নতুন ছবিতে বিষয় কলকাতা
পথ দুর্ঘটনা
খনও পর্যন্ত শহরের রাস্তায় পথ দুর্ঘটনার কোনও খবর নেই।’-- সাত সকালে রেডিয়োর আপডেট। পথ দুর্ঘটনা এ শহরের নিত্যসঙ্গী। হাসপাতালে দশটি শয্যার একটিতে দুর্ঘটনায় আহত রোগী। প্রতি ঘণ্টায় ১৩ জন মানুষ এ দেশে পথ দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। অথচ প্রশাসনের কাছে যান চলাচলের বিষয়টি দুয়োরানি। বহাল তবিয়তে ঘুরছে মানুষখেকো লজ্ঝড়ে বাস। কিছু হলে ড্রাইভার-কন্ডাক্টরদের দাও আচ্ছা করে কড়কে। কখনও উলটপুরাণ। আহত বা নিহত ব্যক্তিকেই দোষারোপ সিগন্যাল মানেননি। আড়ালে থেকে যায় সত্যিটা। সিগন্যাল কাজ করে না। কিছু সিগন্যালে কয়েক সেকেন্ডে রাস্তা পেরোতে না পারলে দানবের মতো ছুটে আসবে যানবাহন। বছর দুই আগে কলকাতা পুলিশ ঢাকঢোল পিটিয়ে আধুনিক যান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা (দায়িত্বে কেলট্রন) শুরু করে। তাতেও গলদ। পুলিশের দাবি, কেলট্রনের দোষ। সংস্থার দাবি, বার বার রাস্তা খোঁড়ায় কেবল-এর গণ্ডগোল সিস্টেমকে এলোমেলো করছে। ৯০ ফুট রাস্তায় ৩০ ফুটের বাসের স্বাস্থ্য পরীক্ষা। গতি তোলার আগেই পরীক্ষা শেষ। মোটর ভেহিকলসের খাতায় সব বাস ‘ওকে’।
দুর্ঘটনার পর অন্য গল্প। আসরে নামবে বিমা কোম্পানি। শুরু হবে বিমা তদন্তকারীর বিশেষ তদন্ত। যার ফলাফল পূর্ব-নির্ধারিত। স্কুলে যাওয়ার পথে ছোট্ট বাবাই দুর্ঘটনায় পড়ে। ব্রেক ধরেনি, বেসরকারি বাস এসে পড়ে ওর ওপর। ছেলের হাত ছেড়ে অর্ক ছিটকে পড়ে। শুরু হয় বিমা কোম্পানির তদন্ত। দোষটা কার? ঘটনা পরম্পরায় উঠে আসে অপ্রিয় সব সত্য। অর্ক-বাবাই পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও নন্দিতা রায়ের নতুন ছবি অ্যাক্সিডেন্ট-এর চরিত্র। কেষ্টপুর খালে যাত্রীবোঝাই বাস পড়ে যাওয়ার খবর ভাবিয়েছিল পরিচালকদ্বয়কে। শিবপ্রসাদ জানালেন, গাড়ি চুরি যাওয়াতে সরাসরি জানার সুযোগ হয়েছিল বিমা-তদন্তের কার্যকলাপ। দুইয়ের সম্মিলিত ফলাফলেই অ্যাক্সিডেন্ট। দেখা যাবে শুষ্ক দুর্ঘটনাকে ঘিরে কী করে সন্দেহের বেড়াজালের বিস্তার হয়। কৌস্তুভ রায় প্রযোজিত ছবিটি মুক্তি পাবে ২৮ সেপ্টেম্বর। সঙ্গে ছবির একটি দৃশ্যে রুদ্রনীল ঘোষ ও কাঞ্চন মল্লিক।

স্মরণ
বাঁশি বাজাতেন। সেই সূত্রে ভ্রাম্যমাণ লোকদল ‘আলকাপ’-এর সঙ্গে পরিচয়। ভ্রমণ করতে করতেই প্রকৃতি ও মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ। মানুষই সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের লেখার রসদ। পার্কসার্কাসের ঘিঞ্জি পরিবেশে লোকজন না দেখলে লিখতে পারতেন না। থাকতে পারেননি সল্টলেকের শান্ত পরিবেশে। ফুসফুসের সমস্যা উপেক্ষা করেও ফিরে এসেছিলেন পার্কসার্কাসের ফ্ল্যাটে। অলীক মানুষ-এর মতো ধ্রুপদী