বেড়ানো...
চলো লেট্স গো
বার পুজোয় বন্ধ থাকছে স্বপনদার চায়ের দোকান।
খবরটা জানাজানি হতেই গড়িয়া স্টেশন রোডের আড্ডামহলে জোর আলোচনা। কেন, কেন? সলজ্জ হেসে বারুইপুরের বাসিন্দা স্বপন দাস বলছেন, পুজোয় বাড়ির সকলকে নিয়ে বেড়াতে যাচ্ছি রাবণের দেশে। শ্রীলঙ্কায়। “দেখলাম কাশ্মীর যেতে যা খরচ, তাতে শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে। মেয়ে-বৌ-ও বলল, চলো। তাই আর কী..,” বিনয় করছেন ৪৫-এর চায়ের দোকানি।
হ্যাঁ, ঠিক এ ভাবেই, এ বার পুজোয় দেশের সঙ্গে সঙ্গে বিদেশে নির্দ্বিধায়, অক্লেশে পাড়ি জমাচ্ছে আপনার-আমার মতো আম-বাঙালি, বলছেন পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট আর নেশায় শখের ভ্রমণ গাইড পুষ্পেন্দু সামন্ত। তাঁর ব্রত, মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত বাঙালিকে প্লেনে চড়িয়ে বিদেশ ঘোরানোর ব্যবস্থা করা।
চিনের প্রাচীরে ফ্যামিলি পিকনিক, বা কুয়ালা লামপুরের পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার্সের সামনে বৌকে জড়িয়ে ছবি তোলা, টালার তপনবাবু বা বারাসতের মিনতিদেবীদের কাছে এখন জলভাত, জানাচ্ছেন শহরের এক ভ্রমণ সংস্থার কর্ণধার শেখর সিংহরায়ও।
পুজো ভ্রমণের ক্রেজে বিদেশের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে শ্রীলঙ্কা। আর দেশের মধ্যে কাশ্মীর। এক ভ্রমণ সংস্থার কর্ণধার, চন্দ্রমৌলি ঠাকুর বলছেন, “এই মুহূর্তে নিরাপত্তাজনীত কোনও ভয়ই নেই কাশ্মীরে। আর মাথাপিছু ১৫-২০ হাজার খরচ করলে দিন পাঁচেকের জন্য খুব আরামেই ঘুরে আসা যায়।”
আরেক ভ্রমণ সংস্থার কর্ণধার রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “তাইল্যান্ড হোক বা আন্দামান, বাঙালি আজকাল পয়সা খরচ করতে কসুর করছেন না। তাঁদের এখন একটাই চাহিদা-- খবচ করব যত। উশুল করব ততই।”
তা হলে দেখে নেওয়া যাক, পুজোর বাজারে হটস্পট কোনগুলো।

শ্রীলঙ্কা
ভ্রমণ-প্রিয় বাঙালির পছন্দের তালিকায় এ বার সবচেয়ে উপরে। কুম্ভকর্ণ-রাবণের দেশ। মুরলীধরন-জয়সূর্যদের দেশ। স্বপনবাবুর যেমন চার রাত-পাঁচ দিনের জন্য মাথাপিছু খরচ পড়ছে ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার। সঙ্গে যদি আপনি লাক্ষাদ্বীপ ঘুরে আসতে চান, মাথাপিছু ৪০ হাজার মতো পড়বে। যাওয়ার মাধ্যম অবশ্যই প্লেন। কম খরচের প্লেন আছে। তবে যত আগে প্ল্যান করবেন, তত ভাড়া কমে হবে। পুজোর সময়ে প্লেনভাড়া বেড়ে যায়। তাই যেতে গেলে এখুনি টিকিট বুক করুন। শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার জায়গা অনেক, তবে সব জায়গাই যে পর্যটকদের স্বর্গ, এমন না।

কী দেখবেন:
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ। কিন্তু ইতিহাস আর সংস্কৃতির চিহ্ন ইতিউতি সর্বত্র ছড়িয়ে। ক্যান্ডি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। বুদ্ধদেবের দাঁত এ শহরের দালাদা মালিগাওয়ায় আছে বলে কথিত। তা ছাড়া অনেক মন্দির, অভয়ারণ্য, জেলেদের গ্রাম হিক্কাদুয়া এবং হিক্কাদুয়া সৈকত, প্রবাল প্রাচীর, কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্র, হাতির অনাথালয়-এর মতো অগুনতি দেখার জায়গা।
স্বপনবাবুর স্ত্রী শুক্লাদেবীর ইচ্ছে হাতির দাঁতের জিনিস, মশলা, দুমবারা মাদুর, স্থানীয় গয়না কিনে আনার।

