নালিশ আসানসোলে
পর্ষদের নির্দেশ সত্ত্বেও দূষণ ছড়াচ্ছে রেল ইয়ার্ড
দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য রেলকে নির্দেশ দিয়েছে পর্ষদ। কিন্তু তা সত্ত্বেও পণ্য তোলা-নামার সময়ে দূষণ ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন রেল ইয়ার্ডের আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা। পূর্ব রেলের আসানসোলের ডিআরএম এসএস গেহলোত বলেন, “আমরা দূষণ সৃষ্টিকারী পণ্য তোলা-নামা আস্তে আস্তে কমিয়ে আনছি। এক বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে।”
আসানসোল স্টেশনের পশ্চিম প্রান্তে রয়েছে এই রেল ইয়ার্ডটি। আশপাশে রয়েছে আসানসোল পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের আপকার গার্ডেন, কল্যাণপুর, বিবেকানন্দ পল্লি, করুণাময়ী ইত্যাদি এলাকা। এই সব এলাকার প্রায় পঁচিশ হাজার বাসিন্দা রেল ইয়ার্ড থেকে ছড়ানো দূষণে ভুগছেন বলে অভিযোগ। প্রতি দিন প্রচুর পরিমাণে লোহা-আকর, কয়লার গুঁড়ো, সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল ইত্যাদি ওঠা-নামা করে এই ইয়ার্ডে। সে সব থেকেই ছড়ায় দূষণ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় সাত বছর ধরে এই সমস্যায় ভুগছেন তাঁরা।
—নিজস্ব চিত্র।
অভিজাত ওই সব এলাকায় গেলেই দূষণের নমুনা বোঝা যায়। স্থানীয় বাসিন্দা মলয় রায় বাড়ির ভিতরে নিয়ে গিয়ে দেখালেন, মেঝেতে ধুলোর পুরু আস্তরণ পড়েছে। তিনি বলেন, “বারবার ঘর সাফাই করেও এই আস্তরণ তোলা যায় না।” আর এক বাসিন্দা কৃষ্ণেন্দু ঘোষের খেদ, “প্রতি দিন খাবারের সঙ্গে মুঠো মুঠো ধুলো পেটে যাচ্ছে। এখানে তো ধুলো পড়ে দুধের রঙও কালো হয়ে যায়।” বাসিন্দাদের দাবি, শিশু ও বয়স্ক মানুষেরা সব চেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন। অনেকের চর্মরোগ হচ্ছে। শ্বাসকষ্টেও ভুগছেন অনেকে।
এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে স্থানীয় বাসিন্দারা রেল কর্তৃপক্ষ, রাজ্য সরকার, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে অনেক বার আবেদনপত্র পাঠিয়েছেন। পথ অবরোধ করেছেন, বিক্ষোভ-অবস্থানও করেছেন একাধিক বার। তবু ফল মেলেনি বলে তাঁদের অভিযোগ। সম্প্রতি স্থানীয় বাসিন্দারা ফের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে আবেদন করেন। এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের কাছেও ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। মলয়বাবু নিজে আপকার গার্ডেন এলাকার বাসিন্দা। তিনি বলেন, “সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। শীঘ্র সমস্যা মিটবে।” দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাসিন্দাদের অভিযোগ পেয়ে পর্ষদ কর্তৃপক্ষ রেল কর্তৃপক্ষকে একাধিক বার শুনানিতে ডেকেছে। পর্ষদ কর্তারা জানান, দূষণ ছড়াচ্ছে এ রকম কোনও পণ্য এই রেল ইয়ার্ডে ওঠা-নামা করা যাবে না বলে রেলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আসানসোলের অতিরিক্ত জেলাশাসক জয়ন্ত আইকতের বক্তব্য, “রেল কর্তৃপক্ষ নিশ্চয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশ মানবে।”
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশ সত্ত্বেও দূষণ বন্ধ হচ্ছে না, এই অভিযোগ প্রসঙ্গে আসানসোলের ডিআরএম এস এস গেহলোত জানান, বরাচক ও সীতারামপুরে দু’টি রেল ইয়ার্ড গড়া হচ্ছে। সেগুলি শেষ হতে কিছু সময় লাগবে। অন্ডাল ও তপসির রেল ইয়ার্ডটিও কাজে লাগানো হবে। সে ক্ষেত্রে আসানসোলের ইয়ার্ডে শুধু খাদ্যপণ্য তোলা-নামার কাজ হবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, যত দিন দূষণ সৃষ্টিকারী পণ্য ওঠা-নামা চলবে, এই ইয়ার্ড ও পাশ্ববর্তী এলাকায় জল ছিটানোর ব্যবস্থা করতে হবে রেলকে। ইয়ার্ড সংলগ্ন ফাঁকা জমিতে গাছও লাগাতে হবে। ডিআরএমের আশ্বাস, বাসিন্দাদের দাবি বিবেচনা করা হবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.