল্য আসতে শুরু করে। এখান থেকেই উঠে এসেছেন অনুরাধা দাস, উমা দে, রুমা পাল, রুমা হাজরা, সুজাতা আদক, তন্দ্রা বসু, মালা দত্ত, তনুশ্রী মুখোপাধ্যায়, বুদ্ধদেব ধাড়া, রামপ্রসাদ আটা, প্রশান্ত হাজরা, শিশির হাজরা, কালীপদ ভৌমিকদের মতো অ্যাথলেট।
প্রাক্তন অ্যাথলেট গান্ধী আদক জানান, তখন হাওড়ায় অ্যাথলেটিক্স চর্চার সুসময়। নয়ের দশক থেকে অবনতি শুরু হয়। বিগত কয়েক বছরে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিটে কোনও বড় ধরনের সাফল্য আসেনি। উৎসাহেও ভাটার টান। হাওড়া ক্রীড়া প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের বর্তমান কোচ কেষ্ট হাজরার আক্ষেপ, “এখন অ্যাথলেটিক্স-এ ছেলেমেয়েরা খুব একটা আসছে না।”
ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
অভিযোগ, অনুশীলনের জন্য এই মাঠ একেবারেই উপযুক্ত নয়। অন্যান্য পরিকাঠামোরও অভাব রয়েছে। এ বার রাজ্য জুনিয়র অ্যাথলেটিক্স-এ অংশগ্রহণকারী দেবপ্রিয়া নন্দীর কথায়: “কোনও ছাউনির ব্যবস্থা নেই। অ্যাথলেটিক্স-এর জন্য জিম অপরিহার্য। তাও নেই। মাঠে বড় বড় ঘাস। দৌড়াতে খুবই অসুবিধা হয়। তা ছাড়া মেয়েদের পোশাক বদলের জায়গাও নেই।”
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক অ্যাথলেটিক্স সেন্টারের এক কর্তা বলেন, “অনাদরে পড়ে থাকা এই কেন্দ্রটির উন্নতির অনেক জায়গায় আবেদন করেছিলাম। শুধু প্রতিশ্রুতিই পেয়েছি। দরিদ্র ঘরের ছেলেমেয়েরাই অনুশীলনে আসে। চাঁদা বাড়ালে অনুশীলনে আসাই বন্ধ করে দেবে।” কিছু দিন আগে কৃষি বিপণনমন্ত্রী অরূপ রায় এবং ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র এসেছিলেন। ক্রীড়ামন্ত্রী বলেন, “এটি জেলার পুরনো অ্যাথলেটিক্স সেন্টার। এর উন্নতির বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।”




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.