রাজ্যে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার ঠিক পরেই স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য হিসেবে কাজে যোগ দিতে এসেছিলেন অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের বাধায় তা সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এন পটেল ও বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ অবিলম্বে অমিতবাবুকে স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়কে ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, উপাচার্য হিসেবে কাজ করবেন অমিতবাবুই। তাঁকে কাজে যোগ দিতে না-দেওয়ার এক্তিয়ার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বা অন্য কারও নেই।
২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার দিল্লিবাসী চিকিৎসক অমিতবাবুকে রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। তিনি তখন জিডি পন্থ হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অমিতবাবু রাজ্য সরকারের কাছ থেকে নিয়োগপত্র পাওয়ার পরে নিয়ম অনুযায়ী তাঁর তৎকালীন কর্মক্ষেত্রে পদত্যাগের চিঠি দেন। জিডি পন্থ হাসপাতালের চাকরি ছেড়ে তিনি জুনে উপাচার্য হিসেবে যোগ দিতে কলকাতায় আসেন। ইতিমধ্যে রাজ্যে সরকার বদল হয়েছে। অমিতবাবুকে কাজে যোগ দিতে বাধা দেন স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার। তিনি জানান, অমিতবাবু কাজে যোগ দিতে পারবেন না।
অমিতবাবুর আইনজীবী অনিরুদ্ধ চট্টোপাধ্যায় জানান, সেই ঘটনার পরে অমিতবাবু কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন। স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে উপাচার্য নিয়োগ করার পরে রেজিস্ট্রার কোন এক্তিয়ারে তাঁকে কাজে যোগ দিতে বাধা দিচ্ছেন, তা জানতে চেয়ে মামলা করেন তিনি। ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন জানিয়ে দেয়, এই বিষয়ে যা বলার, তা বলতে পারে এগ্জিকিউটিভ কাউন্সিল। রেজিস্ট্রারের কোনও এক্তিয়ার নেই। কোনও উপাচার্যকে নিয়োগ করার পরে এই পদ্ধতিতে তাঁকে বরখাস্ত করা যায় না। কোন কোন কারণে এক জন উপাচার্যকে বরখাস্ত করা যেতে পারে, তা আইনেই বলা আছে। এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ডিভিশন বেঞ্চ। হাইকোর্টের রায়ের প্রতিলিপি পাওয়ার পরেই অমিতবাবু উপাচার্য হিসেবে কাজে যোগ দেবেন।
২০১০ সালের নভেম্বরে স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তদানীন্তন উপাচার্য প্রদীপকুমার দেব অবসর নেন। তার পর থেকে ওই বিশ্ববিদ্যালয় চলছে উপাচার্য ছাড়াই। বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ এ দিন জানান, অন্যায় ভাবে অমিতবাবুকে কাজ যোগ দিতে দেওয়া হয়নি, এই অভিযোগ ঠিক নয়। আচার্য-রাজ্যপাল কাজে যোগ দেওয়ার যে-সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন, অমিতবাবু তার মধ্যে আসেননি। ওই সময়ের পরে তিনি এসেছিলেন বলেই তাঁকে কাজে যোগ দিতে নিষেধ করা হয়। তৈরি হয় পদপ্রার্থীদের নতুন তালিকাও। কিন্তু অমিতবাবু বিষয়টিকে আদালতে নিয়ে যাওয়ায় এত দিন পুরো প্রক্রিয়াটিই বন্ধ রাখতে হয়েছিল। |