দক্ষিণ কলকাতা: বেহালা
কবরডাঙা
গন্ধমাদন
রোজ সকাল হলেই আঁশটে গন্ধে ভরে যায় চারপাশ। তা এমনই জোরালো যে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘরের দরজা-জানলাও খুলে রাখতে পারেন না এলাকাবাসী। শুধু তা-ই নয়, সকালে বসা মাছের বাজারের নোংরা জল ডিঙিয়েই যাতায়াত করতে হয় সকলকে। কবরডাঙার পাইকারি মাছের বাজার নিয়ে এমনই অসংখ্য অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁদের দাবি: অবিলম্বে এই পাইকারি মাছের বাজারের সংস্কার করে চরম ভোগান্তি থেকে তাঁদের মুক্তির ব্যবস্থা করা হোক।
শুধু দুর্গন্ধ, নোংরা জল আর আবর্জনাই নয়। অভিযোগ তীব্র যানজট নিয়েও। কেওড়াপুকুর, কবরডাঙা ও ঠাকুরপুকুর এলাকার বাসিন্দারা বেহালা এবং টালিগঞ্জে যাতায়াতের জন্য এই বাজার সংলগ্ন রাস্তাটিই ব্যবহার করেন। তাঁদের বক্তব্য: রোজ সকালে বাজার বসার জন্য রাস্তাটি আর হাঁটাচলার উপযোগী থাকে না। যানজটও নিত্য ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেহালার মহাত্মা গাঁধী রোডের পাশে কবরডাঙার এই মাছের বাজারটি দীর্ঘ দিনের। এখান থেকেই বেহালা-সহ দক্ষিণ শহরতলির বিভিন্ন বাজারে বিক্রির জন্য পাইকারি দরে মাছ কিনে নিয়ে যাওয়া হয়। বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে এখানে মাছ বিক্রি করি আমরা। বাজারটির সংস্কার হোক, তা আমরাও চাই। কিন্তু আমাদের কেউ এই ধরনের প্রস্তাব দেয়নি।”
এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, রাস্তার উপরেই চলছে মাছের বিকিকিনি। বিভিন্ন জায়গায় নোংরা কালো জল জমে আছে। জল-কাদার উপর দিয়েই চলাচল করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রমেশ রায় নামে এক বাসিন্দার কথায়: ‘‘এই দুর্ভোগ দীর্ঘ দিনের। বহু জায়গায় সমস্যা সমাধানের জন্য আবেদন জানিয়েছি। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি।”
বাজারের রাস্তাটি দেখভালের দায়িত্ব রাজ্য পূর্ত ও সড়ক বিভাগের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার হাইওয়ে ডিভিশনের। পূর্ত দফতরের খাতায় রাস্তাটির নাম ঠাকুরপুকুর-টালিগঞ্জ সার্কুলার রোড। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার হাইওয়ে ডিভিশনের কার্যনির্বাহী বাস্তুকার বিনয় মজুমদার বলেন, “ওই রাস্তায় সব সময়ে বাজারের জল জমে থাকে। ফলে রাস্তাটি বার বার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আবার বর্ষার পরে ওই রাস্তাটি মেরামতের ব্যবস্থা করব।”
কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কবরডাঙা মাছের বাজারটি এত দিন জোকা এক নম্বর পঞ্চায়েত এলাকার অন্তর্গত ছিল। সম্প্রতি ওই এলাকা কলকাতা পুরসভার আওতায় এসেছে। এলাকার বিধায়ক এবং কলকাতা পুরসভার মেয়র তৃণমূলের শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ওই এলাকাটি সবে কলকাতা পুর-এলাকার মধ্যে এসেছে। এ বার আমরা ওখানকার সমস্যা সমাধানের জন্য পরিকল্পনা করব।”

ছবি: পিন্টু মণ্ডল




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.