কয়েক দিন ধরেই দূরবীক্ষণে দেখা মিলছিল তাদের। কিন্তু আজ সকালে যার দেখা মিলেছে, আকার আর শক্তিতে সে অন্য সবাইকে হারিয়ে দিয়েছে। সে আর কেউ নয় একটা সৌর শিখা। বা বিজ্ঞানীদের ভাষায় ‘সৌর চাবুক’। দৈর্ঘে মাত্র ৮ লক্ষ কিলোমিটার। তার কাছে পৃথিবী একটা
ছোট্ট বলের মতো। আর এই সৌর চাবুকের তেজ দেখেই চিন্তায় বিজ্ঞানীরা। কারণ এই সৌর চাবুকের সঙ্গে মহাশূন্যে আছড়ে পড়েছে তেজস্ক্রিয় কণার বিশাল একটা মেঘ।
নাসার সোলার ডায়নামিকস অবজারভেটরি (এসডিও) গত ৬ থেকে ৮ অগস্ট সৌর শিখার বিভিন্ন ছবি পাঠিয়েছে নাসার গবেষণাগারে। সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সূর্য থেকে একটা বিশাল লাল রঙের শিখা কিছুটা বেঁকে গিয়ে আছড়ে পড়ছে মহাশূন্যে। নাসার মতে, কয়েক মাস স্থায়ী হবে এই শিখা বা চাবুক। সূর্য পৃষ্ঠে হাইড্রোজেন আর হিলিয়াম আয়নের প্লাজমা দিয়ে তৈরি চাবুকের মতো দেখতে এই শিখার তাই নাম রাখা হয়েছে সৌরচাবুক। |
নাসার তরফে জানানো হয়েছে, মহাকাশের সীমা ছাড়িয়ে এর প্রভাব পড়তে চলেছে পৃথিবীতে। বুধবার সকালের মধ্যেই সম্ভবত পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আছড়ে পড়বে তেজস্ক্রিয় কণার মেঘ। তৈরি হবে ভূচৌম্বক ঝড়। বিজ্ঞানীদের সতর্কতা, এর প্রভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের বিদ্যুৎ পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটতে পারে। বিগড়ে যেতে পারে পৃথিবীকে ঘিরে ঘুরে চলা বিভিন্ন কৃত্রিম উপগ্রহ। এমনকী, এই ভূচৌম্বক ঝড় সাময়িক ভাবে বদলে দিতে পারে মেরুজ্যোতির অবস্থান। ফলে উত্তর মেরুর বদলে এই জ্যোতির দেখা মিলতে পারে উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন অংশে।
তবে এই ভূচৌম্বক ঝড়ের যতই কুপ্রভাব থাকুক না কেন, এই ঝড় নিয়ে নাসার গবেষণাগারে রীতিমতো সাজো সাজো রব। কারণ নাসার মতে, এই ঝড়ের প্রভাব পরীক্ষা করে সূর্যের অনেক অজানা রহস্যের সমাধান মিলতে পারে। আর সেই রহস্যের সমাধানই হয়তো ভবিষ্যতে তৈরি করবে পৃথিবীর রক্ষাকবচ। আপাতত সেই আশাতেই রয়েছেন বিজ্ঞানীরা। |