সু-বক্তা হিসেবে তাঁর যথেষ্ট নাম আছে। কিন্তু দরকারি কথাটা সহজ ভাবে তুলে ধরতে তাঁর পূর্বসূরি যে আরও বেশি দড়, তা বোঝা গেল বুধবার রাতে।
ডেমোক্র্যাটদের জাতীয় কনভেনশনের দ্বিতীয় দিন। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সমর্থনে মঞ্চে আমেরিকার ৪২তম প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম জেফারসন ক্লিন্টন। সেই বিল ক্লিন্টন, প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের তালিকায় তিনি এখনও জনপ্রিয়তার শীর্ষে। নানা বিতর্কের পরেও।
ওবামার বক্তৃতায় থাকে নানা অনুষঙ্গ, পদ্যের ছোঁয়া। কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে সাধারণ ভাষায় সহজ কথা পৌঁছে দেওয়ার ব্যাপারে তাঁর উপর বিশেষ ভরসা করা চলে না। দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কেন আমেরিকাবাসী তাঁকে ভোট দেবেন, এই চার বছরে তিনি কী কী কাজ করেছেন, আগামী চার বছরেই বা কী করতে চান, সেই বার্তাটা সাধারণ মানুষের কাছে সোজাসাপ্টা ভাবে পৌঁছে দেওয়া দরকার ছিল। আর সেই কাজটাই দারুণ ভাবে করলেন বিল ক্লিন্টন। তিনি যা বললেন, এবং যে ভাবে বললেন, তা প্রেসিডেন্ট ওবামার নিজস্ব বলার ঢং ও বিষয়বস্তু থেকে অনেকটাই আলাদা। ওবামার ‘পদ্যের’ সম্পূর্ণ বিপরীতে তাঁর ‘গদ্য’। সহজ সরল। দীর্ঘ। কিন্তু টানটান। |
কী বললেন ক্লিন্টন? বললেন, “প্রেসিডেন্ট ওবামা উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলেন এক বিপর্যস্ত অর্থনীতি। সেই ভঙ্গুর অর্থনীতিকে সম্পূর্ণ ভাবে ধসে পড়া থেকে বাঁচিয়েছেন তিনি। পায়ের তলায় একটা শক্তপোক্ত মেঝে তৈরি করে।” পঞ্চাশ মিনিটের বক্তৃতায় বিভিন্ন দরকারি বিষয় তুলে আনলেন স্বাস্থ্য পরিষেবা, কর্মসংস্থান, আউটসোর্সিং, পড়ুয়াদের জন্য স্কলারশিপ। ‘এক-দুই-তিন’ করে ছুঁয়ে গেলেন সব কিছু।
দিন দু’য়েক আগেই রিপাবলিকান কনভেনশনে মঞ্চে একটা খালি চেয়ার রেখে ‘অনুপস্থিত’ প্রেসিডেন্ট ওবামার সঙ্গে কাল্পনিক সংলাপ চালিয়েছিলেন ক্লিন্ট ইস্টউড। বিল ক্লিন্টনের বক্তৃতাও ছিল সংলাপধর্মী। উপস্থিত দর্শকদের বার বার টেনে আনতে চেয়েছেন নিজের বক্তব্যের বৃত্তে। দর্শকরাও তাঁকে নিরাশ করেননি। তাঁর বক্তৃতা জুড়ে তুমুল হাততালি। বহু বার। আদালত কক্ষে বিচারপতির সঙ্গে আইনজীবী যে ধরনের সংলাপে নামেন, ক্লিন্টনের ‘সংলাপ’ ছিল অনেকটা সেই ধাঁচের। স্বাভাবিক। এই বিল ক্লিন্টনই তো রাজনীতিতে নামার আগে ‘ইয়েল ল স্কুলের’ প্রথম সারির ছাত্র ছিলেন। সেখানেই তাঁর সঙ্গে আলাপ হয়
হিলারি রডহ্যামের।
গত বার নির্বাচনের গোড়ার দিকে ওবামার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন হিলারি। দলীয় ভোটে হেরে যাওয়ার পরে ওবামার সমর্থনে বহু প্রচার করেছেন ক্লিন্টন দম্পতি। তাতে ওবামার ঝুলিতে ভোটের সংখ্যা বেড়েছে, বই কমেনি। এ বারেও সেই ক্লিন্টন ম্যাজিকের ফায়দা তুলতে চান ওবামার প্রচারের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকেরা। |