সাহিত্য সৃষ্টির পাশাপাশি বহু বিষয়ে গভীর পড়াশোনা ছিল তাঁর, কোনও লেখায় ভুল চোখে পড়লেই পত্রপত্রিকায় চিঠি দিয়ে জানাতেন। সম্প্রতি প্রয়াত হলেন সুপণ্ডিত এই সাহিত্যিক। গোর্কি সদনে তাঁকে স্মরণ করলেন লেখক, প্রকাশক ও অনুরাগীরা। দুঁদে গোয়েন্দা কর্নেলের স্রষ্টা ব্যক্তি জীবনে দারুণ ভূতের ভয় পেতেন, জানা গেল দীর্ঘ দিনের বন্ধু শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিচারণায়। সহ-লেখকদের আলাপচারিতায় জানা গেল অন্য সিরাজকে।
নাট্যকার
‘চেখভের লেখা, আর সঙ্গে সঙ্গে আমাদের কয়েক জনের কাছে পড়ার বইয়ের বাইরে বিদেশি নাটকের দরজা সশব্দে উন্মুক্ত হয়ে গেল। পড়লাম।’ মণীন্দ্র কলেজে পড়ার স্মৃতি অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের, চেখভের নাটক রূপান্তরের সময়। ৩০ সেপ্টেম্বর তাঁর জন্মদিন, বেঁচে থাকলে আশিতে পা দিতেন, মৃত্যুর পরও প্রায় তিরিশ বছর হতে চলল। স্বল্পায়ু এই মানুষটির কাজের ভিতর দিয়েই তাঁকে শ্রদ্ধা জানানোর উদ্যোগ নিয়েছেন সন্ধ্যা দে, অজিতেশ ছিলেন তাঁর কাছে ‘সহিষ্ণু শিক্ষক ও স্নেহশীল পিতার মতো’। গল্ফগ্রিনে নতুন নাট্যগোষ্ঠী ‘সাঁঝবেলা’ তৈরি করে সন্ধ্যা তাঁর পরিচালনায় অজিতেশের দু’টি চেখভ-রূপান্তর ‘প্রস্তাব’ ও ‘শরতের মেঘ’ মঞ্চস্থ করছেন পূর্বশ্রী প্রেক্ষাগৃহে, ৩০ সেপ্টেম্বর সন্ধে ৬টায়। নাটকের আগে অজিতেশকে নিয়ে আলোচনা করবেন জয় গোস্বামী অনুপ মতিলাল, তাঁর রচনা পাঠ করবেন আশিস ঘোষ। আয়োজনে পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্র।

শহরে প্রথম
‘ফেলে আসা ছবি ফিরে দেখা যেন সম্মিলিত স্মৃতিপুঞ্জের ভিতর দিয়ে হেঁটে যাওয়া।’ বলছিলেন গৌতম ঘোষ। তেলেঙ্গানার কৃষক বিদ্রোহ নিয়ে ‘মা ভূমি’ করেছিলেন তিনি সত্তরের শেষে, ‘সেখানকার কৃষকরা কিন্তু একই রকম বিপন্ন, ছবিটা তাই আজও প্রাসঙ্গিক মনে হয়।’ ‘পতং’ বা ‘আবার অরণ্যে’ নিয়েও একই ভাবনা তাঁর। সঙ্গে বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় ‘পদ্মানদীর মাঝি’ ও ‘মনের মানুষ’। ২৬-২৮ সেপ্টেম্বর গৌতম ঘোষের রেট্রো নন্দন-এ। বিয়ন্ড ড্রিমস-এর উদ্যোগে এই প্রথম কলকাতায়, এর আগে হয়েছে ফ্রান্স ইতালি মরিশাস অস্ট্রেলিয়া জাপানে। অন্য দিকে ভারতীয় সিনেমার দিকপালরা ধ্রুপদী সঙ্গীতে কতটা প্রভাবিত ছিলেন, বা তাঁদের ছবির কাঠামোয় কী ভাবে তা প্রয়োগ করতেন তা নিয়ে বলবেন চলচ্চিত্রবেত্তা সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়। ২৮ সেপ্টেম্বর বিড়লা অ্যাকাডেমিতে সন্ধে ৬টায়। থাকছেন শ্রীকান্ত আচার্য দেবজ্যোতি মিশ্রও। উদ্যোগে ‘প্রয়াস’।

ধ্রুবা