চেকলিস্ট
• ট্র্যাভেল ইন্স্যুরেন্স দেখে নিন, ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে জরুরি টিকাকরণও করিয়ে নেওয়া দরকার।
• ভারতীয়দের জন্য শ্রীলঙ্কায় পৌঁছেই ভিসা পাওয়া যায়। বিনা পয়সাতেই। তবে পুষ্পেন্দুবাবু সঙ্গে সঙ্গে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, মাথাপিছু অন্তত ৫০০ ডলার আছে কি না, সেটা আধিকারিকরা জানতে চান। পাসপোর্টের একাধিক ফোটোকপি সঙ্গে রাখুন। শ্রীলঙ্কার কোনও, কোনও জায়গায় ঢোকার আগে আধিকারিকরা পাসপোর্টের কপি জমা রাখেন।
• যে এলাকায় যাচ্ছেন, সেখানকার পুলিশের ফোন নম্বর জেনে নিন। কলকাতায় স্বজনদের ফোন নম্বরও এক জায়গায় লিখে পাসপোর্টের সঙ্গে রাখুন। গাইড কোনও স্থানীয় এলাকায় যেতে বারণ করলে তাঁর কথা শুনুন।
• বিদেশে চলে এ রকম সিম কার্ড বা নিজের মোবাইলে আন্তর্জাতিক রোমিং চালু করে নিন। আর ক্রেডিট কার্ড থাকলেও যথেষ্ট পরিমাণ স্থানীয় মুদ্রা সঙ্গে রাখা দরকার।
• হরিণ বা বাঘের ছাল এখানকার বাজারে পাওয়া গেলেও কিনবেন না। ও দেশে বৈধ হলেও আমাদের দেশে বিমানবন্দরে নামামাত্র ওগুলো শুল্ক বিভাগ বাজেয়াপ্ত করে নেবে।


কাশ্মীর
ভূস্বর্গ-র দিকে গত বছর থেকে বাঙালির ঢল। এখন উপত্যকার পরিবেশ শান্ত। পর্যটন আর শ্যুটিংয়ের জন্য চিরকালই কাশ্মীর স্বপ্নের দেশ। বহু দিন পর, এখন আবার যশ চোপড়া তাঁর ইউনিট নিয়ে সেখানে পৌঁছে গেছেন। শাহরুখ-ক্যাটরিনাকে নিয়ে তাঁর নতুন ছবি শ্যুটিংয়ের জন্য।

কী দেখবেন: তুষারাবৃত হিমালয়, ডাল লেক, হাউস বোট, শিকারা, গুলমার্গের বরফে স্কি করা, পহলগাম, শালিমার বাগ, নিশাদ বাগসব মিলিয়ে কাশ্মীরের আবেদন চিরকালীন। একেকজন ১৫-২০ হাজার খরচ করলে অনায়াসে পৃথিবীর অন্যতম সেরা অঞ্চলটি ঘুরে আসতে পারেন। জম্মু-কাটরা হয়ে বৈষ্ণোদেবীর মন্দির দেখতে যাওয়া বাঙালি টুরিস্টের আর এক শখের বিলাস। তাই বৈদ্যবাটির স্কুল শিক্ষক দম্পতি মিতাদেবী আর মিলনবাবুদের শেষমেশ কাশ্মীর যাওয়াই সাব্যস্ত হয়েছে বহু বাগবিতণ্ডার পরে।
‘থ্রি-ইডিয়টস’-এর পর থেকে বাঙালি আবার লাদাখ-মুখী হয়েছেন বলেও জানাচ্ছে পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত অনেকেই। লাদাখ অনেক বেশি শান্তিপূর্ণ, ঝঞ্ঝাট কম। প্লেনে গেলে লাদাখ যেতে মাথাপিছু কমপক্ষে ৪০ হাজার টাকা পড়বেই। তবে মানালি থেকে বা শ্রীনগর-কার্গিল হয়ে বাসেও লেহ পৌঁছনো যায়, সস্তায়।

