মন্ত্রিত্ব ছেড়ে এ বার মাস্টারমশাই মানস ভুঁইয়া!
পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের ছাত্র-যুবদের তৃণমূলের আক্রমণ মোকাবিলায় ‘অস্ত্রশিক্ষা’ দিতে চান সদ্যপ্রাক্তন এই মন্ত্রী।
খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি (এফডিআই) এলে যে আদতে মানুষের সুবিধাই হবে, রীতিমতো ক্লাস নিয়ে ছাত্র পরিষদ ও যুব কংগ্রেসের কর্মীদের তা বোঝাতে চান মানসবাবু। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সংস্কার-নীতির বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে ‘যুদ্ধং দেহি’ মনোভাব দেখাচ্ছেন, তথ্যসমৃদ্ধ পথে বিরোধিতা করার কায়দাই সেই ক্লাসে তরুণ সহকর্মীদের বোঝাবেন শিক্ষক মানস।
প্রবল বিরোধিতার মুখে পাল্টা প্রচারের কৌশল খাড়া করতে ক্লাসের রেওয়াজ প্রদেশ কংগ্রেসে নতুন নয়। আগে গ্যাট চুক্তি বা ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তির সময়েও প্রদেশ নেতাদের নিয়ে ক্লাস হয়েছে। সেই সব শিক্ষার আসরেই মাস্টারমশাই হিসাবে ডাক পড়ত প্রণব মুখোপাধ্যায়ের। প্রত্যক্ষ রাজনীতির পাট চুকিয়ে প্রণববাবু এখন রাইসিনা হিলের বাসিন্দা। ‘গুরু’র অনুপস্থিতিতে এফডিআই-প্রশ্নে দলের ছাত্র-যুবদের পাল্টা প্রচারের পাঠ দেওয়ার দায়িত্ব নিতে এগিয়ে এসেছেন ‘শিষ্য’ মানস!
মানসবাবুর কথায়, “গ্যাট চুক্তির সময় প্রণববাবু যে ভাবে কংগ্রেস কর্মী-নেতাদের ক্লাস নিয়ে চুক্তির খুঁটিনাটি বোঝাতেন, সে ভাবেই এফডিআই নিয়ে ক্লাস নেব ছাত্র পরিষদ ও যুব কংগ্রেস কর্মীদের।” কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মাকে কলকাতায় এনে ছাত্র-যুবদের আরও বিশদে বোঝানোরও চেষ্টা হবে। শুধু এ রাজ্যের নিরিখে নয়, গোটা দেশ, এমনকী আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এফডিআই-এর ‘সুফল’ ছাত্র-যুবদের কাছে সহজবোধ্য করে তুলতে চান মানসবাবু। যাতে তাঁরা আবার সেই শিক্ষার ‘সুফল’ সাধারণ মানুষের দরবারে নিয়ে যেতে পারেন।
মানসবাবুর অভিযোগ, “তৃণমূল যে ভাবে এফডিআই-এর বিরোধিতা করছে, যে ভাবে কংগ্রেস দেশটাকে বিক্রি করে দেবে বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তাতে কেন্দ্রে বিজেপি এবং রাজ্যে সিপিএমের রাজনৈতিক সুবিধা হচ্ছে। সিপিএম, বিজেপি, তৃণমূল একই সঙ্গে একই সুরে যেন কথা বলছে!” এই গোটা পরিস্থিতির মোকাবিলায় এফডিআই প্রেক্ষিতে আর্থিক উন্নয়নের তথ্য এবং এআইসিসি ও প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্যের সিডি তৈরি করেও বিলি করা হবে। ঠিক যে ভাবে গ্যাট চুক্তি বিতর্ক চলাকালীন প্রণববাবুর নেওয়া ক্লাসের সিডি নিয়ে কংগ্রেস নেতারা প্রচারে নেমেছিলেন, সে ভাবেই এফডিআই-সিডি নিয়ে গ্রাম-গ্রামান্তরে পৌঁছে যেতে চান প্রাক্তন সেচমন্ত্রী। নরসিংহ রাওয়ের সরকারের আর্থিক সংস্কার নীতির কী প্রভাব দেশে পড়েছে, ক্লাসে তুলে আনা হবে সেই প্রসঙ্গও।
কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের সঙ্গে আলোচনা করতে রবিবার রাতে দিল্লি গিয়েছেন মানসবাবু। তাঁর বক্তব্য, “কী ভাবে ছাত্র পরিষদ ও যুব কংগ্রেসকে নিয়ে প্রচারে নামা যায়, তা নিয়েও কথা বলব হাইকম্যান্ডের সঙ্গে।” মানসবাবুর উদ্যোগে যুব ও ছাত্রদের এফডিআই নিয়ে ‘স্বচ্ছ ধারণা’ হবে বলে মনে করে দুই সংগঠনই।
যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভানেত্রী এবং সাংসদ মৌসম বেনজির নূর বা ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি রাহুল রায়ের আশা, এর ফলে কর্মীরা মানুষকে সহজে বোঝাতে পারবেন। |