বৃদ্ধ সমুদ্রগুপ্তের পর মগধের সিংহাসনে বসবেন পুত্র দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত। এমনটাই ঠিকঠাক। তখনই প্রকাশ্যে আসে রাজার ‘অবৈধ’ সন্তান রামগুপ্তের কথা। সমুদ্রগুপ্তের স্ত্রী দত্তাদেবী সরে দাঁড়ান। সিংহাসনে বসে স্বেচ্ছাচারী রামগুপ্ত। ভেঙে পড়ে মগধের শাসনযন্ত্র। চন্দ্রগুপ্তের প্রণয়িণী ধ্রুবা বন্দি হয়। শৈশব থেকে অবহেলিত, লাঞ্ছিত রামগুপ্ত ছিল নেশাগ্রস্ত। শকরা মগধ আক্রমণ করলে রামগুপ্ত ধ্রুবাকে শকরাজের সেবায় পাঠাবার সিদ্ধান্ত নেয়। চন্দ্রগুপ্ত ফিরে এসে শকদের পরাস্ত করে। আশৈশব ভালবাসা সত্ত্বেও দুই ভাইয়ের অসম জীবনযাপন ও তাদের বিপরীত স্বভাব নিয়ে ধ্রুবা উপন্যাস লিখেছিলেন প্রত্নতাত্ত্বিক রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস-এ ‘ধ্রুবা’ মঞ্চস্থ করল ‘থিয়েটার প্ল্যাটফমর্’। নির্দেশনায় দেবাশিস। এক নারীকে কেন্দ্র করে উঠে এল গুপ্তযুগের ভারতের চমৎকার খণ্ডচিত্র।

জামালউদ্দিন
সুখী গৃহকোণ, শোভে গ্রামোফোন। বিজ্ঞাপনী বাণীটি এখন আক্ষরিক। চোঙাওয়ালা সেই কলের গান এখন বাঙালির ঘরে আর পাঁচটা শো-পিসের মতোই। তবু এখনও আছেন শহরের কিছু রেকর্ড-পাগল। পুরানো জানিয়া যাঁরা সংগ্রহ করেন গানের ইতিহাসের অ-শেষ সম্পদগুলি। ধর্মতলা, ওয়েলিংটন স্কোয়্যার, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট কলকাতার নানা রেকর্ডপাড়ায় তাঁদের নিত্য নতুন রেকর্ড জুগিয়েছেন যাঁরা তেমনই এক জন, জামালউদ্দিন। ছোটবেলা থেকেই কলের গানের সঙ্গে ব্যবসা-সূত্রে বসত তাঁর। তিনি এবং আরও অনেকে আজও বাঁচিয়ে রেখেছেন গানের ইতিহাসের হারিয়ে যেতে বসা উপাদানগুলি। তাঁকে নিয়েই তথ্যচিত্র তৈরি করেছেন শেখর বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘আ ডে ইন দ্য লাইফ অব জামালউদ্দিন’ নামে সেই তথ্যচিত্রটি দেখানো হল উইভার্স স্টুডিয়ো সেন্টার ফর দি আর্টস-এ। ছিল পরিচালক ও জামালউদ্দিনের সঙ্গে কথোপকথনও।

এত দিনে মূর্তি
জীবদ্দশায় প্রাপ্য সম্মান না পেলেও তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে সত্যেন্দ্রনাথ বসুর অবদান প্রশ্নাতীত। অতি সম্প্রতি ‘ঈশ্বরকণা’র প্রসঙ্গে আবার তাঁর নাম উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানী মহলে। প্রয়াত এই বাঙালি বিজ্ঞানীর নামে রাস্তা থাকলেও এতকাল এই শহরে তাঁর কোনও মূর্তি ছিল না। ৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় ‘বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদ’ ও ‘সুতানুটি বইমেলা কমিটি’র মিলিত উদ্যোগে বিজ্ঞানাচার্যের বাড়ির কাছে রায়বাগান স্ট্রিট ও বিধান সরণির সংযোগস্থলে অসীমকুমার পাল নির্মিত আবক্ষ মূর্তির (সঙ্গের ছবি) আবরণ উন্মোচন করবেন বিজ্ঞানী বিকাশ সিংহ। এই উপলক্ষে স্কটিশচার্চ স্কুলের হেন্সম্যান ভবনের একতলায় (৭৩ বিধান সরণি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রকাশিত হবে সত্যেন বোস: আ জিনিয়াস রিমেমবাডর‌্ (সূত্রধর, ২০০.