বেনজির ভুট্টোর নির্দেশেই দু’টি দেশকে পরমাণু প্রযুক্তি সরবরাহ করেছিল পাকিস্তান। একটি সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন পাক পরমাণু বিজ্ঞানী আব্দুল কাদির খান। পরমাণু প্রযুক্তির বেআইনি লেনদেনে অভিযুক্ত হয়েছিলেন খান।
উত্তর কোরিয়া ও লিবিয়ার মতো দেশকে পরমাণু প্রযুক্তি সরবরাহ করেছিলেন খান। বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তিতে পড়ে পাকিস্তান। প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশারফের আমলে তাঁকে গৃহবন্দি করা হয়। টিভিতে পরমাণু প্রযুক্তি পাচারের কথা স্বীকার করে নেন তিনি। পরে অবশ্য খান দাবি করেন, চাপের মুখে ওই স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি খানের গতিবিধির উপরে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে পাকিস্তান পিপলস পার্টির সরকার। তবে আগে কখনও পরমাণু প্রযুক্তি হস্তান্তরের বিষয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর কথা উল্লেখ করেননি খান।
খানের দাবি, দু’টি দেশকে পরমাণু প্রযুক্তি সরবরাহ করার বিষয়ে তাঁকে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন বেনজির। নির্দেশ মানা ছাড়া তাঁর সামনে অন্য কোনও পথ খোলা ছিল না। দেশ দু’টির নাম অবশ্য তিনি উল্লেখ করেননি।
খানের বক্তব্য, আমেরিকা পাকিস্তানকে টুকরো টুকরো করতে চায়। সেই কারণেই ভারতের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর করতে চাপ দিচ্ছে ওয়াশিংটন। তাঁর মতে, পাকিস্তানের উচিত নিজের স্বার্থেই ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা। তাঁর মতে, এখন ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক ঠিক পথেই এগোচ্ছে।
পাকিস্তানের রাজনীতিকদের সম্পর্কে নিজের মত স্পষ্ট ভাবেই জানিয়েছেন খান। তাঁর বক্তব্য, প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি রাজনীতির দিক থেকে জেনারেল জিয়া-উল হক ও নওয়াজ শরিফকে ছাড়িয়ে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছেন। ইমরান খানকে নিয়ে অনেক আশা ছিল খানের। কিন্তু, প্রাক্তন ক্রিকেটারের রাজনৈতিক চিন্তা-ভাবনা এখনও পরিণত হয়নি বলে দাবি তাঁর। খানের বক্তব্য, ইমরানের উপরে যাঁরা ভরসা করছেন তাঁরা হতাশ হবেন। ১৯৯৮ সালের পরমাণু বিস্ফোরণের পুরো কৃতিত্বই দাবি করেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। কিন্তু, শরিফ আদৌ বিস্ফোরণ ঘটাতে আগ্রহী ছিলেন না বলে দাবি করেছেন খান। তাঁর দাবি, আমেরিকা ক্ষুব্ধ হলে তাঁর সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিতে পারে বলে মনে করতেন শরিফ। তা-ই কয়েক জন সহযোগীর মাধ্যমে খানকে নিরস্ত করতে চেয়েছিলেন তিনি। খানের দাবি, তিনি পুরো বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করার হুমকি দেন। ফলে, বিস্ফোরণে সায় দিতে শরিফ বাধ্য হন। |