বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অদ্ভুতুড়ে আবিষ্কারে হাতের
মুঠোয় ‘বুদ্ধু নোবেল’

কানের কাছে লাগাতার একই ভ্যানভ্যান। “পড়া হল? এখনও হল না? কবে শেষ হবে? তোর দ্বারা আর পাশটাশ করা হবে না। পড়াশোনা ছেড়ে দে! হয়তো ছেলেটা কিংবা মেয়েটা পড়াশোনায় বেশ ভাল, তবু বাবা-মায়ের এই কথাগুলো ক্রমাগত শুনে যেতে হয় অসহ্য লাগলেও। এই বাবা-মায়েদের ‘বাক্যিহারা’ করতে জাপানের দুই বিজ্ঞানী তৈরি করেছেন আজব যন্ত্র। ‘স্পিচ জ্যামার’। আর তাতেই তাঁরা জিতে ফেললেন উল্টো ‘নোবেল’। ‘ইগ নোবেল’।
‘ইগ’ এসেছে ইংরেজি ইগনোর্যান্ট শব্দটাকে কেটেছেঁটে। নোবেলের পাল্টা এই প্যারোডি পুরস্কারটি মার্কিন ‘আবিষ্কার’। ১৯৯১ থেকে প্রতি বছর অক্টোবরের আগে আগে এই বিশেষ ‘সম্মান’ দিয়ে আসছে ‘অ্যানাল অফ ইমপ্রোবাবেল রিসার্চ’ পত্রিকা। অবশ্যই ‘হাস্যকর’ আবিষ্কারের জন্য। তাদের কথায়, “ আগে লোককে হাসাও, তার পর খানিক ভাবাও।”
জাপানের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অ্যাডভান্সড ইন্ডাস্ট্রিয়াল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’র কাজুতাকা কুরিহারা এবং কোজি সুকুরার ‘স্পিচ জ্যামার’ যন্ত্রটা অনেকটা ‘বিপদঘন্টির’ মতো। অন্যদের সুযোগ না দিয়ে কেউ একনাগাড়ে অনর্গল কথা বলতে থাকলেই, বিকট আওয়াজে সেই কথাগুলোরই প্রতিধ্বনি শোনাতে শুরু করে অদ্ভুতুড়ে যন্ত্রটা। বার্তা ভীষণ স্পষ্ট ‘রক্ষে করো, এ বার থামো’।
সুইডিশ বিজ্ঞানী অ্যালফ্রেড নোবেলের সম্মানে নরওয়ের স্টকহোমে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয় ছ’টি বিভাগে। ‘ইগ নোবেল’ আরও এগিয়ে। শান্তি থেকে রসায়ন, মনস্তত্ত্ব বা ওষুধ, অ্যানাটমি দশ-দশটা বিভাগে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। এ বছরের প্রাপকদের মধ্যে রয়েছে মার্কিন সরকারের অ্যাকাউন্টিবিলিটি অফিসও। দামিনী ছবিতে সানি দেওলের বহুচর্চিত ডায়ালগ ‘তারিখ পে তারিখ, তারিখ পে তারিখ’-এর মতোই রিপোর্টের জন্য রিপোর্ট, তার জন্য রিপোর্ট, আবার তারও জন্য রিপোর্ট দেওয়ায় বিশেষ ‘কৃতিত্বের’ অধিকারী তারা। সেই তাড়াতাড়া রিপোর্ট পেশের জন্য এ বার সাহিত্যের ইগ নোবেলে ভূষিত হয়েছে ওই দফতর।
মাথায় ঢেউ খেলানো চুলের রাশি। কিন্তু এই ঢেউ ওঠে কী ভাবে? তা নিয়েই গবেষণা শুরু করেছিলেন ব্রিটেন ও আমেরিকার চার ‘গবেষক’। তাঁরাই ছিনিয়ে নিলেন পদার্থবিদ্যায় বিশেষ সম্মান। এ দিন হার্ভার্ডের স্যান্ডার্স থিয়েটারে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রমাণ হয়ে গেল মড়া মাছের দামও ‘লাখ টাকা’। মড়া মাছের মস্তিষ্কের গঠন বিচার করেই চার মার্কিন বিজ্ঞানী পেয়ে গেলেন ইগ নোবেল।
রং না করেই চুল সবুজ হয়ে যায় কী ভাবে? এই ছিল জোহান প্যাটারসনের গবেষণার বিষয়বস্তু।
সবুজ রঙের চুল! এ-ও আবার হয় নাকি? হয়েছে, এ রকমই হয়েছে সুইডেনের অ্যান্ডারসল্ভ শহরে। হঠাৎ করেই অনেকের সোনালি চুল বদলে গিয়েছে সবুজে। সে রহস্য উদ্ধার করতে গিয়ে প্যাটারসন মাথা খাটিয়ে দেখেন, জলের পাইপে তামার প্রলেপ কাঁচা রয়ে গিয়েছে। আর তাতেই এই উদ্ভট কাণ্ড। গরম জলে তামা মিশে গিয়েই বিনা ‘হেয়ার কালার’-এ বদলে গিয়েছে চুলের রং। “আমার ছেলেই বলে, আমি নাকি খানিক ছিটিয়াল”, সহজ স্বীকারোক্তি প্যাটারসনের। তবে প্যাটারসনের ইগ নোবেল জয়ে খুব খুশি তাঁর ছোট ছেলে।
নেদারল্যান্ডসের বিজ্ঞানী অ্যানিটা এরল্যান্ড আর তাঁর সহকর্মীরা অবশ্য খুব বেশি মাথা খাটাননি। বরং মাথাটা বাঁ দিকে হেলিয়ে প্রমাণ করে দিয়েছেন, আইফেল টাওয়ারটা এ ভাবে ‘ছোট’ দেখায়। তাতেই তাঁরা পেয়ে গিয়েছেন মনস্তত্ত্বে বিশেষ সম্মান। আবার শিম্পাঞ্জিরা যে জাতভাইয়ের ছবি দেখেই প্রত্যেককে আলাদা করে চিনতে পারে, তার প্রমাণ দিয়ে অ্যানাটমির পুরস্কারটা বাগিয়ে নিলেন নেদারল্যান্ডস ও আমেরিকার দুই বিজ্ঞানী।
ধন-সম্পদের জন্য দেশে-দেশে যুদ্ধ। কত না মানুষ প্রাণ হারান গোলার মুখে। নিজের দেশের এমন কিছু গোলা থেকেই হিরে সংগ্রহ করে রুশ বিজ্ঞানীরা পেলেন ‘শান্তি’ পুরস্কার।
হাঁটতে হাঁটতে কাপ থেকে কফি কেন উথলে পড়ে? তরল পদার্থের এমন স্বভাবের জটিল কারণ বিশ্লেষণ করে চার বিজ্ঞানী ইগ নোবেল পেলেন ‘ফ্লুইড ডায়নামিক্স’-এ। আর আক্ষরিক অর্থেই স্যান্ডার্স থিয়েটারে ঝড় তুললেন কফির কাপে।
তবে হোক না বিষয়গুলি অদ্ভুতুড়ে, নামে জুড়ে থাক ‘বুদ্ধু’, ইগ নোবেলকে কুর্নিশ জানালেন নোবেলজয়ীরাও। পুরস্কার তুলে দিলেন নিজের হাতেই।