০০) গ্রন্থটি। সত্যেন্দ্রনাথের বিভিন্ন সময়ের দুর্লভ ছবি, জীবনপঞ্জি ছাড়াও বইতে থাকবে তাঁকে নিয়ে সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় ও ডি এম বসুর লেখা, সত্যেন্দ্রনাথের বক্তৃতা ‘ম্যান ইন সায়েন্টিফিক এজ’ ইত্যাদি। গ্রন্থের মুখবন্ধ লিখেছেন বিকাশ সিংহ। অনুষ্ঠানে থাকবেন রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা মন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা পুরসভার অধ্যক্ষ সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।

অজানা হেমন্ত
‘গান শিখে তখন গাইবার জায়গা খুঁজে বেড়াই। তখন আর আমাকে কে গাইতে বলবে! সেই সময় কারুর বিয়ে হলে বাসর ঘরে গাইবার একটা সুযোগ পেয়ে যাই। মনে আছে আমার মার মামাতো বোন মায়া-মাসীমার বাসরে গান গাইবার কথাটা। বিয়ের লগ্ন ছিল একটু বেশী রাত্তিরে।... বিয়ে হয়ে যখন বাসরঘর বসল তখন গভীর রাত্তির। সবাই প্রায় ঘুমে ঢলে পড়েছে। আমার দিকে চোখ পড়তে একজন বললেন, ওমা, দেখেছ, হেমো এখনও জেগে আছে।’ লিখছেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, তাঁর অধুনা-দুর্লভ আত্মকথা আনন্দধারা-য়। ভবানীপুরের রূপনারায়ণ নন্দন লেনের একটা বাড়িতে তখন স্বপ্ন নিয়ে কাটছিল তাঁর দিনগুলো। তার পরে শাঁখারিপাড়ার নাসিরুদ্দিন ইনস্টিটিউশন। কিন্তু সে স্কুল নয়, তাঁর গান-জীবনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকবে ভবানীপুরের মিত্র ইনস্টিটিউশন। এখানেই তাঁর বন্ধু হন সুভাষ মুখোপাধ্যায় ও রমাকৃষ্ণ মৈত্র। আর স্কুলের বন্ধুদেরই আবিষ্কার গায়ক হেমন্ত। কিন্তু শিল্পী হয়ে ওঠার সেই দিনগুলো টুকরো টুকরো স্মৃতি ছাড়া আজও সে ভাবে ধরা নেই কোনও বইয়ে। শিল্পীর ৯২তম জন্মবর্ষে সেই কাজটাই চলছে জোরকদমে। সপ্তর্ষি প্রকাশনের জন্য তাঁর দুষ্প্রাপ্য আত্মজীবনী আনন্দধারা-র প্রতিটি প্রসঙ্গ, প্রতিটি গান, প্রতিটি ব্যক্তিকে সটীক করছেন সম্পাদক অভীক চট্টোপাধ্যায়। থাকছে জীবনপঞ্জি ও সমস্ত গানের সবিস্তার পঞ্জি। শুধু কথা নয়, শিল্পীর ৯২ বছরে আছে শোনার আয়োজনও। ১৯৩৭-১৯৮৯ এই পর্বে হেমন্তর গাওয়া বহু বিখ্যাত ও দুষ্প্রাপ্য গান নিয়ে সারেগামা প্রকাশ করেছে তিনটি সিডি-র অ্যালবাম ‘মিউজিক্যাল জার্নি উইথ হেমন্ত মুখার্জি’। জয়দীপ চক্রবর্তী-সংকলিত এই অ্যালবামে বাংলা ও হিন্দি আধুনিক, সিনেমার গান, রবীন্দ্রসঙ্গীত তো আছেই, আছে ধীরেন্দ্রচন্দ্র মিত্রের সুরে গাওয়া উর্দু গজলও। সুতরাং এই শরতে আবারও হেমন্ত, অজানা, অচেনা। সঙ্গে গোপাল সান্যালের ক্যামেরায় শিল্পী, সত্যজিৎ রায় প্রমুখ-সম্পাদিত ‘চলচ্চিত্র’ পত্রিকার প্রথম সংখ্যা থেকে।

লোকবাদ্য