চেকলিস্ট
• এখন শান্ত হলেও যে কোনও সময় অশান্ত হয়ে উঠতে পারে উপত্যকা। মিছিল, গ্রেনেড হানা, যা খুশি হতে পারে। ফলে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা যে কোনও পর্যটকের প্রথম দায়িত্ব। সেনা বা স্থানীয় মানুষ বারণ করছেন, এমন এলাকায় সাহস দেখিয়ে না-যাওয়াই ভাল।
• সরকারি পরিচয়পত্র - সেটা ভোটার আইডি কার্ড হতে পারে, বা পাসপোর্ট সঙ্গে রাখবেন। কোনও, কোনও জায়গায় সেনাবাহিনী পরিচয়পত্র দেখতে চাইতে পারেন।
• মনে রাখবেন প্রিপেইড মোবাইল কাজ করবে না উপত্যকায়। সুতরাং পোস্ট-পেইডই একমাত্র ভরসা। নয়তো ল্যান্ডলাইন। কলকাতায় স্বজনদের ফোন নম্বর সঙ্গে রাখবেন। কাশ্মীরে সব জায়াগায় ইন্টারনেট কানেকশন না-ও পেতে পারেন।



আন্দামান-নিকোবর
আন্দামান-নিকোবর যাওয়ার ট্রেন্ড কিন্তু বেড়ে গিয়েছে এই বছরে, একমত রাজাবাবু, পুষ্পেন্দুবাবু এবং শেখরবাবু। খরচ জনপ্রতি ২৫ হাজারের এদিক ওদিক, হ্যাভলক দ্বীপে গেলে খরচ বাড়ে মাথাপিছু হাজার তিনেক। প্লেনে গিয়ে জাহাজে ফেরার কথা ভাবতে পারেন। তাতে খরচ একটু কমবে, কিন্তু সময় বেশি লাগবে অনেক।

কী দেখবেন: পোর্ট ব্লেয়ার ছাড়াও ব্যারেন আইল্যান্ড, লিটল আন্দামান, রাটল্যান্ড দ্বীপ, নিল দ্বীপ দেখার মতো জায়গা। সেলুলার জেল, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের বাঙ্কার তো আছেই। মহাত্মা গাঁধী মেরিন ন্যাশনাল পার্ক আবার খুলেছে। এটা দেখার মতো একটা জায়গা। হ্যাভলক দ্বীপ ও নিল দ্বীপে স্কুবা ডাইভিং করার জন্য যেমন মুখিয়ে আছেন ব্যারাকপুরের মনোসিজ আর তাঁর স্ত্রী সুনেত্রা। স্নরকেলিং বা সারফিংও করা যেতে পারে জায়গা ও দ্বীপের ওপর নির্ভর করে।

চেকলিস্ট: আন্দামান-নিকোবর হল মশার আড়ত। বিশেষ করে এই সময়ে। মশা ঠেকানোর সরঞ্জাম তাই আবশ্যিক। সেটা ধূপ বা ক্রিম হওয়াই বাঞ্ছনীয়। উপজাতি, বিশেষত জারোয়া অধ্যুষিত এলাকায় যাওয়ার চেষ্টা করবেন না। ওষুধপত্র প্রয়োজন মতো সঙ্গে রাখবেন। এখানেও পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখা জরুরি।

কম্বোডিয়া
পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন মন্দির এই দেশেই আছে। খরচ ৪ রাত ৫ দিনের জন্য ২৫ হাজার টাকা মাথাপিছু অন্তত। শেখরবাবু জানাচ্ছেন, কম্বোডিয়া ভিয়েতনাম একসঙ্গেও ঘুরে আসতে পারা যায়। পুষ্পেন্দুবাবু বললেন, কম্বোডিয়া আর মালয়েশিয়াও এক ঢিলে মেরে আসা যায়। কম্বোডিয়া-ভিয়েতনাম খরচ পড়বে ৪০-৫০ হাজার মতো। আর কম্বোডিয়া-মালয়েশিয়া ৩৫ হাজার মতো। কলকাতা থেকে সোজা প্লেনে যাওয়ার থেকে তাইল্যান্ড হয়ে আরামপ্রদ বাসে গেলে খরচ কম লাগে।

কী দেখবেন: কম্বোডিয়ায় কোথায় কোথায় যেতে পারেন, এটা এখন স্কুল-পড়ুয়ারাও জানে। গড়িয়াহাটের জামাকাপড়ের ব্যবসায়ী তপনবাবুর ১৪ বছরের ছেলে যেমন বাবাকে বলে রেখেছে, আঙ্কর ভাট, ফোনম পেন, সিয়েম রিপ, বাট্টামবাঙ যেতেই হবে। দেশটা ইতিহাস ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আশ্চর্য মিশেল। আঙ্কর ভাটের অপরূপ স্থাপত্য, জঙ্গল মন্দির, সিহানৌকভিল সমুদ্রতট, মন্ডুলকিরি শৈলশহর, টুক চৌ নদীর ধারের কামপোট, মেকং নদীর ক্রাতি, বানতে ছমার মন্দিরসব মিলিয়ে দেখার জিনিসের অভাব নেই।
কেনাকাটার জিনিসও মজুত থরে থরে। খমের সিল্ক, হস্তশিল্প, চিত্রকলা, মূর্তি, দামি পাথর-গয়না, আঙ্করীয় বা বৌদ্ধ স্মারক— কী নেই।

