বিনোদন: দাবি গোপন ব্রিটিশ নথির
‘গল্প হলেও সত্যি’ জেমস বন্ড
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি। ব্রিটিশ নৌসেনার গুপ্তচর বিভাগের অফিসারটি গল্পের ছলেই বন্ধুদের বলেছিলেন, “এমন গুপ্তচরের গল্প লিখব, যা বাকি সব গুপ্তচরের গল্পকে হার মানিয়ে দেবে।”
কথা রেখেছিলেন আয়ান ফ্লেমিং। বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার কয়েক বছর পরে লিখে ফেলেছিলেন ‘ক্যাসিনো রয়্যাল’। ১৯৫৩ সালে প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই যাকে নিয়ে বিশ্বজুড়ে হৈচৈ শুরু হয়ে গিয়েছিল। উপন্যাসের নায়ক ব্রিটিশ গুপ্তচর জেমস বন্ডের কীর্তিকলাপ নাড়িয়ে দিয়েছিল পাঠকদের। সেই শুরু। গুপ্তচর সংস্থা এমআই৬-এর এজেন্ট ০০৭-এ রোমাঞ্চকর নানা কার্যকলাপে আজও মজে আছে বিশ্বের জনতা। এই ব্রিটিশ গুপ্তচরের ‘পরিচয়’ জানার জন্য উৎসুক ছিলেন অনেকেই। ফ্লেমিংয়ের নায়ক কি নেহাতই এক কাল্পনিক চরিত্র না কি সত্যিই তাঁর অস্তিত্ব ছিল?
সম্প্রতি সামনে আসা ব্রিটেনের কিছু গোপন নথি বলছে, জেমস বন্ড ‘গল্প হলেও সত্যি’!
কী রকম?
পশ্চিম লন্ডনের জাতীয় মহাফেজখানা থেকে পাওয়া কিছু নথিপত্র নিয়ে বেশ ক’দিন ধরেই কাটাছেঁড়া করছিলেন ইতিহাসবিদ সোফি জ্যাকসন। সেখানেই খোঁজ পান ইয়ো-টমাস নামে এক ব্রিটিশ গুপ্তচরের। জানতে পারেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ‘হোয়াইট র্যাবিট’ ছদ্মনামে কাজ করতেন এই গুপ্তচর। এই ইয়ো-টমাসের চলন-বলন, বিভিন্ন অভিযানের সঙ্গে আশ্চর্য মিল রয়েছে জেমস বন্ডের গল্পের। সব মিলিয়ে জেমস বন্ড যেন কোনও ভাবে মিশে রয়েছেন ইয়ো-টমাসের সঙ্গে।
রুপোলি পর্দার জেমস বন্ডরা। —ফাইল চিত্র
কিন্তু তা কী করে সম্ভব? দুনিয়া জানে, জেমস বন্ড তো আসলে আয়ান ফ্লেমিংয়ের মানসসন্তান। এখানেই গল্পের আসল ‘টুইস্ট’। সোফি জানাচ্ছেন, যে সময়ে ইয়ো-টমাস ব্রিটিশ গুপ্তচর হিসাবে কাজ করতেন, ঠিক একই সময়ে আয়ান ফ্লেমিং-ও ব্রিটিশ গোয়েন্দা দফতরে কর্মরত ছিলেন। এমনকী, ইয়ো-টমাসের গতিবিধির ব্যাপারে ফ্লেমিং যথেষ্ট উৎসাহী ছিলেন বলেও জানতে পেরেছেন সোফি। অতএব দুইয়ে দুইয়ে চার। সোফির দাবি, জেমস বন্ড আসলে ইয়ো-টমাসেরই তুতো ভাই! তাঁদের মধ্যে সম্পর্কটা আসলে বাস্তব-কল্পনার মেলবন্ধন। নিজের মতামত নিয়ে একটা বইও লিখে ফেলেছেন সোফি। নাম, “চার্চিলস হোয়াইট র্যাবিট: দা ট্রু স্টোরি অফ আ রিয়েল-লাইফ জেমস বন্ড।” যা নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে বন্ড-ভক্ত থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞদের মধ্যেও।
তবে তরজা-পাল্টা তরজার মধ্যেও সোফির দাবিকে উড়িয়ে দিতে পারছেন না কেউই। বন্ডের সঙ্গে ইয়ো-টমাসের যে অন্তহীন মিল।
যেমন ব্রিটিশ নথি বলছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন অন্তত তিন তিন বার জার্মানি অধিকৃত ফ্রান্সে পাঠানো হয়েছিল ইয়ো-টমাসকে। সেই সময়ই এক বার গেস্টাপোর হাতে ধরা পড়েন তিনি। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে বুখেনওয়াল্ড কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেয় গেস্টাপো। তবে সেখান থেকেও পালিয়ে এসেছিলেন ইয়ো-টমাস। মহাফেজখানার নথি থেকে জানা যাচ্ছে, পুরো ঘটনাটি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন আয়ান ফ্লেমিং। এমনকী, সহকর্মীদের সেই অভিযানের গল্পও শুনিয়েছিলেন তিনি। কাকতলীয় ভাবে সেই ঘটনার সঙ্গে বন্ড-সিরিজের প্রথম গল্প ‘ক্যাসিনো রয়্যালের’ আশ্চর্য মিল রয়েছে। যে ভাবে ইয়ো-টমাসের উপর অত্যাচার চালিয়েছিল গেস্টাপো, ক্যাসিনো-রয়্যালে ঠিক একই রকম ভাবে নির্যাতিত হতে দেখা গিয়েছে বন্ডকে।
শুধু নির্যাতনের নিরিখেই নয়, ইয়ো-টমাসের সঙ্গে জেমস বন্ডের মিল রয়েছে তাঁদের প্রায় রূপকথার নায়ক সুলভ হাবভাবেও। উপন্যাসের পাতা থেকে শুরু করে রুপোলি পর্দা সর্বত্রই সুপুরুষ চেহারার বন্ডকে দেখা গিয়েছে লাস্যময়ী নারী পরিবেষ্টিত হয়ে থাকতে। সোফির তথ্য বলছে, ব্যক্তিগত জীবনে ইয়ো-টমাসও প্রায় এ রকমই ছিলেন। এবং ঠিক বন্ডের মতোই কখনও চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়ে, আবার কখনও বা ছদ্মবেশে শত্রুর চোখে ধুলো দিয়ে পালাতেন তিনি।
এ হেন ইয়ো-টমাসের সমসাময়িক হওয়ার সুবাদে ফ্লেমিং তাঁর বন্ডের যাবতীয় মালমশলা পেয়েছিলেন বাস্তব থেকেই। সেই বাস্তব যেখানে এক ‘লার্জার দ্যান লাইফ’ নায়ককে জানতে পেরেছিলেন ফ্লেমিং। এবং সেই দুঃসাহসিকতাকেই হয়তো কুর্নিশ জানাতে তৈরি করেছিলেন ‘শ্রেষ্ঠ’ ব্রিটিশ গুপ্তচরকে। যিনি স্পর্ধায় কিংবা আত্মবিশ্বাসে নিজের পরিচয় দিতে পারতেন, “বন্ড, জেমস বন্ড।”

গুড়গাঁওয়ে ফ্যাশন শোয়ে অমিষা
পটেল। ছবি: পি টি আই

নিজের ছবির প্রচারে অমিতাভ
বচ্চন। ছবি: এ এফ পি
কলকাতায় ফ্যাশন শোয়ে বলিউড অভিনেত্রী চিত্রাঙ্গদা সিংহ। রবিবার উৎপল সরকারের তোলা ছবি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.