বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফুঁসলে নিয়ে গিয়ে এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল চারজনের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটে বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থানার গোপালপুরে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত চারজনের মধ্যে দু’জনের নাম জানা গিয়েছে। তাদের একজন বাবলু মণ্ডল ও অন্যজন আজিজুল মণ্ডল। বাদুড়িয়া থানার ব্রুজ গ্রামে বাবলুর একটি গ্যারাজ রয়েছে। তার দোকানের পাশে একটি দোরজির দোকানে কাজ করে আজিজুল। বাবলুর বাড়ি বাদুড়িয়ার ঘোড়াগাছা গ্রামে ও আজিজুল স্বরূপনগরের গোপালপুরের বাসিন্দা। বুধবার ঘটনাটি জানাজানি হলে ব্রুজ গ্রামে উত্তেজনা ছড়ায়। বসিরহাটের এসডিপিও আনন্দ সরকার বলেন, “ওই নাবালিকার বাড়ি অশোকনগরের আমডাঙা থানার কামারপুকুর গ্রামে। তার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে। মেয়েটির বাবা পেশায় ভ্যানচালক। তাঁকে খবর দেওয়া হয়েছে।” নাবালিকার ডাক্তারি পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার ভোরে ব্রুজ গ্রামে বছর চোদ্দোর এক নাবালিকাকে রাস্তায় কাঁদতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তার গায়ের জামাকাপড় ছেঁড়া ছিল। কারণ জিজ্ঞাসা করায় ওঅ নাবালিকা জানায়, তাকে বিয়ের কথা বলে নিয়ে এসে রাতভর গণধর্ষণ করা হয়েছে। খেতেও দেওয়া হয়নি। ভোর হলে তাকে এখানে ফেলে রেখে যায় ধর্ষণকারীরা। গ্রামের এক মহ্লা সাকিলা গাজি বলেন, “ওকে ছেঁড়া পোশাকে ঘুরতে দেখে সন্দেহ হওয়ায় জিজ্ঞাসা করি। তাতে ও জানায় পেটে যন্ত্রণা করছে। রাতভর তার উপরে অত্যাচার চালিয়েছে কয়েকজন। সব জানার পরে ওকে পোশাক দিই, খাওয়ার ব্যবস্থা করি।”
নাবালিকার মুখে বাবলুর নাম জানার পরে তাকে ধরে গ্রামবাসীরা। অভিযোগ, বাবলুর হয়ে কয়েকজন টাকা দিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার জন্য বলে। এতে গ্রামে উত্তেজনা ছড়ায়। শেষ পর্যন্ত বেলা ১১টা নাগাদ বাদুড়িয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরে স্বরূপনগর থানাতেও অভিযোগ করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই নাবালিকা তাদের বলে যে তারা খুব গরিব। বাবা ভ্যানরিকশা চালান। সম্প্রতি মায়ের সঙ্গে হাবরার এক ব্যক্তির পরিচয় হয়েছিল। তার জন্য বিয়ের পাত্র খুঁজে দিতে মা ওই ব্যক্তিকে বলেছিলেন। মঙ্গলবার দুপুরে সে তার বান্ধবীর সঙ্গে হাবরায় জামা কিনতে এলে ওই ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হয়। সে তার বান্ধবীকে বাড়ি চলে যেতে বলে তাকে নিয়ে ব্রুজ গ্রামে বাবলুর গ্যারাজে নিয়ে আসে। তারপর বিয়ের পাতর দেখানোর নাম করে তাকে গোপালপুরে আজিজুলের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আজিজুল ছাড়াও আরও দু’জন ছিল। আজিজুল-সহ অন্যরা তাকে ধর্ষণ করে। তারপর তাকে জলের সঙ্গে কিছু খাইয়ে দেয়। এর পর সে আর কিছু জানে না। ঘটনা জানার পরে পুলিশ ওই নাবালিকাকে নিয়ে আজিজুলের বাড়িতে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পাওয়া যায়নি বাবলুকেও। তবে বাড়িতে যে ঘরে তার উপরে অত্যাচার করা হয়েছিল সেই ঘরটি পুলিশকে দেখায় নাবালিকা। অত্যাচার করার সময় আজিজুল কি পোশাক পরেছিল তাও পুলিশকে জানায় সে। ঘর থেকে মেয়েটির ছেঁড়া পোশাকের অংশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বাবলু ও আজিজুলের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। সেইসঙ্গে গ্রামে কারা বাবলুর হয়ে ওই নাবালিকাকে টাকা দিয়ে বিষয়টি মিটমাট করতে চেয়েছিল তারও তদন্ত শুরু হয়েছে। |