চেকলিস্ট
• ভিসার জন্য ভারতীয় মুদ্রায় ১৩০০ টাকা লাগবে মাথাপিছু। রিয়েল এবং মার্কিন ডলার, দুই মুদ্রাই এ দেশে চলে। ড্রাগ অবৈধ, সেটা যদি ওষুধের মধ্যে থাকে, তা হলেও। সুতরাং নিয়মিত ওষুধ খেলে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন সঙ্গে রাখতেই হবে।
• বিদেশে ব্যবহৃত প্লাগপয়েন্ট আমাদের থেকে আলাদা। ফলে আন্তর্জাতিক অ্যাডাপটার সঙ্গে রাখা উচিত, নিজের মোবাইল, ক্যামেরা, ল্যাপটপ চার্জ দিতে লাগবে। ক্রেডিট কার্ড, ট্র্যাভেল ইনস্যুরেন্স, টিকা যথারীতি থাকছেই।
• এখানেও মশার উৎপাত ভয়ঙ্কর। সুতরাং মশা তাড়ানোর ধূপ বা ক্রিম সঙ্গে রাখা জরুরি।
• হাল্কা জামাকাপড়, ফ্লোটার জাতীয় জুতো, সানগ্লাস সঙ্গে রাখুন।

সিঙ্গাপুর
চেন্নাই থেকে যদি প্লেন ধরেন, খরচ জন প্রতি ২৫ হাজার দিন চারেকের জন্য। কলকাতা থেকে গেলে ৩৫-৪০ হাজার কারণ সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স ছাড়া আর কোনও উড়ান নেই এখান থেকে। চোখধাঁধানো শহর, ঝকঝকে হাইরাইজ, টুইন টাওয়ার, মল, চকচকে রাস্তা-ঘাট। মালয়েশিয়া-কুয়ালালামপুর-তাইল্যান্ড আর সিঙ্গাপুর একত্রে সেরে আসা যেতে পারে হাতে দিন দশেক থাকলেই, বলছেন শেখরবাবু। খরচ পড়বে ৪৫ হাজারের মতো। আমার-আপনার মতো মধ্যবিত্ত বাঙালিরা তো আকছার যাচ্ছেন এই সব ট্রিপে। পুজোয় খুব ডিমান্ড। সুতরাং মন ঠিক করে যত তাড়াতাড়ি বুকিং করা যায়, তত ভাল।

কী দেখবেন: শহুরে আবহেই পাওয়া যায় জুরং বার্ড পার্ক। পেঙ্গুইন, পেলিক্যান, ফ্লেমিংগো, কী নেই সেখানে! সাঙ্গেই বুলো সংরক্ষিত জলাভূমি, সিঙ্গাপুর চিড়িয়াখানা, বুকিট টিমাল জাতীয় উদ্যান, তুষার শহর, সেনটোসা— দেখার জিনিসের অভাব নেই সুন্দরী সিঙ্গাপুরে। মিনতিদেবী বারাসতে মোবাইলের দোকান চালান। বর মারা গেছেন। ছেলে ক্লাস ইলেভেনে। মাধ্যমিকে রেজাল্ট ভাল হলে বিদেশে নিয়ে যাবেন, কথা দিয়েছিলেন ছেলেকে। সেই কথা রাখতে দু’জনে যাচ্ছেন সিঙ্গাপুর। ছেলে অভীক তাই আহ্লাদে আটখানা। বন্ধুদের কাছে তার এখন তো কলার তোলার সময়ই বটে।

