শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ কুলতলির স্কুলে
নিয়মিত নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে আসেন না, এই অভিযোগ তুলে কুলতলির অম্বিকানগর হাইস্কুলের কয়েক জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে প্রায় ৪০ মিনিট ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবকদের একাংশ। বুধবার সকালে স্কুলের গেটের সামনেই ওই বিক্ষোভ হয়। শেষমেশ পুলিশি হস্তক্ষেপে ওই শিক্ষক-শিক্ষিকারা স্কুলে ঢুকতে পারেন। তাঁদের অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরা তাঁদের উদ্দেশে কটূক্তিও করেন।
যে অভিযোগ তুলে এ দিন বিক্ষোভ হয়, সেই একই অভিযোগ রয়েছে স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং পরিচালন সমিতির সম্পাদকেরও। ওই শিক্ষক-শিক্ষিকারা অবশ্য স্বীকার করেছেন, জয়নগর স্টেশন থেকে স্কুল, প্রায় ৫০ কিলোমিটার পথ আসতে বর্ষার মরসুমে তাঁদের মাঝেমধ্যে কিছুটা দেরি হয়। কিন্তু নিয়মিত দেরির অভিযোগ মিথ্যা বলে তাঁদের দাবি।
ওই স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ১১০০ ছাত্রছাত্রীর জন্য ১৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং ৫ জন পার্শ্বশিক্ষক রয়েছেন। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে ১৩ জন গত ৬-৭ বছরের মধ্যে নিযুক্ত হয়েছেন। তাঁদের কারও বাড়ি কলকাতায়, কারও হাওড়ায়, কারও বারুইপুরে, কেউ বা জয়নগরে বাড়ি ভাড়া করে থাকেন। প্রত্যেকেই ট্রেনে জয়নগর স্টেশনে আসেন। তার পরে অটোরিকশায় ৩২ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে আসেন ঢাকি খেয়াঘাট। সেখান থেকে ঠাকুরান নদী পেরিয়ে আবার ১৮ কিলোমিটার ইটের রাস্তা অটোতে পাড়ি দিয়ে তাঁরা স্কুলে পৌঁছন। স্কুল শুরু হয় সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, বেশির ভাগ দিনই ওই ১৩ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা দেরি করে স্কুলে আসেন। এতে পঠনপাঠন ব্যাহত হয়। মঙ্গলবার তাঁদের কেউই আসেননি। এ নিয়েই বুধবার স্কুলের গেটের সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়। একে একে শিক্ষক-শিক্ষিকারা এসে পৌঁছলে তাঁরা ঘেরাওয়ের মুখে পড়েন। বিক্ষোভকারীদের পক্ষে গৌতম নাইয়া বলেন, “ওই শিক্ষক-শিক্ষিকারা প্রায়ই দেরি করে স্কুলে আসেন। মঙ্গলবার কেউই কেন এলেন না, সে ব্যাপারেই আমরা জানতে চেয়েছিলাম। ওঁরা আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।” সনাতন মণ্ডল নামে আর এক বিক্ষোভকারী বলেন, “ওঁরা বেশির ভাগ দিন দল বেঁধে স্কুলে আসেন। সে কারণেই দেরি হয়।”
প্রধান শিক্ষক পঙ্কজকুমার মাইতি বলেন, “ওই ১৩ জনের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা ঠিকই। ওঁরা সময়মতো স্কুলে আসেন না। আমাকে না জানিয়ে অনুপস্থিত থাকেন। আমার কোনও কথা শোনেন না। যাতায়াতের সমস্যা থাকতেই পারে। কিন্তু প্রতিদিন দেরি হবে কেন? সমস্ত বিষয়টি জেলা স্কুল পরিদর্শককে জানানো হয়েছে।” স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক সুব্রত মহাপাত্র বলেন, “ওই ১৩ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়মিত না আসায় মাস তিনেক আগে হওয়া ইউনিট পরীক্ষার ফল এখনও জানতে পারেনি পড়ুয়ারা। স্কুলে পঠনপাঠনে সমস্যা হচ্ছে।”
ওই ১৩ জনের মধ্যে ৮ জন শিক্ষিকা রয়েছেন। শিক্ষক সন্দীপকুমার বিশ্বাস বলেন, “বর্ষায় রাস্তার অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। সেই কারণে বর্ষার মরসুমে স্কুলে আসতে কিছুটা দেরি হয় ঠিকই। কিন্তু নিয়মিত দেরি করে আসার কথা ঠিক নয়।” একই বক্তব্য শিক্ষিকা সোমা বেরারও। কিন্তু ১৩ জনের কেউই মঙ্গলবার এলেন না কেন?
সন্দীপবাবু এবং সোমাদেবী বলেন, “অগস্ট মাসের বেতন আমরা এখনও পাইনি। স্কুলে আটকে রয়েছে। এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য মঙ্গলবার জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে গিয়েছিলাম আমরা। সেই কারণে আসিনি। আমাদের যাওয়ার কথা প্রধান শিক্ষককে বলা হয়েছিল।” প্রধান শিক্ষক জানান, দিন কয়েক এক আলোচনায় ওই ১৩ জনের কেউই হাজির ছিলেন না। সেই কারণে তাঁদের এখনও বেতন দেওয়া যায়নি। তবে, দু’এক দিনের মধ্যেই দেওয়া হবে। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক দিব্যজ্যোতি বড়াল বলেন, “সমস্যার বিষয়ে শুনেছি। শীঘ্রই প্রতনিধি দল পাঠিয়ে বিস্তারিত খতিয়ে দেখে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.