এমনিতেই রাস্তার মাঝখানে বাগান তৈরির সৌন্দর্যায়ন প্রকল্প ঘিরে প্রতিদিন কাজের সময়ে যানজটে নাজেহাল হচ্ছে শহরের কেন্দ্রস্থল। বৃহস্পতিবার তার সঙ্গে যুক্ত হল কয়েকটি রাজনৈতিক ও অন্যান্য সংগঠনের একাধিক মিছিল-বিক্ষোভ কর্মসূচি। যার ফলে কাজের শহরে বেলা ১২টা থেকে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ল ধর্মতলা, চৌরঙ্গি-সহ শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা। জের গড়াল প্রায় সন্ধ্যা পর্যন্ত।
|
এ দিন সব চেয়ে বেশি জনসমাগম হয় কলকাতার মার্কিন দূতাবাসমুখী বিভিন্ন মিছিলে। তার আগে তাদের সমাবেশ হয় মেট্রো চ্যানেলে। ময়দান এলাকা জুড়ে দাঁড়িয়ে পড়ে মিছিলে লোক নিয়ে আসা বাস-লরি-ম্যাটাডর। পুলিশ জানায়, বেলা সাড়ে ১২টা থেকেই কার্যত অচল হতে শুরু করে ধর্মতলা চত্বর। হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশন থেকে বিভিন্ন মিছিল ধর্মতলার দিকে এগোতে থাকে।
ততক্ষণে বিভিন্ন দাবি নিয়ে আদিবাসীদের একটি সংগঠন রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে পৌঁছে সমাবেশ শুরু করে দিয়েছে। হাওড়া, শিয়ালদহ থেকে দফায় দফায় বিভিন্ন মিছিল করে এসে পৌঁছেছেন সংগঠনের সদস্যেরা। ইতিমধ্যে গাঁধী মূর্তির পাদদেশেও শুরু হয়ে গিয়েছে বামফ্রন্টের সমাবেশ। সব মিলিয়ে মেয়ো রোড, এস এন ব্যানার্জি রোড, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে যানবাহনের গতি শ্লথ হতে হতে এক সময়ে বন্ধ হয়ে যায়।
ওই সময়ে প্রধান ভরসা ছিল মেট্রো। মেট্রো সূত্রে খবর, ১২টা থেকে ৪টে পর্যন্ত প্রায় দু’লক্ষ যাত্রী হয়। মেট্রোর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (সাধারণ) প্রত্যুষ ঘোষ জানান, ট্রেনে এত ভিড় হয়ে যায় যে, যাত্রীদের নামা-ওঠা করতে বেশি সময় লাগে। প্রতিটি স্টেশনে ৩০ সেকেন্ডের বদলে দু’-তিন মিনিট করে দাঁড়ায় বিভিন্ন ট্রেন। |
লালবাজারের এক কর্তা জানান, জওহরলাল নেহরু রোড, এস এন ব্যানার্জি রোড, মেয়ো রোড, ডাফরিন রোড ও রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ পুরোপুরি বন্ধ ছিল। ফলে রেড রোড, ই এম বাইপাস এবং এ জে সি বসু রোডে গাড়ির চাপ অত্যধিক বেশি হয়। অবস্থা সামলাতে পথে নামেন পদস্থ অফিসারেরা। তবু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে বিকেল গড়িয়ে যায়। লালবাজারের ওই পুলিশকর্তার কথায়, “ভিড়ের জন্য কয়েকটি রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হয় অন্য রাস্তায়। তার জেরে সেখানে একটু বেশি চাপ ছিল।”
দিনের হাল বিবেচনা করে ধর্মতলা থেকে পার্ক স্ট্রিটগামী রাস্তায় কয়েকটি ব্যারিকেড তৈরি করেছিল পুলিশ। কিন্তু মিছিলের চাপে তা কাজে আসেনি। এটা কি পুলিশের আগাম আঁচ করতে না পারা বা দক্ষতার অভাব? |
কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) জাভেদ শামিম বলেন, “এটা ঠিক নয়। পুলিশের আসল লক্ষ্য ছিল সুষ্ঠু ভাবে পরিস্থিতি সামলানো। পুলিশ তা-ই করেছে।” এই মিছিলের নেতারাও পুলিশের পোর্টেবল মাইক্রোফোন নিয়ে তাঁদের সদস্যদের শান্ত ভাবে বাড়ি ফিরে যেতে বলেন। তাতেও কাজ হয়। |