চেকলিস্ট
বিমানবন্দর থেকেই ভিসা পাওয়া যায়। খরচ জনপ্রতি ১৭৫০ টাকা (ভারতীয় মুদ্রায়)।
• খুব কঠোর ড্রাগ বিরোধী আইন, ফলে ওষুধপত্র নিলে তার বৈধ প্রেসক্রিপশন সঙ্গে রাখুন।
• যদি ল্যাপটপ, আই-প্যাড, আই-পড নিয়ে যান, বিমানবন্দরে শুল্ক বিভাগের কাছ থেকে লিখিয়ে স্ট্যাম্প করিয়ে নিন। চার্জারের জন্য অ্যাডাপটরও দরকার, কারণ ওখানে প্লাগপয়েন্ট অন্য রকম। বিয়ার, ওয়াইন জাতীয় মদ ১ লিটার পর্যন্ত সঙ্গে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। তবে সিগারেট সম্পর্কে সাবধান।
• প্যাকেটের গায়ে সাবধানবাণী আবশ্যিক। ওখানকার স্থানীয় সিগারেট খেলে সমস্যা কম। চুইং গাম আমদানি অবৈধ।

ভূটান
পর্যটকের ভিড় বাড়ছে এ দেশে। কলকাতা থেকে বিমানে যাওয়া যায় থিম্পু। কিন্তু সে ক্ষেত্রে জন প্রতি ২০-২৫ হাজার টাকা কম করে পড়ে যাবেই। প্লেনে গেলে লাভ একটাই, বিমান থেকে মাউন্ট এভারেস্ট দেখা যায়, আবহাওয়া ভাল থাকলে। পাইলট নিজেই ঘোষণা করে দেন এভারেস্টের ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময়।
জয়গাঁও হয়ে বাসেও করে ভূটান ঢোকা যায়, ফুন্টশেলিং দিয়ে। কলকাতা-ফুন্টশেলিংও বাস আছে। তাতে খরচ অনেকটাই কম পড়বে।

কী দেখবেন: ভূটানের প্রকৃতির আহ্বান অপরিসীম। অপর্ণা সেনের ‘১৫ পার্ক অ্যাভিনিউ’তে তার কিছু ঝলক দেখা গেছে। এত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন দেশ যে ভারতের এত কাছে থাকতে পারে, ভাবাই যায় না। ইকো-ফ্রেন্ডলি, নিরালা, নির্জনে থাকতে পছন্দ করেন যে সব পর্যটক, তাঁদের কাছে ভূটান পরম প্রাপ্তির স্বর্গ। বৌদ্ধ-মঠ, জঙ্গল, উপত্যকা, পাহাড় সব মিলিয়ে এক মনোরম অভিজ্ঞতা উপভোগ করতেই ষষ্ঠীর দিন বেরিয়ে পড়ছে বরানগরের সরকারি চাকুরে বিজনবাবুর পরিবার।

চেকলিস্ট
ভূটানে ঢুকতে ল্যাটারাল লাইন পারমিট বাধ্যতামূলক ভারতীয় পর্যটকদের জন্য, যার জন্য একটি ছবি ও সচিত্র পরিচয়পত্র রাখতেই হয় সঙ্গে। এর জন্য কী, কী করণীয়, সেটা আপনার ট্র্যাভেল এজেন্টই বলে দেবেন।
• খুব রক্ষণশীল বৌদ্ধ দেশ। ফলে, কোনও ভাবেই স্থানীয়দের ধর্ম এবং আবেগে আঘাত করা চলে না।


আরও আকর্ষণ
যদি বেড়াতে যাওয়ার অন্যতম আকর্ষণ হয় কেনাকাটা করা, তা হলে তাইল্যান্ডের অবশ্য জবাব নেই। জামাকাপড়, ইলেকট্রনিক গ্যাজেট, বিশেষ করে এলসিডি বা এলইডি টিভি এখানকার থেকে প্রায় অর্ধেক দামে পাওয়া যায় সে দেশে। সঙ্গে উদ্দাম নাইটলাইফ আর সমুদ্রসৈকতের নিষিদ্ধ কোণের হাতছানি তো আছেই। ভিসা বিমানবন্দরেই পাওয়া যায়। চার দিনের জন্য জনপ্রতি খরচ ২০ হাজার টাকার মতো। তবে অনেক আগে এয়ার এশিয়ার মতো কমদামি বিমানে টিকিট কাটলে যাওয়া-আসা মিলিয়ে ১৫ হাজারেও হয়ে যায়।
মাথায় রাখুন
বিদেশে মার্কিন ডলার নিয়ে যাওয়াই ভাল। এখান থেকে টাকা ভাঙিয়ে ডলারে পরিবর্তন করে নিন। পৌঁছে আবার স্থানীয় মুদ্রায় পরিবর্তন করান। পুরো ডলার একসঙ্গে ভাঙাবেন না। সব খরচ না হলে ফেরার সময় কিছু ডলার ফেরত আনতে পারবেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.