এই প্রথম লোকবাদ্যের কনসার্ট! লোকগান ও লোকধ্বনি পরিবেশিত হবে সে কনসার্টে। এ শুধু দোতারা বাঁশি ঢোল করতাল সহযোগে বিভিন্ন লোকগানের সুর বাজানো নয়, প্রায় পঞ্চাশটি বিভিন্ন রকমের লোক-বাদ্যযন্ত্রের সম্মিলিত বাদনে পরিবেশিত হবে বারোটি থিম কম্পোজিশন, দোহার-এর প্রযোজনায়। দোহার জানাচ্ছে, মূলত বাংলার লোকবাদ্য ছাড়াও বেজে উঠবে ভিনদেশি লোকবাদ্যও। বাজবে অনেক কাল ধরে লোকসঙ্গীতে সঙ্গত-করা হারমোনিয়াম, ব্যান্জো, ম্যান্ডোলিন ইত্যাদি। পরিচালনায় কালিকাপ্রসাদ। ২৯ সেপ্টেম্বর সন্ধে ৬টায় রবীন্দ্রসদনে। নিবেদনে থার্ড আই।

শিল্পীর কথা
তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছে। পোল্যান্ডের শিল্পী স্টিফেন নর্বিলন ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সে সময়ই তিনি ‘আর্ট ডেকো’ রীতিতে অলংকরণ করেন যোধপুর, মরভি, রামগড়ের প্রাচীন প্রাসাদগুলোর। তাঁকে নিয়েই দিল্লিতে পোল্যান্ডের দূতাবাস এবং ন্যাশনাল অডিয়ো-ভিস্যুয়াল ইনস্টিটিউট ইন ওয়ারশ প্রযোজনা করেছে ‘চিত্রাঞ্জলি, স্টিফেন নর্বিলন ইন ইন্ডিয়া’ তথ্যচিত্রটি। পরিচালক মালগোর্জাটা স্কিবা। ২৪ সেপ্টেম্বর সন্ধে সাড়ে ছ’টায় নন্দনে ছবিটি দেখা যাবে। আয়োজনে সিনে সেন্ট্রাল। থাকবেন পরিচালক-সহ পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত পিত্রো ক্লদোক্সি, ২৫ সেপ্টেম্বর তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও এশিয়াটিক সোসাইটিতে বলবেন ‘আ হিস্টরি অব ইন্ডিয়া’স ইমেজ ইন পোল্যান্ড’ বিষয়ে। সে দিনই সন্ধে সাতটায় ক্যালকাটা স্কুল অব মিউজিক-এ ছবিটি ফের দেখানো হবে। সঙ্গে থাকবে ত্রিথা সিংহের কনসার্ট।

অবশেষে
ভাল আছি/ আমার মতো করে/ ভাল আছি একা একা ভোরে এটাই ছিল শুচিস্মিতার জীবন-কথা। স্বামী-ছেলে বিদেশ চলে গেলেও শুচিস্মিতা আঁকড়ে ছিলেন এ শহরকে। মা’র মৃত্যুর পর সৌম্য ফেরে কলকাতায়। শুচিস্মিতার ডায়েরি, আঁকা ছবি, নন্দিনী, অন্য অনুষঙ্গ ও ভাল লাগাগুলির মাধ্যমে তার পরিচয় হয় অচেনা মায়ের। সৌম্য আবিষ্কার করে মানুষ শুচিস্মিতাকে। মা-ছেলের গল্প নিয়েই অদিতি রায়ের প্রথম ছবি অবশেষে। যাদবপুরের ফিল্ম স্টাডিজের প্রাক্তনী অদিতি রূপকলা কেন্দ্র থেকে চলচ্চিত্র নির্দেশনার পাঠ নিয়েছেন ২০০৭-এ। এক কথায় ফ্রেশার। প্রথম ছবিতেই দাপুটে অভিনেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়-সহ দুই পরিচালক সুমন মুখোপাধ্যায় ও অভিজিৎ গুহ’কে নির্দেশনা! রূপা প্রথমে রাজি হননি। ‘ছোট মেয়ে, কী চাইছে বোঝাতে পারবে না...।’ যদিও চিত্রনাট্যকার রূপাকে ভেবেই লিখেছিলেন গল্পটি। চেষ্টা করলে কিছুই অসম্ভব নয় আত্মবিশ্বাসী অদিতিই রাজি করান রূপাকে। কেমন পরিচালক? ফুল মার্কস দিয়েছেন রূপা। ‘কী চাইছে, অদিতি অনেক শব্দ খরচ না করেও স্পষ্ট বুঝিয়ে দিত। কখনও বোঝাপড়ার সমস্যা হয়নি।’ জোর করে ছবিতে রূপাকে দিয়ে গাইয়েছেন গান। যা এনে দিয়েছে জাতীয় পুরস্কার। গত শুক্রবার মুক্তি পেলেও ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি সম্মান ঝুলিতে। কেরল আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল-এ নেট প্যাক পেয়েছে এ ছবি। পরিচালকের কথায়, ‘প্রথম ছবি, বন্ধনটা একটু বেশিই।’ তাই এখনই অবশেষে ছাড়া অন্য কিছু ভাবার অবকাশ নেই অদিতির।


শতবর্ষে
রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনা উপাসনারই নামান্তর মনে করতেন তিনি। এ জন্য রাজরোষেও পড়তে হয়েছিল। তবু ভুলে যাননি জোড়াসাঁকোতে আলাপের পর তাঁর আশীর্বাদের কথা। ভোলেননি বেগম রোকেয়ার অনুপ্রেরণা। নজরুল নাম দিয়েছিলেন ‘সুফু’, কবি সুফিয়া কামালের জন্ম বরিশালে, ২০ জুন ১৯১১। তাঁর সাত মাস বয়সে পিতা সৈয়দ আবদুল বারি সন্ন্যাস নিয়ে গৃহত্যাগ করেন। ভাইদের সঙ্গে স্কুলে যেতেন ছেলে সেজে। অল্প বয়সেই বিয়ে হয় মামাতো ভাই সৈয়দ নেহাল হোসেনের সঙ্গে। স্বামীর উৎসাহেই সাহিত্যচর্চা। নিয়মের বেড়াজাল ভেঙে চড়ে বসেন উড়োজাহাজে। ‘সৈনিক বধূ’ নামে প্রথম গল্প লেখা বরিশালের ‘তরুণ’ পত্রিকায়। ‘সওগাত’-এ প্রথম কবিতা ‘বাসন্তী’। প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘কেয়ার কাঁটা’ (কলকাতা, ১৯৩৭)। স্বামীর অকালমৃত্যুর পর যোগ দেন কলকাতা পুরসভার স্কুলে। দ্বিতীয় বিয়ে চট্টগ্রামের কামালউদ্দিন খানের সঙ্গে। ’৪৬-এর দাঙ্গার সময় এ শহরে আত্মনিয়োগ করেন সেবায়। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন বা মুক্তিযুদ্ধ সবেতেই ছিলেন সর্বাগ্রে। দেশ ভাগের আগে সচিত্র সাপ্তাহিক ‘বেগম’-এর প্রথম সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। দেশ ভাগের পর ঢাকায় ফিরে প্রতিষ্ঠা করেন শিশু সংগঠন ‘কচিকাঁচার মেলা’। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বহু পুরস্কার তাঁর ঝুলিতে। লেখা অনূদিত হয়েছে বহু ভাষায়। ১৯৯৯-এর ২০ নভেম্বর মৃত্যুর পর তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয় ঢাকা আজিমপুরে। সদ্য পেরলো কবির জন্মশতবর্ষ। ২২ সেপ্টেম্বর গোর্কি সদনে তারই উদ্যাপনে ছিল ‘অসাম্প্রদায়িক মানবাধিকার আন্দোলনে দক্ষিণ এশিয়ার মহিলাদের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা। ছিলেন কবিকন্যা সুলতানা কামাল, শাহরিয়ার কবির, আবিদা ইসলাম, অমলেন্দু দে, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা প্রমুখ। গোর্কি সদনের সঙ্গে আয়োজনে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতি।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.