মঙ্গলে পাঠাতে উপগ্রহের কাঠামো তৈরি হ্যালের
প্রযুক্তিগত দিক থেকে নাসার সঙ্গে টক্কর দিতে এ বার প্রস্তুতি শুরু করে দিল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। কয়েক দিন আগেই ইসরোর একশোতম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের দিন প্রধানমন্ত্রীর সামনেই মঙ্গলে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন ইসরোর চেয়ারম্যান কে রাধাকৃষ্ণন। সেই কারণে হিন্দুস্তান এরোনটিকস লিমিটেড (হ্যাল)-কে উপগ্রহের কাঠামো তৈরির বরাতও দেওয়া হয়েছিল। আজ সেই কাঠামো তৈরি করে ইসরোর হাতে দিল হ্যাল। মূলত উপগ্রহের জ্বালানি চেম্বারের জন্য মৌমাছির চাকের মতো দেখতে ধাতুর তৈরি কাঠামো আর সেন্ট্রাল কম্পোসিট সিলিন্ডার তৈরির দায়িত্ব হ্যালকে দেওয়া হয়েছিল বলে জানালেন সংস্থার চেয়ারম্যান আর কে ত্যাগী। ২০১৩-র অক্টোবরে মঙ্গলের উদ্দেশে যাত্রা করার কথা এই উপগ্রহের। ইসরোর তরফে জানানো হয়েছে, লাল গ্রহের আবহাওয়া, ভূপ্রকৃতি এবং উৎপত্তি নিয়ে তথ্য পাঠাবে এই উপগ্রহ।

অগ্নি-৩ সফল
পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম অগ্নি-৪ এর পর সফল হল অগ্নি-৩-এর পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ। যা ৩০০০ কি.মি দূরের লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুলভাবে আঘাত করতে পারে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.